
গরমে প্রচন্ড কষ্ট হলেও একটাই মজা। তা হল এই সময় প্রাণ ভরে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তালশাঁস নানা ধরনের ফল খাওয়া যায়। বাজারে ভরে থাকে নানা রসালো ফলে। এদের মধ্যে আরেকটি পছন্দের ফল হল তরমুজ। এমনই একটি ফল যা কেবল স্বাদেই অসাধারণ নয়, শরীর ঠান্ডা করার জন্যও খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়।

তরমুজ শুনলেই আমাদের মনে লাল রঙের মিষ্টি ও রসালো ফলের ছবি ভেসে ওঠে। কিন্তু কি কখনও হলুদ তরমুজ খেয়েছেন? হ্যাঁ, তরমুজের আরও একটি রূপ আছে। হলুদ তরমুজ। ধীরে ধীরে ভারতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই বিশেষ প্রজাতির তরমুজ। বাইরে থেকে সাধরণ তরমুজের মতো সবুজ। ভেতরে এর শাঁস হলুদ রঙের। স্বাদেও বেশ ভাল।

বর্তমানে ভারতের অনেক চাষিও হলুদ তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। ভারতেও বাড়ছে এই তরমুজের চাহিদা। এছাড়াও, এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও আশ্চর্যজনক। কেবল শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে না বরং অনেক পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। এই হলুদ তরমুজ কোথা থেকে ভারতে এসেছে? কী ভাবে করতে হয় চাষ?

হলুদ তরমুজের উৎপত্তি আফ্রিকায় বলেই মনে করা হয়। এটি তরমুজের একটি প্রাকৃতিক জাত, যা লাল তরমুজের মতোই সাধারণ। কয়েক বছর আগে ভারতে আমদানি শুরু হয়। দেশের কিছু অংশে চাষ করা হচ্ছে বর্তমানে। মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্র প্রদেশের মতো রাজ্যে কিছু কৃষক এটি চাষ করেন। কী লাভ হয় এই তরমুজ খেলে?

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ - হলুদ তরমুজে বিটা-ক্যারোটিন নামক একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। এই উপাদানটি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে চোখ দুর্বল হওয়া রোধ করে। এটি ত্বকের কোষ মেরামত করে এবং বলিরেখা কমায়, ত্বককে উজ্জ্বল এবং তারুণ্যদীপ্ত রাখতেও সাহায্য করে।

শরীরে শীতলতা এবং জলীয়তা প্রদান করে - ঘামের কারণে গরমে শরীর থেকে জলের ক্ষয় হয়। হলুদ তরমুজ প্রায় ৯০-৯২% জলে ভরা থাকে, যার কারণে এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং জলশূন্যতা রোধ করে। যারা বাইরে রোদে কাজ করেন অথবা যারা প্রচণ্ড গরমে বিরক্ত তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী।

পাচনতন্ত্র উন্নত করে - হলুদ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজমশক্তি উন্নত করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে এবং পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি হালকা এবং সহজে হজমযোগ্য, যা পেট ভরা রাখে এবং গ্যাস বা বদহজমের সমস্যা হয় না।

ওজন কমাতে সহায়ক - ওজন কমানোর চেষ্টা করলে, হলুদ তরমুজ বেশ উপযোগী। এতে ক্যালোরি খুব কম, কিন্তু এটি দ্রুত পেট ভরে দেয়। এর নিয়মিত সেবনে ক্ষুধা কমে এবং ঘন ঘন খাওয়ার অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর পাশাপাশি, এটি শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিও সরবরাহ করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় - হলুদ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এটি সর্দি-কাশির মতো সাধারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।