
অন্ধ্রপ্রদেশের এক খ্রিষ্টান তেলেগু পরিবারের জন্ম হয় জনির। প্রকাশম জেলায় তাঁর আদি বাড়ি। মুম্বইয়ের ধারাবি বস্তিতে শৈশব কাটিয়েছেন। হিন্দুস্থান ইউনিলিভারের অপারেটারের পোস্টে কাজ করতেন জনির বাবা। খুব অল্প রোজগার ছিল তাঁর। দুই ভাই ও তিন বোনের সংসার ছিল জনিদের। সংসারে অভাবের কারণে ক্লাস ৭-এর পর স্কুল ছেড়ে দিয়েছিলেন। রাস্তায় পেন বিক্রি করেছেন, অন্য অভিনেতাদের নকল করে পয়সা উপার্জন করেছেন তিনি।

জনির ভাল নাম জনি লিভার নয়। আসল নাম জন প্রকাশ রাও জানুমালা। লিভার পদবী ব্যবহারের নেপথ্যে খুব সুন্দর কাহিনি রয়েছে তাঁর। বাবার কোম্পানি হিন্দুস্থান ইউনিলিভারেই চাকরি পেয়েছিলেন জনি। নিয়মিত স্টেজ শো করতেন সেখানে। সকলকে হাসাতেন খুব। কোম্পানির ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা তাঁর পারফরম্যান্স দেখে খুব আনন্দ পেতেন। জন থেকে নাম পাটলে হয় জনি। হিন্দুস্থান ইউনিলিভারে পারফর্ম করতেন বলে সহকর্মীরাই তাঁর নতুন নামকরণ করেন জনি লিভার। সেই নাম আজও জীবন থেকে মুছে দেননি জনি। কেনই বা দেবেন। ওই নামই তো তাঁকে যশ-প্রতিপত্তি সব এনে দিয়েছে।

স্ট্যান্ড আপ কমিডিয়ান হওয়ার জন্য ১৯৮১ সালে চাকরি ছেড়ে দেন জনি। ৬ বছর মেহনত করতে হয়। অনেক স্ট্রাগেল লুকিয়ে আছে এই নামের পিছনে। একসময় কল্যানজি-আনন্দজি গ্রুপ থেকে ডাক পান। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে পারফর্ম করতে শুরু করেন।

মানুষকে হাসানোর পাশাপাশি ক্রসওয়ার্ড পাজল খেলতে ভালবাসেন জনি। এখনও দিন শুরু করেন ক্রসওয়ার্ড খেলা দিয়েই। অনেকের বক্তব্য, সেই কারণেই হয়তো তাঁর ভাষার প্রতি এত দক্ষতা।

জনি লিভারের পর বহু স্ট্যান্ড আপ কমিডিয়ান তৈরি হয়েছেন এদেশে। কিন্তু পথপ্রদর্শক হিসেবে তিনিই সেরার শিরোপা পান আজও। চারিত্রিক দিক থেকে দেখতে গেলে জনি অত্যন্ত বিনয়ী স্বভাবের মানুষ। সময়ের মূল্য দিতে জানেন। এখনও কলটাইমের ১ ঘণ্টা আগে চলে আসেন সেটে।

'তুম পর হাম কুরবান' হিন্দি ছবিতে প্রথন অভিনয়ের সুযোগ পান জনি। তখনই তাঁর প্রতিভাকে প্রথম চিনতে পারেন সুনীল দত্ত। ১৯৮২ সালে 'দার্দ কা রিস্তা'তে জনিকে একটি চরিত্র অফার করেন তিনি। সেই শুরু। তারপর ৩৫০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন জনি।

জনি অত্যন্ত জিমফ্রিক। স্বাস্থ্যের দিক থেকে অত্যন্ত সচেতন। নিয়ম করে যোগা করেন। আজও প্রত্যেক স্টেজ শোয়ের আগে ভাত খাওয়া ছেড়ে দেন অভিনেতা।