
'সানডে হো ইয়া মনডে, রোজ খাও আনডে'- এই কথা বহুল প্রচলিত। চিকিৎসকরাও প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। ডিম প্রোটিনেরভাল উৎস। তবে ডিম সকলে খেতে পারেন না। কারও অ্যালার্জি থাকে, কারও আঁশটে গন্ধ লাগে আবার কেউ কেউ হন নিরামিষাশী।

যারা ডিম খান না বা খেতে পারেন না তাঁদের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে সয়াবিন। বিশেষ যারা নিরামিষ খান তাঁদের জন্য প্রোটিনের ভাল উৎস এই সয়াবিন। কিন্তু বাস্তবে কি সত্যিই সয়াবিন ডিমের প্রতিস্থাপক হয়ে উঠতে পারে?

হিসাব বলছে একটি বড় ডিম প্রায় ৫০ গ্রাম যার ওজন তাতে উচ্চ মানের প্রোটিনের পরিমাণ প্রায় ৬–৭ গ্রাম। অর্থাৎ দুটি ডিমে থাকে প্রায় ১২–১৪ গ্রাম প্রোটিন।

১০০ গ্রাম শুকনো সোয়া চাঙ্কস (রান্নার আগে) বা সয়াবিনে থাকে প্রায় ৫২ গ্রাম প্রোটিন। যা উদ্ভিজ্জ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্যের মধ্যে অন্যতম।

প্রোটিনের গুণমানের কথা বললে ডিমে থাকে ৯টি অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড। যা এটিকে একটি সম্পূর্ণ প্রোটিনের উৎস করে তোলে। ডিমের প্রোটিন খুবই উচ্চ জৈব সম্পন্ন। অর্থাৎ শরীর সহজে শোষণ ও ব্যবহার করতে পারে। সোয়া প্রোটিনও সম্পূর্ণ প্রোটিন হিসেবে গণ্য হয়, যা উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ক্ষেত্রে বিরল। তবে এর জৈব-প্রাপ্যতা ডিমের তুলনায় সামান্য কম।

লিউসিন (leucine) নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো অ্যাসিড থাকার কারণে ডিম পেশি গঠন ও তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সোয়া চাঙ্কসেও প্রচুর লিউসিন ও গ্লুটামিন (glutamine) থাকে, যা পেশি মেরামত ও বৃদ্ধিতে সহায়ক, ফলে উদ্ভিজ্জভোজীদের জন্য এটি ভাল বিকল্প হতে পারে।

যদিও আধুনিক প্রোটিন মান সূচক DIAAS (Digestible Indispensable Amino Acid Score) অনুযায়ী ডিমের প্রোটিন গুণ বেশি। অন্যদিকে, সোয়াবিনে থাকা ফাইটেটস ও ট্রিপসিন ইনহিবিটরসের মতো অ্যান্টি-নিউট্রিশনাল উপাদান থাকে, যা প্রোটিন শোষণকে কিছুটা হলেও ব্যাহত করতে পারে।

দুটি বড় ডিমে প্রায় ১৪০ ক্যালোরি ও ১২ গ্রাম প্রোটিন থাকে। অপরদিকে, ১০০ গ্রাম শুকনো সোয়া চাঙ্কসে প্রায় ৩৩৬ ক্যালোরি ও ৫২ গ্রাম প্রোটিন থাকে—অর্থাৎ এটি প্রোটিন ও ক্যালোরি দুইদিক থেকেই বেশি। এবার আপনার কোনটি বেশি প্রয়োজন সেটা অনুসারে ঠিক করুন ডিম খাবেন নাকি সয়াবিন।