মার্চেই যেন জৈষ্ঠ্য মাসের মতো গরম পড়ে গিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে হিট ওয়েভ। প্রায় ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই তাপমাত্রা। বাড়িতে প্রায় ফুল স্পিডে চলছে ফ্যান। বিশেষ করে রাস্তা থেকে ঘুরে এসে তো ফ্যান জোড়ে না করে বসাই যাচ্ছে না। ঠান্ডা হাওয়ার পরশ পেলে ক্লান্ত হয় শরীর মন। সরাসরি ফ্যানের ঠান্ডা বাতাসে জুড়িয়ে যায় শরীর মন। কিন্তু এই অভ্যাস কোনও বড় বিপদ ডেকে আনছে না তো?
বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন এই অভ্যাসে শরীরে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। জানেন, সরাসরি ফ্যানের হাওয়া খেলে শরীরে কী কী প্রভাব পড়তে পারে? তা থেকে বাঁচবেন কী করে?
ফ্যানের ঠিক নিচে দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকলে, সে ক্ষেত্রে আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। চোখের স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারিয়ে যাওয়ার ফলে চোখে খচখচে একটা অনুভূতি হতে পারে। নাক-মুখের ভিতরের স্বাভাবিক আর্দ্রতাও নষ্ট হতে পারে।
গলা খুসখুস করতে পারে। হাঁচি বা সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘন কফও নিঃসৃত হতে পারে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ফ্যানের গায়ে আটকে যাওয়া ময়লা। রাজ্যের ধুলাময়লা আটকে থাকা ফ্যান চালানো হলে বাতাসের মাধ্যমে সেসব ছড়িয়ে পড়তে পারে ঘরে। এসবের কারণেও হাঁচি বা সর্দি-কাশি হতে পারে। নাক সুড়সুড় কিংবা গলা খুসখুসের মতো অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে।
ময়লা ফ্যান পরিষ্কার করার সময়ও ধুলাবালি ঢুকে যেতে পারে শ্বাসযন্ত্রে। এমনকি তা ছড়িয়ে পড়তে পারে ঘরের অন্যান্য স্থান আর আসবাবেও। এমন ক্ষেত্রেও হতে পারে ধুলোর কারণে অ্যালার্জি হতে পারে। কিন্তু এই গরমে ফ্যান চালাতে না পারলে নিজেকে সুস্থ রাখবেন কী ভাবে?
সরাসরি ফ্যানের তলায় দীর্ঘ ক্ষণ থাকাটা ঠিক নয়। সেক্ষেত্রে কয়েকটা সাবধানতা অবলম্বন করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। বিছানা, সোফা, চেয়ার প্রভৃতির অবস্থান হওয়া উচিত ফ্যান থেকে খানিকটা দূরে। গরমে অনেকে মেঝেতে শুয়ে পড়েন, ঠিক ফ্যান বরাবর। এ ক্ষেত্রেও ফ্যানের সঙ্গে দূরত্বের বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত।
কেউ কেউ আবার খুব গরমে মাথার কাছে একটা টেবিল ফ্যান বা স্ট্যান্ড ফ্যানের ব্যবস্থা করেন। এটাও দূরে রাখা ভালো। অবশ্যই মাথার দিকে রাখা উচিত নয়। বাড়ির ভিতরের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে শুষ্কতার সমস্যার ঝুঁকি কমে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
ফ্যান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাটাও জরুরি। তবে ফ্যান পরিষ্কারের সময় মাস্ক পরে নেওয়া উচিত। ঘরের সব আসবাব কাপড়ে ঢেকেও দিতে হবে ফ্যান পরিষ্কার করার আগে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা শেষে ফ্যান চালানোর আগে এগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে, ঘরের মেঝেও পরিষ্কার করে নিতে হবে। তাহলে কমবে ঝুঁকি। সম্ভব হলে একদম উচ্চ গতিতে ফ্যান না চালিয়ে একটু কমিয়ে চালাতে পারেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।