ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা যে বিশেষ রন্ধন পটিয়সী তাই নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। নিত্য নতুন খাবার বানিয়ে তাঁরা চমকে দিতে জানতেন। আর তাই বিয়ের পাকা কথা করবার সময় দেখে দেখে বরিশাল থেকেই খোঁজ চলত পাকা রাঁধুনির
হেমেন্দ্র নাথ ঠাকুরের মেয়ে শ্রীমতি প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী নিত্য় নতুন খাবার বানিয়ে সেই পদের নামে জুড়ে দিতেন মানুষের নাম। তাঁর বাবার নামানুসারে তিনি এক পায়েসের নামকরণ করেছিলেন ‘হেমকনা’
প্রজ্ঞাসুন্দরীর হাতে তৈরি রামমোহন দোলমা পোলাও, দ্বারকনাথ ফিরনি পোলাওয়ের স্বাদ ছিল অনবদ্য। আবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পঞ্চাশতম জন্মদিনে তাঁর হেঁশেলে জায়গা পেয়েছিল কবি সম্বর্ধনা বরফি
ঠাকুরবাড়ির হেঁশেলে খুব সাধারণ ঘরোয়া রান্না একেবারে নতুন আঙ্গিকে পরিবেশন করতেন সেখানকার মেয়েরা। আর তার সঙ্গে অবশ্যই মিশে থাকত সাহিত্য সংস্কৃতি।
উপাদানের সামান্য তারতম্য আর হাতযশের গুণে জোড়াসাঁকোর হেঁশেল হয়ে উঠেছিল নিত্য নতুন রান্নার আঁতুড় ঘর
তেমনই একটি হল হেমকণা পায়েস। ভাবছেন তো কী ভাবে বানাবেন? রইল রেসিপি দুধ, খোয়া ক্ষীর, আমন্ড, গোটা কাজু, পেস্তা, পাউডার দুধ, গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়ো, চিনি, কেশর, এলাচ গুঁড়ো, তেজপাতা, কিশমিশ ও ঘি- এই হল উপকরণের তালিকা
মাঝারি আঁচে দুধ গরম করে তাতে চিনি, এলাচ গুঁড়ো আর তেজপাতা মিশিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। দুধ ঘন হয়ে এলে গুঁড়ো দুধ গুলে আরও কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন। এক কাপ গ্রেট করা ক্ষোয়া ক্ষীরে হাফ কাপ গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন এবার সেই মিশ্রণে এক এক করে কাজু , পেস্তা, আমন্ড গুঁড়ো, ঘি ও সামান্য এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিয়ে ছোট ছোট মণ্ড বানিয়ে ফেলুন।
এবার মণ্ডগুলোতে চাল গুঁড়ো দিয়ে কোটিং করুন তাহলে দুধে ফুটেও তা ফেটে যাবে না, মাঝারি আঁচে দুধ ফুটতে দিন। তারপর খুব সাবধানে বলগুলো আস্তে আস্তে দুধে দিয়ে দিন।বেশ খানিক্ষণ ফুটিয়ে ওর উপর পেস্তা কুচি ছড়িয়ে দিন। নামানোর আগে একটু জাফরান ছড়িয়ে দিতেও ভুলবেন না। ঠান্ডা করে তবেই পরিবেশন করবেন