
সামনেই দুর্গাপুজো, মানে লম্বা ছুটি। পুজোর ছুটিতে অনেকেই ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করেন। অনেকে আবার পুজোর প্রথম দিনে বেড়িয়ে পড়েন ঘুরতে। সত্যি বলতে, শরতের এই সময় পাহাড় বা সমুদ্র দুই জায়গাতে ঘুরতে যাওয়ার জন্য আদর্শ। আবার বর্ষায় বন্ধ থাকার পরে শরতে একে একে খোলে বিভিন্ন জঙ্গল সাফারিগুলিও। সুতরাং সব দিক থেকেই এই সময় ঘুরতে যাওয়ার জন্য আদর্শ সময়। পুজোয় ঘুরতে যান তাঁরা প্ল্যান সেরে ফেলেন অনেকদিন আগেই।

কেটে ফেলেন টিকিট, হয়ে যায় বুকিং। এদিকে একবার ভাবুন তো ঘুরতে গিয়ে যদি হঠাৎ করে শুরু হয়ে যায় পিরিয়ডস, তাহলে কী বিরক্তিকর বিষয়। একে তো অসহ্য যন্ত্রণা, তারপর নিশ্চিন্তে ঘোরাঘুরিতে অসুবিধা, বারবার বাথরুম যাওয়ার প্রয়োজন তার উপর মুড সুইং। মানে বেড়াতে যাওয়ার আনন্দটাই মাটি।

যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন একদম অন্য কথা, তাঁদের মতে কিছু প্রস্তুতি আগে নেওয়া থাকলে পিরিয়ডস কোনও ভাবেই আপনার বেড়ানোর আনন্দকে মাটি করতে পারবে না। কী কী টিপস মেনে চলবেন?

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যাত্রার আগে যথেষ্ট পরিমাণ স্যানিটারি সামগ্রী যেমন—প্যাড, ট্যাম্পন বা মেনস্ট্রুয়াল কাপ সঙ্গে রেখে দিন। যাঁরা সাঁতার কাটার পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের জন্য ট্যাম্পন বা মেনস্ট্রুয়াল কাপ বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়। এছাড়া শরীর আর্দ্র রাখা খুবই জরুরি। তাই পর্যাপ্ত জল খেলে শুধু ফোলাভাব কমে না, বরং পেট ব্যথাও কিছুটা হালকা হয়। বিশেষ করে গরম জল পেটের পেশি শিথিল করে, এতে আরাম বোধ হয়।

হালকা শারীরিক কার্যকলাপ নিয়মিত করা ভাল। যেমন ধরুন যোগব্যায়াম, স্ট্রেচিং বা ধীরে হাঁটাহাঁটি করলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। অস্বস্তি অনেকটাই কমায়। চিকিৎসকদের পরামর্শ, জরুরি প্রয়োজনে ব্যথানাশক ওষুধ, গরম জলের ব্যাগের শেক বা হিটিং প্যাড সঙ্গে রাখলে পেট বা পিঠের ব্যথা সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

প্রাকৃতিক কিছু উপায়ে ভরসা রাখতে পারেন। আদা বা ক্যামোমাইল চা মাসিকের ব্যথা কমাতে পরিচিত। পুষ্টিবিদরা ভ্রমণের সময় টাটকা ফলমূল এবং শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন, তবে অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলতে বলেন, কারণ এগুলো অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে পারে।

পোশাকের ক্ষেত্রেও স্বস্তির দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। ঢিলেঢালা তুলো বা রেয়ন কাপড় ভ্রমণের সময় সবচেয়ে উপযোগী, যা মহিলাদের পিরিয়ডসের সময় আরামদায়ক অনুভূতি দেয়।

মনে রাখবেন, মাসিকের ব্যথা জীবনের স্বাভাবিক ও অবশ্যম্ভাবী অংশ হলেও, তা ভ্রমণ পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে হবে এমন নয়। প্রয়োজন শুধু সঠিক প্রস্তুতি আর সহজ, প্রাকৃতিক উপায়গুলো মেনে চলা। তাহলেই নিশ্চিন্তে উপভোগ করতে পারবেন 'পুজো ভ্যাকেশন'-এর আনন্দ।