'মেয়েদের মতো কাঁদিস না'- ছোটোবেলা থেকেই ছেলেরা কাঁদলে এই একটা কথা শুনতে হয়। অনেকেই মনে করেন মহিলারা পুরুষদের চেয়ে বেশি কাঁদেন। আমাদের সমাজেও সেই রকম ধারণা প্রচলিত।
কান্নাকাটি দুর্বলদের প্রতীক। এমনকি মনে করা হয় দৈহিক শক্তির দিক থেকে পুরুষের চেয়ে দুর্বল মহিলারা। কান্নাকাটি নাকি তাঁদের মানায়। যদি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হচ্ছে সেই প্রচলিৎ ধারণাও।
প্রশ্ন হল কেন পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের চোখে বেশি দ্রুত জল আসে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ২০১১ সালে এক বিশেষ গবেষণা করা হয়। সেই গবেষণার শেষে প্রকাশিত তথ্য আপনাকে চমকে দেবে।
ওই প্রতিবেদন অনুসারে, একজন মহিলা বছরে ৩০ থেকে ৬৪ বার বা তার বেশিও কেঁদে থাকেন। এমনকি জনসমক্ষেও বারবার কাঁদতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। সেই জায়গায় পুরুষরা বছরে পাঁচ থেকে সাত বারের বেশি চোখের জল ফেলেন না, তাও তা লোক চক্ষুর আড়ালে। পুরুষরা কারও সামনে কাঁদতে পছন্দ করেন না।
গবেষণার দাবী, পুরুষ এবং মহিলার শরীরে উপস্থিত নানা ধরনের হরমোন কান্নার জন্য দায়ী। পুরুষের শরীরে এমন একটি হরমোন থাকে যা তাঁদের মহিলাদের তুলনায় আরও বেশি শক্তিশালী করে তোলে। সেই হরমোনের নাম টেস্টোস্টেরন। এই হরমোন পুরুষদের কান্না এবং আবেগপ্রবণ হতে বাধা দেয়।
আবার গবেষণার তথ্য অনুসারে হল্যান্ডের একজন অধ্যাপক পুরুষদের মধ্যে কম অশ্রুপাতের প্রবণতার জন্য প্রোল্যাকটিন হরমোনকেও দায়ী করেছেন। আসলে, প্রোল্যাকটিন হরমোন একজন ব্যক্তিকে আবেগপ্রবণ করে তোলে এবং তাদের নিজেদের প্রকাশ করতে উৎসাহিত করে।
গবেষণা বলছে, পুরুষদের মধ্যে প্রোল্যাকটিন হরমোনের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে। উলটোদিকে মহিলাদের মধ্যে এর উপস্থিতির মাত্রা অনেকটাই বেশি। এই কারণেই মহিলারা বেশি কাঁদেন।
প্রোল্যাকটিন হরমোনের মাত্রা বেশি হওয়ার কারণে মহিলাদের মধ্যে আবেগ বেশি হয়। সেই কারণে মহিলারা পুরুষদের থেকে বেশি আবেগপ্রবণ হয়।