TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য মুখোপাধ্য়ায়
Jul 22, 2021 | 10:28 AM
৬ নম্বর অক্রূর দত্ত লেন। মধ্য কলকাতার এই বাড়িতেই এক সময়ে থাকতেন প্রবাদপ্রতিম পঙ্কজ মল্লিক। তারপর দীর্ঘদিন থাকতেন প্রবাদপ্রতিম কম্পোজার ভিয়েস্তাস আর্দেশির বালসারা। ভি বালসারা জন্ম-শতবর্ষ শুরু হয়েছে এ বছরের ২২ জুন। অথচ বালসারার শতবর্ষে এখনও তালাবন্দি অবস্থায় গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে আছে এই বাড়িটা।
এই বাড়িতে নিয়মিত আসতেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সলিল চৌধুরী, লতা মঙ্গেশকর, মুকেশ, মহম্মদ রফি থেকে শুরু করে বাংলা ও দেশের দিকপাল সঙ্গীত ব্যক্তিত্বরা।
আজও একটা সময় আর একরাশ স্মৃতির ধুলোকণা গায়ে মেখে দাঁড়িয়ে আছে এই লেটার-বক্স আর বোর্ডটা। শোনা যায় ইডেন উদ্যানে অনুষ্ঠানের জন্য এই ঘরেই রিহার্সাল করেছেন লতা মঙ্গেশকর। মুকেশ একবার টানা তিন দিন ছিলেন এই ঘরে। মহম্মদ রফি দমদমে নেমেই সোজা চলে আসতেন এই বাড়িতে।
ভি বালসারার ব্যবহার করা এই প্র্যাট রিড অ্যান্ড কোম্পানির হাতির মাথাওয়ালা পিয়ানোটা একসময়ে ছিল ১৬ নম্বর অক্রূর দত্ত লেনের ঘরে। এই পিয়ানোর ওপরে ছিল মা সারদা, উত্তমকুমার, বালসারার সন্তান আর সলিল চৌধুরীর ছবি। সলিল সম্পর্কে অগাধ সম্মান ছিল বালসারার। সলিলের বাঁধানো ছবি রোজ একটা রুমাল দিয়ে মুছে সেই রুমালটা নিজের কপালে বুলিয়ে বলতেন, "তোমার সব গুণ আমায় দাও।" মৃত্যুর আগে তিনি এই পিয়ানো এইচ পাল অ্য়ান্ড কোম্পানিকে ফেরত দিয়ে দেন।
যদিও তাঁর প্যাডেল হারমোনিয়ামে হাতেখড়ি, তারপর বহু যন্ত্র ব্যবহার করেছেন ভি বালসারা। মেলোডি-র তৈরি এই হারমোনিয়াম ব্যবহার করতেন ভি বালসারা। জীবনের শেষ দিকে এই হারমোনিয়াম তিনি উপহার দিয়ে যান তাঁর প্রিয় শিষ্য অজিত ঘোষকে। অজিতবাবুর সুরে প্রথম বাংলা গান গেয়েছিলেন উষা উত্থুপ। উষা উত্থুপের গাওয়া, অজিত ঘোষের কম্পোজিশন "আহা তুমি সুন্দরী কত কলকাতা " এক সময়ে মুখে-মুখে ফিরত বাঙালির।
১৬ নম্বর অক্রূর দত্ত লেনে প্রতি বছর হত সরস্বতী পুজো। সেই বছর সরস্বতী পুজোর সময়ে 'বিদ্যাপতি' ছবির জন্য একটা গানের রেকর্ডিংয়ে আসার কথা ছিল মহম্মদ রফি ও লতা মঙ্গেশকরের। লতার অনুরোধে বিসর্জনের নির্দিষ্ট দিনের পরও ১০ দিন অতিরিক্ত রাখা হয় সরস্বতী প্রতিমা। লতা এসে প্রণাম করার পর হয় প্রতিমা বিসর্জন। ছবিতে সেই প্রতিমার সামনে মহম্মদ রফি। ছবি সৌজন্য: অজিত ঘোষ ও অসিত ঘোষ।
এখানেই হত সরস্বতী পুজো। যে পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভি বালসারা, পঙ্কজ মল্লিক, লতা মঙ্গেশকর, মহম্মদ রফি, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আর সলিল চৌধুরীর স্মৃতি।