
একদিকে রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে অন্যদিকে পতৌদি পরিবারের হবু বৌমা-- কাঁধে দায়িত্ব ছিল অনেক। তবু ৫৬ বছর আগে শর্মিলা ঠাকুরের একটি কাজ নিয়ে যা হইচই হয়েছিল তা বোধহয় কল্পনারও অতীত। তবু ভয় পাননি তিনি। মানেননি হারও। কী ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে?

সাল ১৯৬৬। শর্মিলা তখন বলিউডে প্রায় নতুন। তাঁর টোল পরা হাসি তখন ভক্তমনে জোয়ার এনেছে। এমন সময় তাঁর কাছে অফার যায় এক ম্যাগাজিনের হয়ে বিকিনি শুট করার। তখন তিনি মাত্র ২২।

৭০-র দশকে বিকিনি পরে বাঙালির শুট! এ ছিল কল্পনারও অতীত। কিন্তু ওই যে 'হোয়াট বেঙ্গল থিঙ্কস ইন্ডিয়া থিঙ্কস টুমরো'। এখন বিকিনি জলভাত হয়ে গেলেও সে সময় দাঁড়িয়েই অভিনেত্রী ঠিক করেন তিনি এই শুট করবেনই।

অতঃপর টু-পিসে হাজির শর্মিলা। তাঁর পোশাক দেখে নাকি অস্বস্তিতে পড়েছিলেন খোদ ফোটোগ্রাফারই। এক সাক্ষাৎকারে পরবর্তীতে এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, "ফোটোগ্রাফার আমায় জিজ্ঞাসা করেন তুমি নিশ্চিত তুমি এই শুটটি করতে চাও"? সে যাই হোক শুট হল অবশেষে। কিন্তু চিত্রনাট্যের বাকি ছিল আরও।

ছবি ছাপা হওয়ার পর শুরু তীব্র ট্রোলিং। তখন সোশ্যাল মিডিয়া না থাকলেও ফিল্মি পার্টি থেকে নানা সংবাদপত্র-- লেখা হয় লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই নাকি নিজেকে 'নিচে নামিয়ে' ফেলেছেন ঠাকুর পরিবারের মেয়ে। তাঁর খারাপ লেগেছিল। তিনি কষ্ট পেয়েছিলেন। কিন্তু দমে যাননি। 'অ্যান ইভিনিং ইন প্যারিস' ছবিতে আবারও পরেন বিকিনি।

পোশাক নিয়ে বাড়াবাড়িতে বিশ্বাসী ছিলেন না তিনি। হয়ে গিয়েছিলেন ট্রেন্ড সেটার। আজকের মনোকিনি-বিকিনির দুনিয়ায় তিনি ছিলেন প্রথম, ভেঙেছিলেন চেনা ছক। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রাস্তা করে তুলেছিলেন আরও খানিক মসৃণ।