
প্রায় পাঁচ হাজার বছরেরও আগে এই পবিত্র তিথিতেই মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রিয় ভক্ত অর্জুনকে জীবনের বিরাট পাঠ হিসেবে গীতার বাণী আওড়েছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ ভগবত গীতা আকারে ভক্তিমূলক সেবার গোপনীয় জ্ঞান তার সবচেয়ে প্রিয় ভক্ত অর্জুনকে প্রদান করেছিলেন।

মহাভারতের কাহিনি অনুসারে, খ্রিষ্টপূর্ব ৩১৩৮ অব্দে কুরুক্ষেত্রে টানা ১৮ দিন ধরে যুদ্ধ চলেছিল। সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধের নাম কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ। এই যুদ্ধ হয়েছিল পান্ডব ও কৌরবদের মধ্যে। ধর্মের জয় ও অধর্মের বিনাশের লক্ষ্য নিয়ে ভয়াবহ যুদ্ধের অবসান ঘটেছিল।

কাহিনি অনুসারে, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার প্রিয় ভক্ত অর্জুনকে জীবনের সঠিক পাঠের বাণী প্রদান করেন। সেই বাণীই শ্লোক আকারে বর্ণিত রয়েছে শ্রীমদ্ভগবত গীতায়। সাধারণত, মোট ১৮টি অধ্যায় রয়েছে গীতায়। গীতার অর্থ হল, একজন মানুষের সমস্ত জীবনের প্রতিটি দিক ব্যাখ্যা করা হয়েছে। প্রতি বছর মার্গশীর্ষ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে গীতা জয়ন্তী পালন করা হয়।

শ্রীমদ্ভাগবতে, শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছিলেন, আমাদের সমস্যার জন্য আমাদের কখনওই বিশ্বকে দোষ দেওয়া উচিত নয়। এর জন্য সবার আগে আমাদের মন পরিবর্তন করা খুবই জরুরি। মন পরিবর্তন করে আমরা নিমেষের মধ্যে দুঃখের অবসান ঘটাতে পারি।

শ্রীমদ্ভাগবতে আরও বলা হয়েছে, কখনওই রাগ করা উচিত নয়। কিন্তু যখন ধর্ম ও অধর্মের মর্য়াদার স্বার্থে কিছু করা হয়, তখন ক্রোধ শাস্তিযোগ্য হয়ে ওঠে। কিছু ক্ষেত্রে যখন ধর্ম ও অর্ধমের মর্যাদা রক্ষা করা যায় না, তখন সহনশীলতা পাপের সমকক্ষ হয়ে ওঠে।

শ্রীমদ্ভাগবতে উল্লেখ রয়েছে, দুর্বল মানুষেরাই শুধু ভাগ্যের উপর ছেড়ে দেন। কিন্তু যারা সত্যিকারের মনের জোরে সব সমস্যার মোকাবিলা করেন, তারা নিজের উপর বিশ্বাস রাখেন। ভাগ্যের উপর নয়।

শ্রীমদ্ভাগবতে লেখা আছে যে সর্বদা একে অপরকে সমর্থন করা উচিত। বিপদের সময় উপদেশ প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে পাশে থাকাও জরুরি।

শ্রীমদ্ভাগবতে একটি অংশে রয়েছে, আত্মা অবিনশ্বর। অমর। তাই সত্য জানার জন্য মানুষ তার নশ্বর দেহ নিয়ে গর্ব করেন। তবে শরীর নিয়ে নয়, সত্যকে জানার প্রয়াস করতে হয়।