
১৩ ফেব্রুয়ারি লোকসভায় নতুন আয়কর বিল পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই বিল প্রকাশ্যে আসতেই ছড়িয়েছে উদ্বেগ। নতুন বিল পেশের সময় নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে বার বার আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন তিনি। তারপর থেকেই উঠছে একটা প্রশ্ন। তবে কি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে না পারলে, কোনও টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না? ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষ থেকে লাঘু হওয়ার কথা রয়েছে নতুন বিলের।

নতুন বিলের ধারা ২৬৩(১)(এ)(ix) ধারা অনুসারে, যাঁরা রিফান্ড দাবি করবেন তাঁদের নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আইটিআর জমা দিতে হবে। যা বর্তমানে প্রযোজ্য আয়কর আইন, ১৯৬১ থেকে ভিন্ন। পুরনো আইন অনুসারে করদাতারা মূল্যায়ন বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিলম্বিত রিটার্ন জমা দিলেও, রিফান্ড দাবি করতে পারেন।

এর পরেই অনেকের মনে প্রশ্ন ওঠে তবে কি নির্ধারিত তারিখের পরে রিটার্ন জমা দিলে রিফান্ড পাওয়া যাবে না? এই বিলের নতুন ধারা ৪৩৩-তে রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় রিফান্ড চাওয়ার বিভিন্ন শর্তের উল্লেখ রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে এই নিয়ম এমন লোকেদের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে যাঁরা প্রকৃত কোনও কারণে সময়সীমা মিস করেছেন। অতিরিক্ত টিডিএস কাটার ক্ষেত্রেও তাঁদের রিফান্ড পেতে সমস্যা হতে পারে।

বর্তমানে প্রচলিত ১৯৬১ সালের আইটি আইনের ধারা ২৩৭ অনুসারে নির্ধারিত সময়(৩১ জুলাই) মধ্যে রিটার্ন ফাইল করতে পারবেন। সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও ধারা ১৩৯(৪) এর অধীনে সংশ্লিষ্ট মূল্যায়ন বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে একটি ওভারডিউ রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। ওভারডিউ ফাইলকারীদের আয়ের উপর ভিত্তি করে ধারা ২৩৪(এফ) এর অধীনে ১,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হতেই তা স্পষ্ট করেছে আয়কর দফতর। আয়কর বিভাগ জানায় রিফান্ড সম্পর্কিত বিধানগুলির কোনও পরিবর্তন হবে না। অর্থাৎ রিটার্ন দেরিতে দাখিল করা হলেও, ব্যক্তিরা এখনও রিফান্ড দাবি করতে পারবেন।

ধারা ২৩৯-এর অধীনে রিফান্ডের জন্য দাখিলের প্রয়োজনীয়তা বিলের ধারা ২৬৩(১)(ix) এর সঙ্গে একীভূত করা হবে। সামগ্রিকভাবে রিফান্ড প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন হবে না। যদি কোনও করদাতা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিলম্বিত রিটার্ন দাখিল করার সময়সীমা পূরণে ব্যর্থ হন, তাহলে স্বাভাবিক আইটিআর ফাইলিংয়ের নিয়ম অনুসারে রিফান্ড পাওয়ার অধিকার বাতিল করা হবে ।

এই পরিস্থিতিতে, তারা ধারা ১১৯(২)(বি) এর অধীনে আয়কর বিভাগের প্রধান কমিশনার (প্রিন্সিপাল সিআইটি) অথবা আয়কর কমিশনার (সিআইটি) এর কাছে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ করতে পারেন। এই ধরনের অনুরোধ একদমই ব্যক্তিগত স্তরে করা হয় এবং কারণ যদি বৈধ হয় তাহলে আয়কর কমিশনার বা প্রধান কমিশনার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে পারেন। আয়কর বিভাগ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে নতুন বিলের অধীনেও রিফান্ডের নিয়ম একই থাকবে।