TV9 Bangla Digital | Edited By: দীপ্তা দাস
Nov 29, 2022 | 4:53 PM
কথায় আছে, বানরই নাকি মানুষের পূর্ব পুরুষ! সেই অর্থে মানুষের সঙ্গে বানরের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। বিশেষ করে ভারতের বিভিন্ন শহরে বানরের দেখা মেলে। পার্বত্য অঞ্চলেও বাস করে বাঁদর। এমনকী ধর্মীয় নানা স্থানেও বানরের সমাগম লক্ষ করা যায়।
গাছের ফল যেমন এরা খায়, তেমনই লোকালয়ে চলে এলে বহু মানুষই এদের খাদ্যসামগ্রী দেয়। তবে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শহরে, বানরের দলের জন্য আয়োজন করা হয় একটি ভোজসভার! নানা খাদ্যসামগ্রীতে পূর্ণ প্লেট বরাদ্দ থাকে শুধুমাত্র বাঁদরদের খাওয়ার জন্য।
লোপবুরি শহরটি এমনিতেই বানর নগরী হিসেবেই প্রসিদ্ধ! কারণ এই শহরের সঙ্গে বানর সম্প্রদায়ের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। প্রতি বছর, একটি বানর মহাভোজের আয়োজন করা হয় এই শহরে। আরও স্পষ্টভাবে বলতে হলে— থাইল্যান্ডের লোপবুরি প্রদেশের ফ্রা প্রাং স্যাম ইয়ট মন্দিরে এই উৎসবে বানরদের আমন্ত্রণ জানানো হয় ভোজের জন্য!
শহরের বাঁদরদের জন্য আয়োজিত এই উৎসবে যখন বানররা দলে দলে যোগ দেয় তখন তা এক দর্শনীয় ব্যাপার হয়। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককের উত্তরে ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে এই শহর। এই প্রদেশের প্রতীকেও ব্যবহার হয় বানরের প্রতিকৃতি। শহরের কিছু স্বেচ্ছাসেবীর তরফে তিন প্যাগোটাবিশিষ্ট মন্দিরের প্রাঙ্গণে একসারিতে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় কয়েকশো কৃত্রিম বাঁদের মূর্তি। তাদের হাতে ধরা থাকে খাদ্য ভর্তি থালা।
কিছু সময়ের মধ্যেই বানরের দল ভিড় জমায় মন্দিরে প্রাঙ্গণে। আনন্দে তিনলাফ দিয়ে তারা শুরু করে মহাভোজ! এমনকী মাঝেমধ্যে একে অন্যের খাদ্যও চেখে দেখে। এই দৃশ্য দেখতে যেমন স্থানীয়রা ভিড় করেন তেমনই বহু পর্যটকও এই দৃশ্যের সাক্ষী হতে ওই জায়গায় পৌঁছে যান। পর্যটক আকর্ষণের উদ্দেশ্যেও এই বানরের মহাভোজের আয়োজন করা হয় বলেও অনেকে মনে করেন।
‘আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে লোপবুরির আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য বিশেষ উৎসবের আয়োজন করা হয় এবং তা সফলও বটে।’— এমনটাই জানিয়েছেন উৎসবের প্রতিষ্ঠাতা ইয়ংযুথ কিটওয়াতানুসন্ত।
তিনি আরও বলেছেন, ‘আগে লোপবুরিতে তিনশো মতো বাঁদর ছিল। এখন সংখ্যাটা ৪ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। লোপবুরিকে লোকে বানর নগরী হিসেবেই চেনে। অর্থাৎ এই প্রদেশে বানর ও মানুষ মিলেমিশে বাস করে।’
আসলে এই উৎসব বানরের প্রতি একধরনের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের পন্থাও বটে। কারণ বানরের জন্যই এই প্রদেশে পর্যটকদের আর্বিভাব ঘটে। ফলে স্থানীয়দেরও আয়ের ব্যবস্থা হয়। উৎসবের আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি বছর থেকেই উৎসবে কৃত্রিম বানর রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাতে পর্যটক ও বানরের ভিড়েও কিছু ইতিবাচক তফাত নজরে এসেছে।