
১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় সীমা বিশ্বাসের কেরিয়ারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছবি 'ব্যান্ডিট কুইন'। ছবিতে নগ্ন দৃশ্য ছিল তাঁর। ভয়ানক সেই গণধর্ষণ দৃশ্য। কেবল তাই নয়, ধর্ষণ দৃশ্যের পর অভিনেত্রীকে সম্পূর্ণ নগ্ন করে ঘোরানো হয়েছিল গোটা গ্রামে।

ভারতের একমাত্র ডাকাত রানী ফুলন দেবীর জীবনীর উপর তৈরি হয়েছিল 'ব্যান্ডিট কুইন'। পরিচালক শেখর কাপুর অসমের অভিনেত্রী সীমা বিশ্বাসকে সেই চরিত্রে নির্বাচন করেছিলেন। সেই সময় সীমা থিয়েটার করতেন। দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার (NSD) রেপার্টরি কোম্পানিতে মুখ্য অভিনেত্রী ছিলেন।

পরিচালক শেখর কাপুর তাঁর কাছে নিয়ে যান 'ব্যান্ডিট কুইন'-এর চিত্রনাট্য। চিত্রনাট্য পড়ে সীমা তিন রাত ঘুমোতে পারেননি। ওই সিনটার জন্য নয়। ঘুমতে পারেননি চরিত্রটার একাধিক স্তর এবং গভীরতার জন্য।

ছবিতে গা গুলিয়ে ওঠার মতো একটি নগ্ন দৃশ্য ছিল সীমার। TV9 বাংলাকে অভিনেত্রী বলেছিলেন, সেই নগ্ন দৃশ্যে তিনি অভিনয় করেননি। করেছিলেন অন্য এক অভিনেত্রী। তিনি শেখরকে বডি ডাবল নেওয়ার কথা বলেছিলেন।

তারপর গুজরাট থেকে একজন মডেলকে দিয়ে ওই সিনটা করানো হয়েছিল। তাঁকে নগ্ন অবস্থায় সিনটা করতে দেখে সীমা কাঁদতেন খুব। মনে হত ক্রেডিট সব তিনি নিয়ে যাবেন, আর লাঞ্ছনা মেয়েটির হবে…

তবে দুনিয়া আজও জানে, সীমাই সেদিন শরীরের সমস্ত পোশাক খুলে অনাবৃত হয়ে অভিনয় করেছিলেন। এবং সেই অভিনয়ে তাঁকে কেউ মাত করতে পারেনি।

বিষয়টি জানাজানি হয় অসমে সীমার বাড়িতে। কিন্তু অভিনেত্রীর বাড়ি খুবই মুক্তমনের। বিশেষ করে তাঁর বাবা-মা।

সীমা TV9 বাংলাকে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "বাবা-মাকে ছবিটা দেখাতেই চেয়েছিলাম। ওঁরা জবাবদিহি চাননি। আমি চোখ বন্ধ করে তখন বাবার কোলে। ছবি শেষ হওয়ার পর বাবা মাকে বলেছিলেন, “যাই বলো মীরা (সীমার মায়ের নাম), এত দারুণ পারফরম্যান্স আমার মেয়ে ছাড়া কে দিতে পারে বলো…”।"

সেটাই ছিল অভিনেত্রী সীমা বিশ্বাসের কাছে অস্কার! তাঁর বাবা সেদিন একবারও জিজ্ঞেস করেননি, ওই নগ্ন সিনটা তিনি করেছিলাম কি না। সেদিন সীমার মনে হয়েছিল, "বাবা-মা সঙ্গে আছে যখন সমাজকে পরোয়া করি না…"