PAC Revolt at UP: কুম্ভ মেলায় ডিউটি করতে নারাজ সেনা, ধুন্ধুমার পরিস্থিতি উত্তর প্রদেশে, পদত্যাগ মুখ্যমন্ত্রীর, জানেন এই ঘটনা?

Jan 16, 2025 | 7:34 PM

PAC Revolt at UP: অসন্তোষ এতদিন পুলিশের ভিতরের বিষয় ছিল, তাই লাভার মতো ছড়িয়ে পড়ল চারিদিকে। হই হই কাণ্ড, সরকারি ভাবন জ্বালিয়ে দেওয়া, ভাঙচুর সাঙ্ঘাতিক পরিস্থিতি।

1 / 13
PAC প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারি, রাজ্যের আইনকানুন রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পুলিশের এই অংশ। কম-বেশি প্রায় সব রাজ্যের আইন কানুন রক্ষার ক্ষেত্রে অংশ নেয় এই সশস্ত্র বাহিনী। কিন্তু আপনি কি জানেন এক বার এই বাহিনীর বেঁকে বসায় লাটে উঠতে বসেছিল কুম্ভ মেলা।

PAC প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারি, রাজ্যের আইনকানুন রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পুলিশের এই অংশ। কম-বেশি প্রায় সব রাজ্যের আইন কানুন রক্ষার ক্ষেত্রে অংশ নেয় এই সশস্ত্র বাহিনী। কিন্তু আপনি কি জানেন এক বার এই বাহিনীর বেঁকে বসায় লাটে উঠতে বসেছিল কুম্ভ মেলা।

2 / 13
কুম্ভমেলায় ডিউটি? শুনেই পিএসি-তে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিদ্রোহ। সময়টা ১৯৭৩ সালের ২১ মে। উত্তর প্রদেশের পিএসি জওয়ানদের মধ্যে কিছুদিন ধরেই নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে দানা বাঁধছিল অসন্তোষ। তায় আবার ঘাড়ের উপর এসে পড়ে কুম্ভ মেলার দায়িত্ব। জওয়ানরা জানিয়ে দিলেন তাঁরা কুম্ভের ডিউটি করবেন না। কিন্তু বললেই আর তা শুনছে কে? উর্ধ্বতন কর্মীরাও পাত্তা দেয়নি তাঁদের আপত্তিতে।

কুম্ভমেলায় ডিউটি? শুনেই পিএসি-তে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিদ্রোহ। সময়টা ১৯৭৩ সালের ২১ মে। উত্তর প্রদেশের পিএসি জওয়ানদের মধ্যে কিছুদিন ধরেই নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে দানা বাঁধছিল অসন্তোষ। তায় আবার ঘাড়ের উপর এসে পড়ে কুম্ভ মেলার দায়িত্ব। জওয়ানরা জানিয়ে দিলেন তাঁরা কুম্ভের ডিউটি করবেন না। কিন্তু বললেই আর তা শুনছে কে? উর্ধ্বতন কর্মীরাও পাত্তা দেয়নি তাঁদের আপত্তিতে।

3 / 13
ব্যস, বারুদের বাক্সে আগুনটা পড়েই গেল। যে চাপা      অসন্তোষ এতদিন পুলিশের ভিতরের বিষয় ছিল, তাই লাভার মতো ছড়িয়ে পড়ল চারিদিকে। হই হই কাণ্ড, সরকারি ভাবন জ্বালিয়ে দেওয়া, ভাঙচুর সাঙ্ঘাতিক পরিস্থিতি।

ব্যস, বারুদের বাক্সে আগুনটা পড়েই গেল। যে চাপা অসন্তোষ এতদিন পুলিশের ভিতরের বিষয় ছিল, তাই লাভার মতো ছড়িয়ে পড়ল চারিদিকে। হই হই কাণ্ড, সরকারি ভাবন জ্বালিয়ে দেওয়া, ভাঙচুর সাঙ্ঘাতিক পরিস্থিতি।

4 / 13
সরাসরি বিদ্রোহ ঘোষণা করল মেরঠ থেকে তিনটি ব্যাটেলিয়ান। সরকারের কোনও নির্দেশ আর তাঁরা মানবেন না। বরেলি, আগ্রার জওয়ানরাও যোগ দিলেন তাঁদের সঙ্গে। দেখতে দেখতে বিদ্রোহের আগুন পৌঁছে গেল লখনউ পর্যন্ত।

সরাসরি বিদ্রোহ ঘোষণা করল মেরঠ থেকে তিনটি ব্যাটেলিয়ান। সরকারের কোনও নির্দেশ আর তাঁরা মানবেন না। বরেলি, আগ্রার জওয়ানরাও যোগ দিলেন তাঁদের সঙ্গে। দেখতে দেখতে বিদ্রোহের আগুন পৌঁছে গেল লখনউ পর্যন্ত।

5 / 13
পিএসি জওয়ানদের দাবি ছিল মূলত তিনটি। বেতন বৃদ্ধি, কাজের জন্য উন্নত পরিস্থিতি এবং যথাযথ মর্যাদা ও স্বীকৃতি দেওয়া। সদা শৃঙ্খলাপরায়ন জওয়ানরা এই তিন দাবিকে সামনে রেখেই হয়ে উঠল বেপরোয়া।  যে সিপাহীরা সব সময় সামনে থেকে পরিস্থিতি সামাল দেয়, তাঁরাই বেকে বসলে কী পরিস্থিতি তৈরি হয় বুঝতেই পারছেন।

পিএসি জওয়ানদের দাবি ছিল মূলত তিনটি। বেতন বৃদ্ধি, কাজের জন্য উন্নত পরিস্থিতি এবং যথাযথ মর্যাদা ও স্বীকৃতি দেওয়া। সদা শৃঙ্খলাপরায়ন জওয়ানরা এই তিন দাবিকে সামনে রেখেই হয়ে উঠল বেপরোয়া। যে সিপাহীরা সব সময় সামনে থেকে পরিস্থিতি সামাল দেয়, তাঁরাই বেকে বসলে কী পরিস্থিতি তৈরি হয় বুঝতেই পারছেন।

6 / 13
সামনে যা পেল তাতেই চলল ধ্বংসলীলা। থানা, সরকারি অফিস, সরকারি সম্পত্তি কিছুই বাদ গেল না। লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রনেতাও পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন। অবস্থা আরও খারাপ হল।

সামনে যা পেল তাতেই চলল ধ্বংসলীলা। থানা, সরকারি অফিস, সরকারি সম্পত্তি কিছুই বাদ গেল না। লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রনেতাও পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন। অবস্থা আরও খারাপ হল।

7 / 13
২৩ মে সকালবেলা লখনউ বিশ্ব বিদ্যালয়ে তখন পরীক্ষা চলছিল। হঠাৎ স্লোগান দিতে দিতে পরীক্ষা হলে ঢুকে এল একদল ছাত্র। জানিয়ে দিল পরীক্ষা বাতিল। ছাত্র ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে রুখে দাঁড়ান শিক্ষকরা। কিন্তু হলে হবে ততক্ষণে দাউ দাউ করে জ্বলে গিয়েছে রেজিস্টার অফিস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে লাইব্রেরি সহ আরও অনেক কিছুই।

২৩ মে সকালবেলা লখনউ বিশ্ব বিদ্যালয়ে তখন পরীক্ষা চলছিল। হঠাৎ স্লোগান দিতে দিতে পরীক্ষা হলে ঢুকে এল একদল ছাত্র। জানিয়ে দিল পরীক্ষা বাতিল। ছাত্র ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে রুখে দাঁড়ান শিক্ষকরা। কিন্তু হলে হবে ততক্ষণে দাউ দাউ করে জ্বলে গিয়েছে রেজিস্টার অফিস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে লাইব্রেরি সহ আরও অনেক কিছুই।

8 / 13
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে জায়গায় জায়গায় তখন নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে চলছে সংঘর্ষ। শত চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় উত্তর প্রদেশ পুলিশ। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার হস্তক্ষেপ করে। উত্তর প্রদেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে জায়গায় জায়গায় তখন নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে চলছে সংঘর্ষ। শত চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় উত্তর প্রদেশ পুলিশ। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার হস্তক্ষেপ করে। উত্তর প্রদেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

9 / 13
পরিস্থিতি সামলাতে বিএসএফ কর্তা কেএফ রুস্তমজিকে দায়িত্ব দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই সময় তাঁর হাতে মাত্র দুটি ব্যাটেলিয়ন। তিনি জানান, সীমান্ত থেকে অন্তত ২০টি ব্যাটেলিয়ান আনতে হবে। কিন্তু এত সময় নেই। বাধ্য হয়ে ভারতীয় সেনাকে পরিস্থিতি সামলানোর নির্দেশ দেয় কেন্দ্র।

পরিস্থিতি সামলাতে বিএসএফ কর্তা কেএফ রুস্তমজিকে দায়িত্ব দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই সময় তাঁর হাতে মাত্র দুটি ব্যাটেলিয়ন। তিনি জানান, সীমান্ত থেকে অন্তত ২০টি ব্যাটেলিয়ান আনতে হবে। কিন্তু এত সময় নেই। বাধ্য হয়ে ভারতীয় সেনাকে পরিস্থিতি সামলানোর নির্দেশ দেয় কেন্দ্র।

10 / 13
চলে গুলি, মৃত্যু হয় কয়েকজন বিদ্রোহীর। আরও ক্ষেপে বিদ্রোহীরা। শেষে সেনাকে গুলি না চালানোর নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। এর মধ্যেই বিএসএফের ব্যাটেলিয়ান উত্তর প্রদেশে পৌছতে শুরু করে। বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট দল করে পিএসি জওয়ানদের ঘিরে ফেলে তারা। শেষে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় তাঁরা।

চলে গুলি, মৃত্যু হয় কয়েকজন বিদ্রোহীর। আরও ক্ষেপে বিদ্রোহীরা। শেষে সেনাকে গুলি না চালানোর নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। এর মধ্যেই বিএসএফের ব্যাটেলিয়ান উত্তর প্রদেশে পৌছতে শুরু করে। বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট দল করে পিএসি জওয়ানদের ঘিরে ফেলে তারা। শেষে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় তাঁরা।

11 / 13
বিএসএফ, ভারতীয় সেনা এবং পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আত্মসমর্পণ করেন পিএসি জওয়ানরা। সেই বিদ্রোহের অন্যতম স্বঘোষিত ছাত্রনেতা অতুল অঞ্জন টাইমস অব ইন্ডিয়া সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পিএসসির সঙ্গে বৈঠক করেই তবেই তাঁরা বিদ্রোহে নামেন।

বিএসএফ, ভারতীয় সেনা এবং পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আত্মসমর্পণ করেন পিএসি জওয়ানরা। সেই বিদ্রোহের অন্যতম স্বঘোষিত ছাত্রনেতা অতুল অঞ্জন টাইমস অব ইন্ডিয়া সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পিএসসির সঙ্গে বৈঠক করেই তবেই তাঁরা বিদ্রোহে নামেন।

12 / 13
অঞ্জনের কথায় এই যৌথ বিদ্রোহ পিএসসি জওয়ানদের ডিএ বা মেসের সমস্যার মতো একাধিক গুরুতর সমস্যার সমাধান করতে সরকারকে বাধ্য করেছিল। একাধিক ভিন্ন ভাবাদর্শের ছাত্র সংগঠন এক ছাতার তলায় চলে আসে এই বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে।

অঞ্জনের কথায় এই যৌথ বিদ্রোহ পিএসসি জওয়ানদের ডিএ বা মেসের সমস্যার মতো একাধিক গুরুতর সমস্যার সমাধান করতে সরকারকে বাধ্য করেছিল। একাধিক ভিন্ন ভাবাদর্শের ছাত্র সংগঠন এক ছাতার তলায় চলে আসে এই বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে।

13 / 13
জানা যায় ঘটনায় ৩৫ জন পিএসসি জওয়ানের মৃত্যু হয়, শতাধিক বিদ্রোহী অ্যারেস্ট হয়। ৬৫ কেসে পরবর্তীকালে ৭৯৫ জন পুলিশকে ফাঁসানো হয়। প্রকাশ্যে গুলি চালানোর অপরাধে ৫০০জনের চাকরি যায়। মুখ্যমন্ত্রী কমলাপতি ত্রিপাঠী পদত্যাগ করেন। পরিস্থিতির দিকে নজর দিয়ে ১২জুন ১৯৭৩ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে কেন্দ্র। চলে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। পরে এইচ এন বাহুগুণা মুখ্যমন্ত্রী হলে পুনরায় সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। (সব ছবি - PTI ও Getty Images)

জানা যায় ঘটনায় ৩৫ জন পিএসসি জওয়ানের মৃত্যু হয়, শতাধিক বিদ্রোহী অ্যারেস্ট হয়। ৬৫ কেসে পরবর্তীকালে ৭৯৫ জন পুলিশকে ফাঁসানো হয়। প্রকাশ্যে গুলি চালানোর অপরাধে ৫০০জনের চাকরি যায়। মুখ্যমন্ত্রী কমলাপতি ত্রিপাঠী পদত্যাগ করেন। পরিস্থিতির দিকে নজর দিয়ে ১২জুন ১৯৭৩ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে কেন্দ্র। চলে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। পরে এইচ এন বাহুগুণা মুখ্যমন্ত্রী হলে পুনরায় সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। (সব ছবি - PTI ও Getty Images)

Next Photo Gallery