আমি শ্রী মদন গোপাল মিত্র…

বঙ্গ রাজনীতির রঙিন চরিত্র। রাজনীতির ময়দান থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সমানভাবে জনপ্রিয় তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা। ফেসবুকে ‘লাইভে আসছি’ মানেই মদন মিত্র। ‘এই গালাগাল করছেন না তো, তাহলে কিন্তু চলে যাব’, তাঁর এমন সংলাপ তো রীতিমতো ভাইরাল।

আমি শ্রী মদন গোপাল মিত্র...
মদন মিত্র (অলংকরণ - অভীক দেবনাথ)
Follow Us:
| Updated on: Dec 01, 2020 | 7:10 PM

BIO-বৃত্তান্ত: মদন গোপাল মিত্র (Madan Mitra)। বঙ্গ রাজনীতির রঙিন চরিত্র। রাজনীতির ময়দান থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সমানভাবে জনপ্রিয় তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা। ফেসবুকে ‘লাইভে আসছি’ মানেই মদন মিত্র। ‘এই গালাগাল করছেন না তো, তাহলে কিন্তু চলে যাব’, তাঁর এমন সংলাপ তো রীতিমতো ভাইরাল।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মন্ত্রিসভার প্রথম ক্রীড়া ও পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী মদন মিত্র। তারও আগে কংগ্রেসে সতীর্থ এবং পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি হওয়ার প্রথম দিন থেকেই নেত্রীর ছায়াসঙ্গী। সারদা কেলেঙ্কারিতে (Saradha Scam) নাম জড়িয়ে যায়ওয়া দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। ফিরে এসে আবার সক্রিয় রাজনীতিতে। ভাটপাড়ায় উপ-নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হন। কিন্তু, তৃতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় যাওয়া হয়নি তাঁর। অর্জুন সিংয়ের ছেলে পবনের কাছে হেরে যান মদন।

পরিবার (Family)

ভবানীপুরের মিত্র পরিবারের ছেলে। জন্ম ৩ ডিসেম্বর, ১৯৫৪ সালে। বাবা প্রয়াত জ্যোৎস্না কুমার মিত্র। মা হাসিরাণি মিত্র। যদিও তিনি নিজে কামারহাটি বিধানসভার (Kamarhati) ভোটার। সরকারি ঠিকানা – ৭/টি এন রোড, কামারহাটি, বেলঘরিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা (কলকাতা – ৭০০০৩৫)। স্ত্রীর নাম অর্চনা মিত্র। স্বরূপ ও শুভরূপ নামের দুই ছেলে রয়েছে তাঁর। স্বরূপ ব্যবসায়ী। শুভরূপ যুক্ত সক্রিয় রাজনীতিতে। ভবানীপুরের মিত্র পরিবারের সব থেকে ছোট সদস্যের নাম মহারূপ। মহারূপ মদন মিত্রের নাতি।

পড়াশুনা (Education)  

হাজরার কাছে সাউথ সাবারবান স্কুলে পড়াশুনা। পরে আশুতোষ কলেজ (Asutosh College) থেকে ইতিহাসে স্নাতক।

রাজনৈতিক জীবন (Political Career)  

ছাত্রবস্থায় কংগ্রেসি রাজনীতিতে হাতেখড়ি। আশুতোষ কলেজের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট হন মদন মিত্র। প্রথমে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি ঘরানার ছাত্রনেতা থাকলেও পরবর্তীতে সোমেন মিত্রের (Somen Mitra) শিবিরে যোগ দেন তিনি। এরপর আবার শিবির বদল করে মমতা অনুগামী হন মদন মিত্র।

সাংগঠনিক ক্ষেত্রে প্রথমে দক্ষিণ কলকাতার যুব কংগ্রেসের (Youth Congress) প্রেসিডেন্ট এবং পরে রাজ্যের যুব সংগঠনের সেক্রেটারি। পরবর্তীতে ট্যাক্সি ইউনিয়ন-সহ এসএসকেএম হাসপাতালের শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বও পান তিনি। প্রথমে ইতস্তত বোধ করলেও ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস ভাগ হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা হলে তিনিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে নতুন দলে চলে আসেন। ২০০০ সালে দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয় তাঁকে।

• ২০০৬ সালে প্রথম বিষ্ণপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে বিধানসভায় আসেন মদন মিত্র।
• ২০১১ সালে কামারহাটি বিধানসভা থেকে ফের জয়ী মদন মিত্র। জিতেই মমতা মন্ত্রিসভার মন্ত্রী। বাম আমলে ‘সুভাষ চক্রবর্তীর মন্ত্রক’ ক্রীড়া ও পরিবহণের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। চার বছরেরও বেশি সময় মন্ত্রী থাকার পর ২০১৫ সালের নভেম্বরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।
• ২০১৬ সালে ফের কামারহাটি থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মদন মিত্র। কিন্তু সেবার হেরে যান। কংগ্রেস সমর্থিত বাম জোটের প্রার্থী মানস চক্রবর্তীর কাছে ৪ হাজারের কিছু বেশি ভোটে হারেন মদন মিত্র।
• ২০১৯ সালে ভাটপাড়ার উপনির্বাচনে মদন মিত্রকে ফের প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও বিজেপি প্রার্থী পবন সিংয়ের কাছে হেরে যান মদন মিত্র।

বিতর্ক (Controversy) 

সারদা কেলেঙ্কারিতে তৃণমূলের অনেক নেতামন্ত্রীর সঙ্গে নাম জড়ায় মদন মিত্রেরও। সে কারণেই মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করে। প্রায় ২ বছর বন্দি ছিলেন তিনি।

সারদা কেলেঙ্কারি থেকে বেকসুর খালাস হওয়ার আগেই ২০১৭ সালে মদন মিত্রের নাম জড়িয়ে পরে নারদকাণ্ডে (Narada Case)। একটি স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো ফুটেজে সরাসরি টাকা নিতে দেখা যায় তাঁকে। যার তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তৃণমূলের এই ‘হেভিওয়েট’ নেতার বিরুদ্ধে ৬টি ফৌজদারি (ক্রিমিনাল) মামলা চলছে।