
হিন্দু ক্য়ালেন্ডার অনুযায়ী, প্রতি বছর ভাদ্রপদ মাসের পূর্ণিমা তিথি থেকে পিতৃপক্ষ শুরু হয়। শেষ হয় আশ্বিন মাসের অমাবস্যা তিথিতে। চলতি বছর, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে পিতৃপক্ষ। চলবে ১৪ অক্টোবর, শনিবার পর্যন্ত। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, পিতৃপক্ষে শ্রাদ্ধের জন্য তৈরি খাবার থেকে কিছু অংশ পশু-পাখির জন্য আলাদা করে রাখা হয়। এই কাজ না করা হলে তা শ্রাদ্ধের কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায় বলে মনে করা হয়। এই প্রক্রিয়াকে পঞ্চবলি বলা হয়। পিতৃপক্ষের সময় যদি এই পাঁচ প্রাণি এসে থাকে, তাহলে শ্রাদ্ধের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে মনে করা হয়।
কাক : কাককে আসলে ঝাড়ুদার পাখি বলা হয়। তবে জ্য়োতিষশাস্ত্রে কাক হল বায়ুর প্রতীক। পিতৃপক্ষে কাককে খাবার খাওয়ানোর সর্বাধিক গুরুত্ব রয়েছে। শ্রাদ্ধপক্ষের সময় খাবারের একটি অংশ কাকের জন্য রাখা আবশ্যিক। হিন্দুদের বিশ্বাস, পূর্বপুরুষদের ইঙ্গিত দিতে সক্ষম এই ঝাড়ুদার পাখি। কাক যদি পূর্বপুরুষদের নিবেদন করা খাবার খায়, তাহলে সেই খাবার পূর্বপুরুষদের দ্বারা গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। সন্তুষ্ট ও খুশি হলে পরিবারের উপর আশীর্বাদ বর্ষণ করেন।
কালো গরু: গরুকে পৃথিবীর উপাদানের প্রতীক বলে মনে করা হয়। সনাতন ধর্মে, গরুকে অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাণি বলে মনে করা হয়। পিতৃপক্ষের সময় নিবেদন করা খাবারের একটি অংশ কালো রঙের গরুর জন্য নেওয়া হয়। সেই খাবার যদি প্রতিদিন গরুকে খাওয়ানো হয় তাহলে খুব খুশি হন পূর্বপুরুষরা। শুধু তাই নয়, গৃহে উন্নতি, সমৃদ্ধি ও সম্পদের আশীর্বাদ দান করে।
কালো রঙের কুকুর: পিতৃপক্ষে কুকুরকেও শ্রাদ্ধের খাবার নিবেদন করা হয়। এই প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে কথিত আছে। কুকুরকে জলের প্রতীক ধরা হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, পূর্বপুরুষদের তিথিতে খাবারের একটি অংশ কুকুরকে খাওয়ানো হলে পূর্বপুরুষদের আত্মা তৃপ্ত হয়।
হিন্দু দেবতা: পিতৃপক্ষের সময় দেবতাদের অন্ন প্রদানেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। অনেকেই রয়েছেন যাঁরা রোজকার খাবার খাওয়ার সময় খাবারের একটু অংশ দেবতা ও পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে রেখে দেন। কথিত আছে, দেবতারা হলেন আকাশ প্রতীক। পিতৃপক্ষের সময় প্রস্তুত করা খাবারের একটি অংশও দেবতাদের জন্য নেওয়া হয়। এতে করে পূর্বপুরুষরা খুশি হন এবং তাদের সন্তানদের সমৃদ্ধির আশীর্বাদ করেন।