
সনাতন ধর্মে, ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে শ্রাদ্ধ পূর্ণিমা পালিত হয়। এ দিনে উমা মহেশ্বর ব্রত ও শক্র ব্রতও পালন করা হয়, শুধু তাই নয়, এদিন সন্তানের জন্য ইন্দ্রের আরাধনাও করা হয়। পঞ্চাঙ্গ মতে, চলতি বছর এই বছর, ভাদ্রপদ পূর্ণিমায় রয়েছে বিরল ও শুভ যোগের একটি বিশেষ সংমিশ্রণ। এদিন বিশেষ প্রতিকার পালন করার রীতি রয়েছে। সত্যনারায়ণের ব্রতপাঠ পালন করলে লক্ষ্মী ঘরে স্থায়ীভাবেবাস করেন বলে মনে করা হয়।
পঞ্চাঙ্গ মতে, ভাদ্রপদ পূর্ণিমা পালিত হবে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর। দেবী লক্ষ্মীকে তুষ্ট করার জন্য পূর্ণিমা তিথিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, পূর্ণিমা ১৬ কলায় পূর্ণ থাকে। তাই বিশ্বাস করা হয়, এ দিনে চন্দ্রকে অর্ঘ্য নিবেদন করলে সমস্ত মানসিক অশান্তি ও দুঃখ-কষ্ট দূর হতে পারে। সুখ-শান্তিতে ভরে থাকে বৈবাহিক জীবনে। হিন্দু ধর্ম মতে, ভাদ্রপদ পূর্ণিমার দিন থেকে পিতৃপক্ষ শুরু হয়ে যায়। যদিও এ দিনে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান একেবারে করা হয় না।
শুভ যোগ
ভাদ্রপদ পূর্ণিমার দিনে গঠিত হচ্ছে মোট ৪টি বিরল শুভ যোগ। সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ, বৃদ্ধি যোগ, অমৃত সিদ্ধি যোগ ও ধ্রুব যোগের সমন্বয়ে গঠিত হতে চলেছে এদিনে। জ্যোতিষীদের মতে, পূর্ণিমা তিথিতে সর্বার্থ সিদ্ধি ও বৃদ্ধি যোগে লক্ষ্মীর আরাধনা করলে অগাধ অর্থলাভ, পুজোআচ্চা মন বসতে পারে। এছাড়া লক্ষ্মীর বিশেষ কৃপায় ভক্তরা সর্বদা সুখ-শান্তি বজায় থাকবে।
সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ ও অমৃত সিদ্ধি যোগ : আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর, রাত ১১টা ৪৮ মিনিট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা ১৩ মিনিট
বৃদ্ধি যোগ : আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর বেলা ৮টা ৫ মিনিট
ধ্রুব যোগ : আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর, বেলা ৮টা ৩ মিনিট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর বেলা ৪টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত।
অমৃত সিদ্ধি যোগ: আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর, রাত ১১টা ১৮ মিনিট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত
শুক্রবার ও পূর্ণিমা উভয়ই দেবী লক্ষ্মীর প্রিয় দিন। তাই এদিনে ধনসম্পদ বৃদ্ধি ও লাভের জন্য সবচেয়ে সেরা ও শুভ বলে মনে করা হয়।
প্রতিকার
পিতৃপক্ষ অবশ্যই ভাদ্রপদ পূর্ণিমা তিথি থেকে শুরু হয় কিন্তু শ্রাদ্ধ বা তর্পণের মতো অনুষ্ঠান করা হয় না। এই সময় পূর্বপুরুষদের খুশি করতে এই শুভ দিনে পিপল গাছের পুজো করতে পারেন। পূর্ণিমার দিন বট গাছে দেবী লক্ষ্মী অধিষ্ঠান করেন বলে বিশ্বাস করা হয়।
পুরাণে বলা আছে যে এই ভাদ্রপদ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে ভক্তি সহকারে দান করলে তার পুণ্যের কখনও শেষ হয় না। এর মাধ্যমে ইহকালের পাশাপাশি পরকালেরও সুখ বয়ে নিয়ে আসে। এ দিনে মানুষ, দেবতা ও পূর্বপুরুষ সকলেই অন্ন-জল দান করে তৃপ্তি লাভ করে থাকেন।