Markandeshwar Mahadev Temple: ৫০০০ বছরের প্রাচীন এই মন্দিরেই যমরাজেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন মহেশ্বর! কোথায়?
Lord Shiva And Yamraj: মনে করা হয়, ভক্তদের রক্ষা করার জন্যই এই মন্দিরে যমরাজকে শিকল দিয়ে বেঁধে বন্দি করেছিলেন মহাকাল। প্রাচীন ও বিখ্যাত এই মন্দিরে মহাদেব দর্শনেই ভক্তরা দীর্ঘায়ু লাভ করেন, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হন।
দেশে প্রায় কয়েক কোটি মন্দির রয়েছে। যার মধ্য়ে বেশিরভাগ মন্দিরের অধিষ্ঠিত দেবদেবী হলেন বিষ্ণু অথবা মহাদেব বা দেবী দুর্গা। এমনকি হাজার হাজার বছরের পুরনো ও প্রাচীন মন্দিরেরও হদিশ রয়েছে। তবে শিবভক্তের দেশে শিবমন্দিরের ও শিবলিঙ্গের সংখ্যা প্রায় অগণিত। শ্রাবণ মাসে সারা বিশ্বেই মহাদেবের ভক্তিতে মগ্ন থাকেন ভক্তরা। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, মার্কণ্ডেশ্বর ঋষি এই মন্দিরেই যমরাজকে পরাজিত করে মৃত্যুকে জয় করেছিলেন ও চিরঞ্জীবী হয়েছিলেন। মনে করা হয়, ভক্তদের রক্ষা করার জন্যই এই মন্দিরে যমরাজকে শিকল দিয়ে বেঁধে বন্দি করেছিলেন মহাকাল। প্রাচীন ও বিখ্যাত এই মন্দিরে মহাদেব দর্শনেই ভক্তরা দীর্ঘায়ু লাভ করেন, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হন।
কিংবদন্তি ও ইতিহাস
ধর্মীয় নগরী উজ্জয়নীেত শিবের একটি অলৌকিক মন্দির রয়েছে। ইতিহাসের হিসেব অনুযায়ী, ৫ হাজার বছরের পুরনো এই মন্দিরটি সম্রাট বিক্রমাদিত্যের আমলের নির্মাণ করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, স্বয়ং ভগবান শিব ভক্তদেরকে রক্ষা করতে ওই মন্দিরে যমরাজকে শিকল দিয়ে বেঁধেছিলেন। ঋষি মৃকন্দ ব্রহ্মার তপস্যা করে পুত্র লাভের আশীর্বাদ পেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর পুত্র মার্কণ্ডেয়ের আয়ু ছিল কম। যার কারণে ঋষি মৃকন্দ তাঁর পুত্র ঋষি মার্কণ্ডেয়র স্বল্প আয়ু নিয়ে চিন্তিত হতে লাগলেন। পিতাকে চিন্তিত দেখে পুত্রের মনে আঘাত লাগে, উদ্বেগ তৈরি হয়। একদিন ছেলের অনুরোধে ঋষি তাঁকে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। পিতার দুঃখ দূর করতে ও দীর্ঘায়ু লাভের জন্য মার্কণ্ডেয় অবন্তিকা তীর্থে অবস্থিত মহাকাল বনে অবস্থিত একই মন্দিরে ভগবান শঙ্করের কঠোর তপস্যা করেন। যখন তার বয়স ১২ বছর, তখন যমরাজ তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিতে আসেন। কিন্তু মৃত্যুকে স্বীকার করতে চান না তিনি। যমরাজকে হারাতে শিবের মূর্তিকে দুই হাতে চেপে ধরেন।
ভগবান শিব যমরাজকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন
বিশ্বাস করা হয় যে যমরাজ যখন মার্কণ্ডেয়ের প্রাণ নিতে মর্ত্যে নেমে আসেন, তখন মহাদেব তাঁকে রক্ষা করার জন্য আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাঁকে বাঁচাতে মৃত্যুর দেবতা যমরাজকে মন্দিরে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন। পাশাপাশি তিনি ঋষি মার্কণ্ডেয়কে বর প্রদান করেছিলেন যে তিনি ১২ কল্প পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন।
শিবলিঙ্গ দক্ষিণমুখী
কাল মানে যমরাজ এই মন্দিরে আবদ্ধ। মন্দিরে স্থাপিত এই শিবলিঙ্গটি দক্ষিণমুখী।স্বাভাবিকভাবেই শিবলিঙ্গে একটি চোখও খোদাই করা রয়েছে। দক্ষিণ হল সময়ের দিক। হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহাকাল ভক্তদের রক্ষা করার জন্য কালকে এখানেই বন্দি করে রেখেছিলেন। মার্কন্ডেশ্বর মহাদেবের পুজো করলে ভক্তরা দীর্ঘায়ু ও স্বাস্থ্য লাভ করেন। ভোলেনাথের এই অলৌকিকতার কারণে সারা বছরই ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। উৎসব হোক বা জন্মদিন বা বিবাহ বার্ষিকীর মতো শুভ অনুষ্ঠানে, হাজার হাজার শিবভক্ত এই মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা করে দীর্ঘায়ু ও স্বাস্থ্য কামনা করে থাকেন।