
প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্র অনুযায়ী, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক কিছুই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে বাস্তুদোষের সঙ্গে। শরীর স্বাস্থ্য, মনোবল, সম্পর্ক, আর্থিক অবস্থা, সবকিছুর উপর বাস্তুর কিছু না কিছু প্রভাব থাকে বলে বিশ্বাস। তেমনই কিন্তু ওজন বেড়ে যাওয়া বা স্থূলতা কেবলমাত্র খাদ্যাভ্যাস বা ব্যায়ামের অভাবে হয় এমনটা নয়। বাস্তুশাস্ত্র বলছে এটি বাস্তুদোষেরও ইঙ্গিত হতে পারে।
বাস্তুশাস্ত্র মতে, বাড়ির নির্দিষ্ট কিছু অংশ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও মানসিক অবস্থার সঙ্গে যুক্ত। যেমন, উত্তর-পূর্ব দিক মানসিক স্থিতি ও শুদ্ধতার প্রতীক, দক্ষিণ-পশ্চিম শক্তি ও স্থায়িত্বের প্রতীক। মনে করা হয় বাড়ির উত্তর-পূর্ব কোণ ভারী বস্তু রাখলে বা অপরিচ্ছন্ন হলে, তা মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। এই মানসিক অশান্তির হাত থেকে অনেকেই আশ্রয় নেন অতিরিক্ত খাওয়ার। আবেগঘন হয়ে না বুঝেই ঝুঁকে পড়েন নিজের প্রয়োজনের থেকে বেশি খাওয়ায়। এই ইমোশনাল ইটিং হয়ে দাঁড়া ওজন বৃদ্ধির কারণ।
আবার বাড়ির দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে যদি কোনও কাটা-ছেঁড়া জিনিস, ভাঙা আসবাব বা ফেলে দেওয়া জিনিস থাকে, তবে তা স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করে। জীবনে অপ্রয়োজনীয় ভার এনে দেয়। অবসাদ কিন্তু ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ।
রান্নাঘরের অবস্থান ও পরিচ্ছন্নতাও বাস্তু অনুসারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রান্নাঘর যদি উত্তর-পূর্ব দিকে হয়, তবে তা মানসিক অশান্তি ও হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আবার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে রান্নাঘর না থাকলে হজমশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। ফলে শরীর মেদ জমতে শুরু করে।
তাই নিজের চেহারাকে সুস্থ সবল রাখতে হলে বাস্তুমতে –
১। উত্তর-পূর্ব কোণ পরিষ্কার ও হালকা আসবাব রাখুন।
২। খেয়াল রাখবেন রান্নাঘর যেন দক্ষিণ-পূর্বে হয় ও সবসময় পরিষ্কার থাকে।
৩। বাড়ির দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ভারী ও স্থায়ী জিনিস রাখুন। এতে জীবনে ভারসাম্য বজায় থাকবে। বাড়িতে প্রাকৃতিক আলো ও হাওয়া চলাচলের সুযোগ রাখুন।