শাস্ত্র মতে প্রতি বছর ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে শুরু হয় পিতৃপক্ষ। আর আশ্বিন মাসের অমাবস্যা তিথিতে শেষ হয় এই পক্ষকাল। এই পিতৃপক্ষ জুড়ে প্রত্যেক দিন পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করা হয়। পিতৃপক্ষের শেষ দিনটি হল মহালয়া তথা আশ্বিনের অমাবস্যা। এক পক্ষকাল ধরে জুড়ে তর্পণ করা সম্ভব না হলে, পিতৃপক্ষের শেষ দিন তথা মহালয়ার দিনটিতে তর্পণ করার প্রচলন রয়েছে।
এই বছর ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে পিতৃপক্ষ। শেষ হবে আগামী ২ অক্টোবর। মনে করা হয়, এই সময় পিতৃলোক ছেড়ে দুর্গাপুজো উপলক্ষে ইহলোকে এসে বসবাস করেন পিতৃপুরুষেরা। আবার ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, পিতৃপক্ষে কারও শ্রাদ্ধ হলে খাবারের কিছু অংশ পশু-পাখির জন্য আলাদা করে রাখা হয়। না হলে শ্রাদ্ধ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। শাস্ত্র মতে এই প্রক্রিয়াকে পঞ্চবলি বলা হয়। এই সময় চার প্রাণী বাড়িতে এলেও তা শুভ বলে মনে করা হয়। তাই তাঁদের কখনও তাড়াতে নেই। জানেন কোন চার প্রাণী আসা শুভ?
১) কাক – জ্য়োতিষশাস্ত্র মতে কাক হল বায়ুর প্রতীক। পিতৃপক্ষে কাককে খাবার খাওয়ানোর গুরুত্ব রয়েছে। এই এক পক্ষকাল সময় খাবারের একটি অংশ কাকের জন্য রাখতে হয়। কাক যদি পূর্বপুরুষদের নিবেদন করা খাবার খায়, তাহলে সেই খাবার পূর্বপুরুষদের দ্বারা গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। পূর্বপুরুষরা সন্তুষ্ট ও খুশি হলে পরিবারের উপর আশীর্বাদ বর্ষণ করেন।
২) কালো গরু – গরুকে পৃথিবীর উপাদানের প্রতীক বলে মনে করা হয়। সনাতন ধর্ম অনুসারে গরু পবিত্র জীব। পিতৃপক্ষের সময় নিবেদন করা খাবারের একটি অংশ কালো রঙের গরুর জন্য রেখে দিন। সেই খাবার যদি প্রতিদিন গরুকে খাওয়ানো যায়, তাহলে প্রীত হন পূর্বপুরুষরা। শুধু তাই নয়, গৃহে উন্নতি, সমৃদ্ধি ও সম্পদ লাভের আশীর্বাদ করে থাকেন।
৩) কালো রঙের কুকুর – পিতৃপক্ষে কুকুরকেও শ্রাদ্ধের খাবার নিবেদন করা হয়। কুকুরকে জলের প্রতীক বলে মনে করা হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, এই সময় শ্রাদ্ধ হলে খাবারের একটি অংশ কুকুরকে খাওয়ানো হলে পূর্বপুরুষদের আত্মা তৃপ্ত হয়।
৪) হিন্দু দেবতা – পিতৃপক্ষের সময় দেবতাদের অন্ন প্রদানেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। অনেকেই রয়েছেন যাঁরা রোজকার খাবার খাওয়ার সময় খাবারের একটু অংশ দেবতা ও পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে রেখে দেন। কথিত দেবতারা হলেন আকাশের প্রতীক। পিতৃপক্ষের সময় প্রস্তুত করা খাবারের একটি অংশ দেবতাদের জন্য রেখে দেওয়ার রেয়াজ রয়েছে। এতে করে পূর্বপুরুষরা সন্তুষ্ট হন।