একটি ব্যবসা শুরু করার সময়, আমরা অনেক কিছুর যত্ন নিই কিন্তু দোকানে দোকানদারের প্রবেশ এবং তার বসার দিক নির্দেশনা উপেক্ষা করি। লাভজনক ব্যবসা চালানোর সময় এই জিনিসগুলি বিশেষ গুরুত্ব রাখে। আপনি যখন আপনার দোকান খুলবেন, আপনার জুতা বা চপ্পলগুলি প্রধান দরজার বাইরের দিকে একটু খুলে নিন এবং প্রবেশ করার সময় প্রথমে মেঝে স্পর্শ করুন এবং তারপরে আপনার ডান পা দোকানে রাখুন। এতে আপনার ব্যবসায় লাভ হয় আপনার মনও খুশি থাকে। এছাড়া দোকানদারের বসার দিকও ব্যবসায় প্রভাব ফেলে।
বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে দোকানদারের উত্তর দিকে মুখ করে বসতে হবে। উত্তর দিককে সম্পদের দেবতা কুবেরের দিক বলে মনে করা হয়। তাই এই দিকে মুখ করে বসে থাকলে কুবেরের কৃপা আপনার উপর থাকে এবং অর্থের অভাব হয় না।
যে কোনও ব্যবসা, তা সে একটি ভাড়ার দোকানঘর হোক অথবা একটি বা একাধিক দোকানঘর তৈরি করাই হোক বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা বাণিজ্যিক আবাসন গড়া হোক না কেন, সমৃদ্ধি, মুনাফা ও উন্নতির জন্য বাস’শাস্ত্রের সিদ্ধান্ত ও নিয়ম মেনে চলতে হবে।চললে সুফল পাওয়া যাবে।
ভাড়া করা দোকান :
-দোকান ঘরটির মুখ অর্থাৎ প্রধান প্রবেশদ্বার কোন দিকে, এটা দেখতে হবে।যদি উত্তর বা পূর্ব দিকে মুখ হয়, তা হলে সেই দোকান পশ্চিম বা দক্ষিণের চেয়ে ভাল হবে।
-দোকানঘরটি যদি উত্তর-পূর্বদিকে বেড়ে থাকে, তা হলে এ ধরনের দোকান থেকে অনেক বেশি মুনাফা ও সমৃদ্ধি পাওয়া যাবে।
-দোকান যদি দুই রাস্তার সংযোগস্থলে হয়, পূর্ব ও উত্তর দিকে রাস্তা থাকে, তা হলে ভাল।
-যদি বেখাপ্পা আকারের দোকানঘর হয় তা হলে কিছুতেই ওই দোকান নেওয়া উচিত নয়।ত্রিকোণ ও সিংহ আকারের দোকান সাধারণ মানের।
-দোকানঘরের সামনে অথব ঢোকার মুখে যেন কোনও রকমের বাধা, যেমন টেলিফোন বক্স, ইলেকট্রিক বক্স, ল্যাম্পপোস্ট, বড় গাছ ইত্যাদি না থাকে।প্রধান প্রবেশপথের ঠিক উলটো দিকে এইসব থাকলে তা দ্বারভেদ সৃষ্টি করে।
নিজের দোকান :
যদি নিজের দোকান হয় বা দোকানটি কিনে নেওয়া সম্ভব হয়, তা হলে সে ক্ষেত্রে নীচে দেওয়া নিয়মগুলি বিবেচনা করতে হবে, তাতে ফল ভাল হবে।
-প্রথমেই দেখে নিতে হবে দোকানঘরটির আকার কেমন।চৌকো বা আয়তাকার হলে ভাল।বেখাপ্পা আকারের দোকান শুরু করার আগে সেটিকে সংশোধন করে নিতে হবে।যদি বাস’শাস্ত্র অনুসরণ করে তা সংশোধন করা সম্ভব না হয় তা হলে সেই দোকান নেওয়া উচিত।
-আগেই বলা হয়েছে, পূর্ব ও উত্তর দিকে রাস্তাযুক্ত দোকান ভাল।যদি পশ্চিম, দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক খোলা থাকে তা হলেও দোকানঘরটি ভালই হবে।
-উত্তর-পূর্ব দিক যদি সামান্য এগিয়ে থাকে তা হলে দোকান বিশেষ ভাল।
-দোকানঘরের দরজা উত্তর বা পূর্ব দিকে খোলা থাকবে।যদি সম্ভব হয় দক্ষিণ খোলা দোকান না নেওয়াই উচিত।
-দক্ষিণ বা পশ্চিম দিকে শো-কেস রাখতে হবে।উত্তর-পূর্ব দিকে শো কেস বসানো চলবে না।
-দক্ষিণ-পশ্চিম, দক্ষিণ বা পশ্চিম দিকে দোকানের মালপত্র জড়ো করে রাখতে হবে।
-দোকানের মালপত্র দোকানের দক্ষিণ-পশ্চিম, পশ্চিম অথবা দক্ষিণ দিকের তাকে রাখতে হবে।
-দোকানের মধ্যেই যদি চিলেকোঠা, চিলেঘর বা মেজেনাইন ফ্লোর তৈরি করতে হয় তা হলে সেটি করতে হবে শুধু দক্ষিণ এবং পশ্চিম দিকে।পূর্ব বা উত্তর দিকে যেন কিছুতেই না করা হয়।
-দোকানের মধ্যে নামাজের জায়গা, পবিত্র আয়াত বা চিহ্ন উত্তর-পূর্ব কোণে রাখতে হবে।স্থানটি সব রকমের বাধামুক্ত ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে। এখানে কোনও রকমের মালপত্র রাখা চলবে না। জায়গার অভাবে প্রয়োজনে ছোট শো-কেসে পবিত্র চিহ্ন রাখা যাবে।
-মালিক বা ম্যানেজার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বসবেন, মুখ থাকবে উত্তর বা পূর্ব দিকে।
-অন্যান্য কর্মচারীর বসার জায়গা এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে কাজ করার সময় তাদের মুখ থাকে উত্তর বা পূর্ব দিকে।
-টাকা-পয়সা, পাশবই, অ্যাকাউন্টস বই ইত্যাদির আলামরি এমনভাবে রাখাতে হবে যাতে তা খোলার সময় মুখ থাকে উত্তর অথবা পূর্ব দিকে।
-দোকানে জলের ব্যবস্থা যেন উত্তর-পূর্ব বা পূর্ব দিকে থাকে।
আরও পড়ুন: Change Your Luck: এই ৪ জিনিস বাড়িতে থাকলে বদলে যেতে পারে ভাগ্য! দূর হবে আর্থিক সমস্যাও