
আজ মহাসপ্তমী। চৈত্র নবরাত্রির সপ্তম দিন। সপ্তমী তিথিতে মা দুর্গার সপ্তম শক্তির পুজো করা হয়। আর তারপরেই রয়েছে অষ্টমী এবং নবমী। এরপরেই শেষ হয়ে যাবে বাসন্তী পুজো। অষ্টমী তিথিতে মহাগৌরী এবং নবমী তিথিতে মা সিদ্ধিদাত্রীর পুজো করা হয়। মা দুর্গার এই তিনটি শক্তি সকল দুঃখ দূর করে সুখ ও সমৃদ্ধি প্রদান করে। তার উপর এ বছর বাসন্তী পুজোর এই তিথিতে খুব শুভ যোগও তৈরি হচ্ছে। সপ্তমী তিথিতে রাজ যোগ, অষ্টমী তিথিতে রবি যোগ এবং নবরাত্রির শেষ দিনে গুরু পুষ্য যোগের পাশাপাশি অমৃত সিদ্ধি যোগের সুফলও পাওয়া যাবে। ৭০০ বছরের পর এই যোগ তৈরি হচ্ছে। এই শুভ যোগের সঙ্গে সঙ্গে নবরাত্রির তিনটি তিথির গুরুত্বও বেড়েছে। এই শুভ যোগে কিছু উপায় মেনে চললে আপনার জীবনের সকল দুঃখ, কষ্ট দূর হয়ে যাবে। মায়ের আশীর্বাদ সবসময় আপনার উপর বজায় থাকবে।
এই প্রতিকারে অর্থ ও শস্যের কোনওদিন অভাব হবে না-
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, মা দুর্গাকে তিন দিন ধরে নতুন পান পাতায় সেদ্ধ কালো ছোলা, গুড়, সুপারি, তুলো এবং টাকা নিবেদন করা। পূর্ণ ভক্তি সহকারে মা দুর্গাকে এই পাঁচটি জিনিস নিবেদন করুন এবং একটি মন্ত্রটি জপ করুন। এতে মা দুর্গা খুব খুশি হন এবং ঘরে অর্থ ও শস্যের অভাব হবে না। এই জিনিসগুলি খুব সস্তা এবং সহজেই পাওয়া যাবে। মন্ত্রটি হল- ওম জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী। দুর্গা ক্ষমা শিবাধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোস্তুতে।।
এই প্রতিকারে মায়ের আশীর্বাদ পাওয়া যাবে-
মাকে খুশি করতে সন্ধিপুজো করুন। সপ্তমী তিথির শেষে এবং অষ্টমী তিথির শুরুতে, আপনি মা দুর্গার সন্ধি আরতি করতে পারেন। সন্ধিপুজো ছাড়াও মা দুর্গার আরতি সকালে, বিকেলে, সন্ধ্যায় এবং রাতেও করা হয়। আরতির আগে মাকে পাঁচটি শুকনো ফল এবং লাল চুনরি নিবেদন করুন। আপনি তিন দিনে এটি করতে পারেন। এতে করে আপনি মা দুর্গার আশীর্বাদ পাবেন এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে।
সমস্যা সমাধানের উপায়-
তন্ত্রশাস্ত্রে, দেবীর ৩২টি নাম জপ করা অত্যন্ত শুভ এবং উপকারী বলে মনে করা হয়। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর রাতে মায়ের নাম ১০৮ বার জপ করুন। এতে মা দুর্গার কৃপা বজায় থাকে এবং যত ঝামেলাই চলুক না কেন তা থেকে মুক্তি পাবেন।
গ্রহের শুভ প্রভাব-
গ্রহের অশুভ প্রভাব দূর করতে এই তিনটি তিথি খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। আপনি সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী তিথির সন্ধ্যায় দুর্গা চালিসা, অর্গলা স্তোত্র, কীলক স্তোত্র এবং দুর্গা সপ্তশতী পাঠ করতে পারেন। পাঠ শেষে যজ্ঞ করুন। যজ্ঞে জায়ফল, লবঙ্গ, এলাচ, কালো তিল, কালো মরিচ, মধু, পদ্মগাট্টা, সুপারি, ঘি, গুগুল উৎসর্গ করুন। এং হৃীং ক্লীং চামুণ্ডায়ৈ বিচ্চে—এই মন্ত্রটি আপনি ১০৮ বার জপ করুন। এতে রাহু-কেতু বা শনির মতো গ্রহের অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়-
সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী তিথিতে অনেকেই উপোস রাখেন এবং শেষ দিনে কুমারী পুজো করে যজ্ঞ করা হয়। সবসময় ঈশান কোণে যজ্ঞ করবেন এবং তিন দিনেই শাস্ত্রীয় উপায়ে মা দুর্গার পুজো করুন। এতে সকল রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।