
ভারতীয় শাস্ত্র অনুযায়ী সবকিছু নিয়েই উল্লেখ রয়েছে। সময়, কাল, বর্ণ, ধর্ম থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজ নিয়েও উল্লেখ রয়েছে। তাই যে কাজই করতে চান না কেন, সবেতেই রয়েছে কোনও না কোনও কিছু কারণ। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, শুভ কাজ কিছু করতে হলে একটি নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন। কোনও কাজ সম্পন্ন করতে ও সফলতা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রন ও উন্নত পরিকল্পনাও দরকার পড়ে। তবে কঠোর পরিশ্রমের পরেও কাঙ্খিত ফল পাওয়া যায় না। তাই নির্দিষ্ট সময়ে শুভ কাজ সম্পন্ন কাজ করা উচিত।
একটু ভালো করে দেখলে বুঝবেন, আগেকার দিন ঋষি-মুনিরা ভোরবেলা অর্থাত্ সূর্যোদয়ের ঠিক আগে উঠে পড়তেন। শুধু ঋষিরাই নয়, গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশই কাকভোরে উঠে নিজের কাজ সম্পন্ন করেন। ভোরবেলা ওঠার উপকারিতা যেমন রয়েছে, তেমনি ধর্মীয় দিক থেকে গুরুত্বও রয়েছে। শাস্ত্র অনুসারে, ব্রহ্ম মুহূর্ত হল গোটা দিনের সর্বশ্রেষ্ঠ ও মোক্ষম সময়। এই সময় ঘুম থেকে বিছানা ছাড়া দরকার। কাজের মাধ্য়মে ভাগ্য পরিবর্তন করতে ও সাফল্য অর্জন করতে ব্রহ্ম মুহূ্র্তে মাত্র ২টি কাজ করাই যথেষ্ট। সনাতন ধর্মে ব্রহ্ম মুহূর্তকে অত্যন্ত বিশেষ বলে মনে করা হয়। এই সময়ে ঘুম থেকে উঠে যে কোনও কাজ করা খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। জীবনে সুখ-শান্তি-ধনসম্পত্তি, উন্নতি, সাফল্য যদি একসঙ্গে পেতে চান, তাহলে ব্রহ্ম মুহুর্তে ঘুম থেকে উঠে এই ২টি কাজ করুন।
ব্রহ্ম মুহুর্ত কখন তৈরি হয়
হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্রে ব্রাহ্ম মুহুর্তাকে অত্যন্ত বিশেষ এবং শুভ। কথিত আছে এই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার পর করা প্রতিটি কাজই সফল হতে সাহায্য করে। ধর্মীয় গ্রন্থ অনুসারে, ব্রাহ্ম মুহুর্তের সময় ভোর ৪টে থেকে ৫টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ধরা হয়। ব্রহ্ম মুহুর্তে ওঠার উপর দেবী লক্ষ্মীর কৃপা সবসময় বজায় থাকে। এছাড়া ভাগ্যের সব দরজা এক এক করে খুলে যেতে শুরু করে।
ব্রহ্ম মুহুর্তে ঘুম থেকে উঠে ২ ব্যবস্থা করুন
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, যে ব্যক্তি ব্রহ্ম মুহুর্তে বিছানা ছেড়ে জেগে ওঠেন তিনি সর্বদা সবক্ষেত্রেই সফল হন। এই সময়ে করণীয় প্রথম প্রতিকার হল একটি অলৌকিক মন্ত্র জপ করা। ব্রহ্ম মুহুর্তে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে স্নান সেরে আসনে বসুন। এরপর চোখ বন্ধ করে এই মন্ত্রটি জপ করুন। এই মন্ত্র নিয়মিত জপলে সমস্ত দেব-দেবী সন্তুষ্ট হোন ও আশীর্বাদ করেন।
দ্বিতীয় প্রতিকার
জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে ব্রহ্ম মুহুর্তে উঠে আরও একটি সঠিক প্রতিকার অবলম্বন করা উচিত। এর জন্য ব্রহ্ম মুহুর্তে উঠে উভয় হাতের তালুর দিকে তাকিয়ে এই মন্ত্রটি জপ করুন।
মন্ত্র
“ওম কারাগ্রে বাসতে লক্ষ্মী কর্মাধ্যায়ে সরস্বতী করমুল্যেঃ তু গোবিন্দ প্রভাতে কর দর্শনম”।
বিশ্বাস করা হয়, উভয় হাতের তালুতে দেবতা ও গ্রহের বাস। ব্রহ্ম মুহুর্তে দেবতা ও গ্রহ একসঙ্গে দেখা অত্যন্ত শুভ ও কল্যাণকর বলে মনে করা হয়। এই কারণেই শাস্ত্র অনুযায়ী দীর্ঘক্ষণ ঘুমনো নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হয়েছে।