
বাস্তুশাস্ত্রে আয়নাকে শুধু সাজসজ্জার উপকরণ হিসেবে দেখা হয় না, বরং এটি ঘরের শক্তি প্রবাহের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। আয়না আলো প্রতিফলিত করে, ফলে ইতিবাচক শক্তি দ্বিগুণ হয়। আবার ভুল জায়গায় আয়না বসালে তাই দ্বিগুণ গতিতে অশুভ শক্তিকে টেনে আনে। তাই বাস্তু শাস্ত্র মেনেই জানুন বাড়িতে আয়না বসানোর সঠিক স্থান।
কোথায় আয়না রাখা ভাল?
উত্তর বা পূর্ব দিক – বাস্তু মতে, আয়না উত্তর বা পূর্ব দেয়ালে বসানো অত্যন্ত শুভ। এতে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে ঘরে আলো ও ইতিবাচক শক্তি প্রবাহিত হয়।
লিভিং রুম – লিভিং রুমে আয়না রাখলে ঘরের শোভা যেমন বাড়ে, তেমনি শক্তিরও বৃদ্ধি হয়। তবে আয়না এমনভাবে বসাতে হবে যাতে এটি ঘরে প্রবেশ করা প্রাকৃতিক আলো প্রতিফলিত করে ভেতরে ছড়িয়ে দিতে পারে।
ডাইনিং রুম – ডাইনিং টেবিলের পাশে আয়না রাখলে টেবিলে সাজানো খাবারের প্রতিফলন হয়, যা সমৃদ্ধি ও প্রাচুর্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।
করিডর বা ছোট জায়গা – যদি কোনও ঘর বা করিডর ছোট হয়, সেখানে আয়না রাখলে ঘর বড় ও খোলামেলা মনে হয়। এতে মানসিক ইতিবাচকতা বাড়ে।
কোথায় আয়না রাখা উচিত নয়?
শোবার ঘরে বিছানার সামনে – আয়না যদি বিছানার ঠিক সামনে থাকে, তবে ঘুমের সময় শরীরের প্রতিফলন দেখা যায়। বাস্তু মতে এটি অশান্তি, মানসিক চাপ ও দাম্পত্য জীবনে সমস্যা ডেকে আনে। তাই শোবার ঘরে আয়না থাকলে তা বিছানার বিপরীতে যেন না হয়।
রান্নাঘর – রান্নাঘরে আয়না রাখা শুভ নয়। বিশেষ করে চুলার আগুন আয়নায় প্রতিফলিত হলে বাস্তু দোষ সৃষ্টি হয়, যা পরিবারের মধ্যে অশান্তি ও অর্থক্ষতি ঘটাতে পারে।
দক্ষিণ বা পশ্চিম দিক – আয়না দক্ষিণ বা পশ্চিম দিকে বসালে তা নেতিবাচক শক্তি টেনে আনে। ফলে পরিবারে কলহ বা মানসিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
প্রধান দরজার ঠিক সামনে – আয়না যদি প্রবেশদ্বারের সামনে রাখা হয়, তবে ইতিবাচক শক্তি ঘরে প্রবেশ না করে ফিরে যায়। ফলে সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়।
মনে রাখবেন, বাস্তু শাস্ত্র মতে আয়না সবসময় পরিষ্কার রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। দাগযুক্ত বা ভাঙা আয়না ঘরে অশুভ শক্তি বাড়ায়। আয়না খুব বড় আকারের হলে সেটি এমন জায়গায় বসান যেখানে আলো প্রবেশ করে প্রতিফলিত হতে পারে। রাতে আয়নার সামনে আলো জ্বালানো শুভ বলে মনে করা হয়। শোবার ঘরে ড্রেসিং টেবিলে আয়না থাকলে রাতে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা ভালো।