বৈশাখ শেষ, শুরু হয়েছে জ্যৈষ্ঠ মাস (Jyeshta Month)। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী তৃতীয় মাস জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষ চলছে এই মুহূর্তে। বাংলা ক্যালেন্ডার(Bengali Calender) অনুযায়ী, জ্যৈষ্ঠ মাস শুরু হয়েছে গত ১৬ মে থেকে। হিন্দু ধর্ম (Hinduism) অনুযায়ী, এই মাসটিকে মধুমাসও বলা হয়। গোটা মাস জুড়ে সূর্যের তেজ বেড়েছে অনেকটাই। মেষ রাশিতে সূর্যের প্রবেশের কারণে সূর্যের তেজের প্রকোপ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ফলে তপ্ত গরমে এখন নাজেহাল অবস্থা সাধারণের। আগামী ৯দিন আরও উত্তপ্ত থাকবে ধরিত্রী। কারণ ২৫ মে পর্যন্ত চলবে একটি বিশেষ যোগ। এই পরিস্থিতিতে উপবাস ও দান করাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। জ্যৈষ্ঠের দ্বিতীয় দিন থেকে টানা ১৫দিন যদি জল দান করা হয়, তার আলাদা একটি তাত্পর্য রয়েছে। জ্যৈষ্ঠ শুক্লপক্ষে জলদান করা এত গুরুত্বপূর্ণ কেন, তা জেনে নেওয়া প্রয়োজন। রয়েছে অনেক উপকারিতা।
জলদানের তাৎপর্য
শাস্ত্রে জ্যৈষ্ঠ মাসেই জল সংরক্ষণের বিশেষ গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই মাসে তাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। সূর্যের শক্তিশালী রূপ দেখা যায় এই মাসেই। প্রখর রোদের তাপে শুকিয়ে যায় বহু জলাশয়। দেখা যায় জলসংকটও। এই কারণেই যিনি জ্যৈষ্ঠ মাসে জল দান করেন, জলের অপচয় করেন না, তিনি দেবী লক্ষ্মী ও বিষ্ণুর আশীর্বাদ পেয়ে থাকেন। দেবদেবীর আশীর্বাদে অন্ন ও অর্থের কখনও ঘাটতি পড়ে না। জ্যৈষ্ঠ শুক্লপক্ষের বরুণ দেবের পুজোর জন্য গঙ্গা দশেরা ও নির্জলা একাদশীর উপবাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জ্যৈষ্ঠ মাসে জলদান ও উপবাস করলে কী কী উপকার পাবেন?
জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষে অর্থাৎ ১৫ দিনে বাড়ি চত্বরে পশু-পাখিদের পানীয় জলের ব্যবস্থা করলে আখেরে লাভবান হবেন আপনিই। এই কাজ করলে থাকলে পরিবেশে যেমন উন্নতি ঘটে তেমনি কর্মজীবনেও প্রভূত উন্নতি ও প্রশংসা পেয়ে থাকেন। কেটে যায় বাধাবিঘ্নও।
জল দান করার সর্বোত্তম উপায় রয়েছে। প্রচন্ড গরমে পথচারীদের জল পরিবেশন করা ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা গুরুত্বপূর্ণ। শাস্ত্র মতে, যে ব্যক্তিরা জ্যৈষ্ঠ মাসে মানুষের জলসেবায় নিজেকে উৎসর্গ করে দেন, তাঁদের কখনও অর্থকষ্ট ভোগ করতে হয় না। এমনকি ধনলক্ষ্মীর অপার কৃপা বজায় থাকে। দেবী লক্ষ্মী তাঁর প্রতি সদয় খুশি হোন। পূর্বপুরুষদের আত্মা শান্তি পায় ও পিতৃদোষ দূর হয় নিমেষে।
এই ১৫ দিনে গাছপালায় জল সেচ করতে পারেন। প্রচণ্ড গরম থেকে তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করুন। কথিত আছে যে এই প্রতিকারে সৌভাগ্য বৃদ্ধি পায়। গ্রীষ্মের প্রখর তাপে গাছেদের অবস্থাও শোচনীয় হয়ে পড়ে। জলের অভাবে শুকিয়ে যাওয়া আটকাতে রোজ গাছে জল দিন। এমন কাজ করলে গাছও আপনাকে অনেক ফল দিয়ে উপকার করবে। গাছে যত ফুল ও ফল ফলবে, ততসৌভাগ্য বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হয়। কোনও বাধা ছাড়াই সব কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন আপনি। বিশেষ করে অশ্বত্থ, ধান তুলসী গাছে জল দিলে দ্বিগুণ উপকার পেতে পারেন আপনি।