যখন গণেশ চতুর্থীর প্রসঙ্গ আসে তখন কোনওভাবেই মোদককে বাদ দেওয়া যায় না। যদিও হিন্দু ধর্মে দেব-দেবীকে প্রসাদ নিবেদনের প্রথা রয়েছে। কিন্তু বিঘ্নহর্তার পুজো মোদক ছাড়া অসম্পূর্ণ। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ভাদ্রমাসে শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে গণেশের আরাধনা করা হয়। এ বছর ৩১শে অগস্ট বুধবার দেশজুড়ে ধুমধাম করে পালিত হবে গণেশ চতুর্থী।
মূলত প্রায় ১০দিন ধরে চলে গণেশ উত্সব। তবে অনেকেই এক দিন, তিন দিন, সাত দিন ধরে পুজো করে থাকেন। কথিত আছে যে গণেশ চতুর্থীর দিন গণেশের আরাধনা করলে বিঘ্নহর্তার ভক্তের জীবন থেকে সমস্ত দুঃখ কষ্ট দূর করে দেন। আর গণেশের আরাধনা মোদক ছাড়া কখনওই সম্পূর্ণ হয় না। হিন্দু পৌরাণিত কাহিনি অনুসারে, গণেশ মোদক খেতে ভালবাসেন। তবে, গণেশকে মোদক ছাড়াও বোঁদের লাড্ডু, বেসনের লাড্ডুও নিবেদন করা যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন ২১টা মোদক ছাড়া গনেশের পুজো সম্পন্ন হয় না?
হিন্দু পৌরাণিত কাহিনি অনুসারে, গণেশের পুজোর সময় প্রসাদ হিসেবে ২১টি মোদক নৈবেদ্য দেওয়ার রীতি রয়েছে। কিন্তু এমন নিয়ম কেন রয়েছে, জানেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক…
পৌরানিক কাহিনি অনুযায়ী, একবার ভগবান শিব দেবী পার্বতী এবং ভগবান গণেশের সঙ্গে বনে তাঁর বাড়িতে অনুসূয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের সফরে, অনুসূয়া প্রথমে ভগবান গণেশকে খাবার পরিবেশন করেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে গণেশের খিদে মিটে গেলেই তিনি ভগবান শিবের সেবা করবেন। কিন্তু কিছুতেই গণেশের খিদে নিবৃত্তি হয় না। তাই অনুসূয়া তাঁকে এক টুকরো মিষ্টি খাবার পরিবেশন করেছিলেন। সেই মিষ্টি ছিল মোদক। সুস্বাদু মোদক খেয়ে গণেশের মন ও পেট দুই-ই ভরে গিয়েছিল। হাবেভাবে ভগবান গণেশ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি প্রসন্ন হয়েছেন। গণেশকে শান্ত করতে শিব ২১ বার ঢেকুর দিয়েছিলেন।
শাস্ত্র অনুসারে, ভগবান শিব ২১ বার ঢেকুর দিয়েছিলেন সেটা দেবী পার্বতী জানতে পারেন। দেবী পার্বতী জানতে পেরেছিলেন যে এই মোদক যা তাঁদের উভয়কেই তৃপ্ত করেছে, তখনই তিনি একটি ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর সেই ইচ্ছা ছিল যে গণপতির ভক্তরা সর্বদা তাঁকে ২১টি মোদক নিবেদন করবেন। তারপর থেকে, গণেশের পুজোয় সব সময় ২১টি মোদক দেওয়া হয়।