
সামনেই গণেশ চতুর্থী। বাংলায় জনপ্রিয়তা না থাকলেও বেশ কয়েকবছর ধরেই গণেশ পুজো নিয়ে বেশ উন্মাদনা দেখা গিয়েছে। মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণপতি বাপ্পার জন্মতিথি উপলক্ষ্যে ধুমধাম করে পালন করা হয়ে থাকে। হিন্দুধর্ম মতে, গজানন হলেন বুদ্ধি এবং জ্ঞানের দেবতা। ভক্তিভরে সিদ্ধিদাতাকে পুজো করা হলে খুব তুষ্ট গণেশঠাকুর। ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে আশীর্বাদ বর্ষণ করেন পার্বতী-পুত্র। শিবের মতোই অল্প নৈবেদ্যেই সন্তুষ্ট গণেশ। তবে গণেশ বন্দনা করার সময় যদি ভুলেও বেশ কিছু সহজ কাজ করা হয়, তাহলে ক্রুদ্ধ হন তিনি। পাওয়া যায় না পুজোর ফলও। অন্যদিকে, গণেশের বাহন ইঁদুর হল আদিম কোনও সংস্কারের প্রতীক। পৌরাণিক হিন্দুধর্মে সর্বাগ্রে পূজ্য ও সেই কারণে অন্যতম প্রধান দেবতা হলেন গণপতি। তাই গণেশের পুজো করা হলে যে যে কথা মাথায় রাখা আবশ্যিক, তা জেনে নিন এখানে…
তুলসী পাতা
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, দেবাদিদেব মহাদেবের পাশাপাশি পার্বতী-পুত্র গণেশের পুজোতেও তুলসী পাতা ব্যবহার করা হয় না। কথিত আছে, একবার ভগবান গণেশ তুলসীকে অভিশাপ দিয়েছিলেন যে তাঁর পুজোয় যেন কোনওভাবেই তুলসী পাতা ব্যবহার করা না হয়। তাই মাথায় রাখবেন গণেশের পুজোয় ভুল করেও তুলসী পাতা ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। ভগবানের পুজোয় দূর্বা ঘাস ব্যবহার করা শুভ।
চন্দ্র
গণেশ ও চন্দ্র দেবতার সম্পর্ক একেবারেই ভালো নয়। কথিত আছে যে একবার চন্দ্রদেব গণেশের গজরূপকে উপহাস করেছিলেন। সেই কারণে গণেশ ওই সময় চন্দ্রদেবকে অভিশাপ দিয়েছিলেন যে তাঁর সৌন্দর্যে কলঙ্ক দেখা যাবে। তাই গণেশের পুজোয় কখনও রুপোর বাসনপত্র, সাদা জিনিস ব্যবহার করা উচিত নয়। সাদা চন্দনের পরিবর্তে হলুদ চন্দন, সাদা কাপড়ের পরিবর্তে হলুদ কাপড় ও হলুদ পবিত্র সুতো ব্যবহার করুন। তাই প্রতি চতুর্থী তিথিতে চন্দ্র দেখা শাস্ত্রে নিষিদ্ধ।
জলমিশ্রিত অন্ন
সনাতন ধর্ম মতে, ধানকে অক্ষত বলা হয়। এর অর্থ হল ধান কখনও ক্ষয় হয় না, অক্ষতই থাকে। ভগবান গণেশের পুজোয় ভুল করেও ভাঙা চাল নিবেদন করবেন না। পরিবর্তে, আস্ত চাল ব্যবহার করুন। তবে সেই চালে যেন কোনও অংশে ফাটল বা ভাঙ্গা না থাকে। বিশ্বাস করা হয় যে গণেশের পুজোয় ভেজা চাল ব্যবহার করা হয়।
কেতকী ফুল
পিতা মহাদেবের মতো, গণেশের পুজোতেও কেতকী ফুল ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। ভগবান শিব কেতকী ফুলকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। তাই এই দেশি ফুল তাঁর পুত্র গণেশকেও দেওয়া হয় না।
বাসি ফুল
ভগবান গণেশের পুজোয় ভুল করেও বাসি বা শুকনো ফুল নিবেদন করবেন না। যদি পুজোর সময় তাজা ফুল কাছে না থাকে তাহলে সেগুলি কোনওভাবেই নিবেদন করবেন না। কেবল দূর্বা নিবেদন করতে পারেন। তবে ভুল করেও শুকনো বা শুকিয়ে যাওয়া ফুলও দেবেন না। তাতে ভগবান ক্রুদ্ধ হন ও বাস্তু দোষও হয়। ভুল করেও পুজোয় শুকনো ফুল নিবেদন করবেন না। তাতে বাড়িতে সুখ-শান্তি কমে যায়। নেগেটিভ শক্তিরো বৃদ্ধি ঘটে।