
হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হল দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উত্সব হোলি (Holi 2023)। তিথি অনুসারে এই দিনটির মাধ্যমে শেষ হয় বাংলার শেষ মাস। হোলি ভারতের বিভিন্ন অংশে বিভিন্নভাবে পালিত হয়। তবে হোলিকা দহনকে (Holika Dahan) কেন্দ্র করেই এই উত্সবের নাম হয়েছে হোলি। অশুভ শক্তিকে হারিয়ে জয় ও আনন্দকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এই রঙিন উত্সব। হোলিকা দহনের আট দিন আগের সময়টিকে বলা হয় হোলাষ্টক (Holashtak 2023)। এবার হোলাষ্টক ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ অর্থাত হোলিকা দহন পর্যন্ত থাকবে। এই সময় কোনও শুভ কাজ বা অনুষ্ঠান করা হয় না।
হোলিকা দহনের ঠিক আট দিন আগে থেকেই শুরু হয় হোলাষ্টক পর্ব। সাধারণত এই সময়টিকে হোলিকা দহনের প্রস্ততি পর্ব বলা চলে। এদিন শুভ সময় দেখে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় হোলিলাঠি স্থাপন করা হয়। তারপর হোলিকা দহনের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে সাজানো হয়ে থাকে। ঘুঁটে, লাঠি, কাঠি, শুকনো ডালপালা ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয়। হোলির আট দিন আগের সময়ে কোনও শুভ কাজ বা অনুষ্ঠান করা অশুভ বলে মনে করা হয়। তাই একে হোলাষ্টক নামে পরিচিত। ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পালিত হয় ও পূর্ণিমা পর্যন্ত চলতে থাকে। এই দিনগুলিতে অশুভ কোনও শক্তি এড়াতে ও সাফল্য অর্জনের জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করা শুভ। এছাড়া গ্রামবাংলার নিয়মে এই সময় আবহাওয়ার খামখেয়ালির জন্য এ সময় বিভিন্ন রোগভোগে আক্রান্ত হন মানুষজন। তাই স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এই দিনগুলিতে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা হয়।
কী কী করবেন না?
-হোলাষ্টকের সময় নতুন বাড়িতে গৃহপ্রবেশের পরিকল্পনা করবেন না।
– এই সময় বিয়ে, এনগেজেমেন্ট, মুণ্ডন, ভূমিপূজো, অন্নপ্রাসন ও অন্যান্য শুভ কাজের পরিকল্পনা করা উচিত নয়।
– অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া ছাড়া বাকি সমস্ত সামাজিক কাজ করা উচিত নয়।
– শিশুকে স্নান করানো, নতুন ব্যবসা শুরু করার মতো শুভ কাজ একেবারেই কাজ করা উচিত নয়।
– এদিনগুলিতে দূরে কোথাও অর্থাত বিদেশ যাত্রায় না যাওয়াই ভাল। নতুন জায়গা পড়াশোনা বা ভ্রমণের পক্ষে এই দিনগুলি একেবারেই শুভ দিন নয়।
– মিথ্যে কথা বলা, হিংসা করা, অত্যাচার করা, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা, নিরীহ পশুকে কষ্ট দেওয়া ইত্যাদি কাজ অশুভ বলে মনে করা হয়।
কী কী করবেন?
-এই সময় পুজাপাঠ, আচার অনুষ্ঠান ও মন্ত্রজপ করা শুভ।
– এই দিনগুলিতে ভগবান বিষ্ণুর উপাসনা করা, মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করা উপকারী বলে মনে করা হয়।
– এর ফলে সমস্ত ধরনের রোগ, দুঃখ, কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য থাকে ভালো।
– বৈদিক আচার, ষজ্ঞপাঠ করলে সমস্ত যন্ত্রণা, কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
– এই ৮ দিনে বিষ্ণুর ভক্ত প্রহ্লাদ ভক্তিভরে পুজো ও প্রার্থনাম করেছিলেন। তাতে মুগ্ধ হয়ে পরম ভক্তকে আশীর্বাদ ও বর দিয়েছিলেন। প্রহ্লাদের ভক্তির প্রতিদান প্রভুর কাছ থেকে সাহায্যও পেয়েছিলেন।