শীতকালের অন্যতম উৎসব এই পুজোর জন্য সারাবছর অপেক্ষা করে থাকে পড়ুয়ারা। প্রতিবছর মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে বন্দনা করা হয় দেবী সরস্বতীকে। এই সময় শীতের বিদায়বেলা এবং বসন্তের আগমনে যেন নবরূপে সেজে ওঠে প্রকৃতি। সেই কারণে দিনটিকে ‘বসন্ত পঞ্চমী’ নামেও ডাকা হয়ে থাকে। আর বসন্ত পঞ্চমী মানেই হলুদ শাড়ি আর হলুদ কুর্তা-পায়জামা সেজে ওঠার দিন।
এই দিনে ছোট থেকে প্রবীণ, প্রায় সকলেই হলুদ পোশাক পরতে পছন্দ করেনষ কিন্তু কেন এই হলুদ রঙের প্রতি আকর্ষণ, কেনই বা এই পুজোর সঙ্গে এই রঙের গুরুত্ব অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে, এমন প্রশ্ন কখনও মনে জাগেনি? এতে কিন্তু কোনও পৌরাণিক রীতি মেনে নয়, রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণও।
দেবী সরস্বতীর অপর নাম বাগদেবী। তিনি জ্ঞান, বিদ্যা, সঙ্গীত ও শিল্পকলার দেবী। হিন্দু পৌরাণিক মতে, বসন্ত পঞ্চমীর দিনেই গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি করেছিলেন ব্রহ্মা। আর এই পবিত্র দিনেই দেবী সরস্বতীর জন্মও হয়।শোনা যায়, মহামুনি ব্যাসদেবও নাকি দীর্ঘ তপস্যা শেষে একই দিনে দেবীর আরাধনা করেছিলেন। সেদিন থেকেই এই দিনে দেবীর বন্দনা করা হয়ে থাকে।
সরস্বতী পুজোর দিন হলুদ রঙের পোশাক পরার প্রথা চালু রয়েছে বহুদিন ধরেই। বসন্ত পঞ্চমীর সঙ্গে হলুদ রঙ যেন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে। আসলে হলুদ রঙ হল সমৃদ্ধি, আলো ও ইতিবাচক শক্তির প্রতীক। আর সরস্বতী পুজোর সময় শীত বিদায় নিয়ে বসন্তের সূচনা হয়। চারদিক যেন নবরূপে সেজে ওঠে। নিয়ে আসে আগামীর নতুন বার্তা। আমাদের জীবনে এক একটি রঙের বিশেষ প্রভাব রয়েছে। হলুদ রং আমাদের অন্তরাত্মাকে শান্ত ও নিয়ন্ত্রিত রাখে।
শাস্ত্র মতে শোনা যায়, দেবী সরস্বতীর বাসন্তী রঙ খুব পছন্দের। তাই বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুল ও মালা প্রয়োজন হয় এই পুজোয়। হলুদ রঙকে সুখ, আশা, জ্ঞান, সৃজনশীলতা ও রোদের প্রতীক। হলুদকে বসন্ত ও বন্ধুত্বের রং হিসেবেও ধরা হয়। হলুদ রং আশার রং হিসেবেও পরিচিত। একে জীবনের রং এবং শুভবুদ্ধির রং বলে মনে করা হয়। শীতকালের পর বসন্তের শুরুতে এই রং মনে নতুন আশার সঞ্চার ঘটায়। সুস্বাস্থ্যেরও প্রতীক হলুদ রং।
আরও পড়ুন: Saraswati Puja 2022: বিদ্যার দেবী সরস্বতীর জন্ম কীভাবে? পুরাণ মতে রয়েছে নানান কাহিনি