Janmashtami 2023: শ্রীকৃষ্ণের মাথায় শোভা পায় ময়ূরের পালক, রয়েছে ইতিহাস ও তাত্‍পর্য

TV9 Bangla Digital | Edited By: দীপ্তা দাস

Sep 07, 2023 | 3:36 PM

Mythology: জন্মাষ্টমীর দিন কৃষ্ণের শিশু মূর্তিতে পুজো করা হয়ে থাকে। সাধারণত হামাগুড়ি বা নৃত্যরত বা মাখন হাতে কৃষ্ণের শৈশব মূর্তি দেখা যায়। কিন্তু কৃষ্ণের মাথার মুকুটে কেন ময়ূরের পুচ্ছ শোভা পায়, তা অনেকেই জানেন না।

Janmashtami 2023: শ্রীকৃষ্ণের মাথায় শোভা পায় ময়ূরের পালক, রয়েছে ইতিহাস ও তাত্‍পর্য

Follow Us

মহাভারত, হরিবংশ-সহ বহু পুরাণে কৃষ্ণের জীবনীকাহিনি বর্ণিত রয়েছে। কৃষ্ণের পুজো হল বৈষ্ণব ধর্মের এক পবিত্র অঙ্গ। বৈষ্ণব ধর্মে শ্রীহরিকে পরমেশ্বর রূপে বন্দনা করা হয়। তাঁর প্রতিটি অবতার, গুরু ও সাধকদেরও গভীরভাবে শ্রদ্ধা করা হয়। শ্রীকৃষ্ণ হলেন বিষ্ণুর পূর্ণাবতার বলে মনে করা হয়। শ্রীকৃষ্ণের প্রতিটি রূপই ভক্তদের কাছে অতুলনীয়। কৃষ্ণের বিগ্রহ যদি ভালোভাবে দেখা হয়, তাহলে শ্রীকৃষ্ণের অধিকাংশ মূর্তির গায়ের রঙ কালো বা নীল বর্ণের। হাতে বাঁশি, মাথার মুকুটে একটি ময়ূরের পালক শোভা পায়। সাধারণত পরনে থাকে পরনে হলুদ বর্ণের ধুতি। জন্মাষ্টমীর দিন কৃষ্ণের শিশু মূর্তিতে পুজো করা হয়ে থাকে। সাধারণত হামাগুড়ি বা নৃত্যরত বা মাখন হাতে কৃষ্ণের শৈশব মূর্তি দেখা যায়। কিন্তু কৃষ্ণের মাথার মুকুটে কেন ময়ূরের পুচ্ছ শোভা পায়, তা অনেকেই জানেন না। এর পিছনে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি, গুরুত্ব ও তাত্‍পর্য।

পৌরাণিক কাহিনি

প্রতিদিনের মতো একদিন মনোরম পরিবেশে, জঙ্গলের মধ্যে, দুপুরবেলায় মনের আনন্দে বাল্যবন্ধুদের সঙ্গে গরুর দলকে চরাতে গিয়েছিলেন। সেইসময় সকলে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। কৃষ্ণ সকলের আগে ঘুম থেকে উঠে বাঁশি বাজাতে শুরু করেন। মনের খেয়ালে অপূর্ব সুরেলা বাঁশির সুরে গোটা জঙ্গলের পরিবেশ আরও মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠে। জঙ্গলের সব পশু ও পাখীরা মিষ্টি সুরের তালে তাল মিলিয়ে নাচতে শুরু করে। সেখানে উপস্থিত ছিল একদল ময়ূরও। বাঁশির সুরে মুগ্ধ হয়ে ময়ূরের দলের মধ্যে কয়েকটি ময়ূর বিভোর হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। যখন বাঁশির সুর বন্ধ হয়ে যায়, তখন শ্রীকৃষ্ণের কাছে গুরুদক্ষিণা হিসেবে পেখম ঝরিয়ে ফেলেন ময়ূররাজ। এই উপহার আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেন শ্রীকৃষ্ণ। একটি পেখম মাথার মুকুটে রেখে তিনি কথা দেন, চিরকাল এই পালক তাঁর মাথার মুকুটে শোভা পাবে। সেই স্থানে অন্য কোনও প্রাণীর পালক এই স্থান নিতে পারবে না। সেই থেকে কৃষ্ণের মুকুটে সবসময় শোভা পায় ময়ূরের পেখম।

ময়ূরের পেখমে সাতটি রঙ

ময়ূরের পালকের মধ্যে রয়েছে রঙের খেলা। প্রাথমিকভাবে ময়ূরের পালকে রয়েছে সাতরঙা ছটা। শ্রীকৃষ্ণের মাথায় মুকুট থাকা মানে জীবনের সব রঙ ধারণ করার প্রতীক। ধর্মমতে, সারা বিশ্বকে ধারণ করে রয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ। তাঁর অপার লীলা ও মহিমায় আচ্ছন্ন গোটা বিশ্ব। ঠিক যেমন ময়ূরের পালকের রঙের ছটা প্রক্যেক মানুষকেই স্নিদ্ধ করে তোলে।

আরও কাহিনি

পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, শ্রীরাম ও কার্তিকের সঙ্গেও শ্রীকৃষ্ণের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। শ্রীহরি হলেন দেবী পার্বতীর ভাই। তাই মহাদেবের হাতে বোনকে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন বিষ্ণু। অন্যদিকে, কার্তিকের মামা হলেন শ্রীকৃষ্ণ। আর কার্তিকের বাহন হল ময়ূর। কার্তিক হলেন যুদ্ধের দেবতা। প্রতিটি পদক্ষেপে যাতে কার্তিক সাফল্য পান, তার জন্য কৃষ্ণ মাথায় ময়ূরের পেখম ব্যবহার করেন। অন্যদিকে ক্রেতাযুগে শ্রীরামের আবির্ভাব হয়। একবার ভ্রমণের বের হলে শ্রীরামের চলার পথ পরিষ্কার করার জন্য ময়ূররাজ তাঁর পেখম দিয়ে পরিষ্কার করতে থাকে। এমন নিষ্ঠা ও শ্রদ্ধা দেখে মুগ্ধ হন শ্রীরাম। ময়ূরের প্রতি সম্মান জানাতে শ্রীকৃষ্ণ রূপে যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন মাথায় পালক রেখে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে থাকেন।

Next Article