
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকেই বারাণসীতে শিবভক্তদের ঢল নেমেছে। দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী বাবা বিশ্বনাথের দর্শনে হাজিরা দিতে ভিড় জমাচ্ছেন এই পুণ্যধামে। তবে উপচে পড়া ভিড় এবং নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল শ্রী কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ট্রাস্ট। আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ভক্তদের জন্য বাবা বিশ্বনাথের ‘স্পর্শ দর্শন’ পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সময় ভক্তরা শুধুমাত্র ‘ঝাঁকি দর্শন’-এর সুযোগ পাবেন।
কী এই স্পর্শ দর্শন? কেন এর এত গুরুত্ব?
কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে স্পর্শ দর্শনের একটি বিশেষ আধ্যাত্মিক মাহাত্ম্য রয়েছে। সাধারণ দর্শনে ভক্তরা দূর থেকে বিগ্রহ দেখেন, কিন্তু স্পর্শ দর্শনের ক্ষেত্রে পুণ্যার্থীরা গর্ভগৃহে প্রবেশের অনুমতি পান। তাঁরা সরাসরি জ্যোতির্লিঙ্গ স্পর্শ করতে পারেন, লিঙ্গের ওপর মাথা ঠেকিয়ে আশীর্বাদ নিতে পারেন এবং নিজে হাতে জল ও বেলপাতা অর্পণ করতে পারেন। শিবভক্তদের কাছে এটি অত্যন্ত আবেগপূর্ণ ও পবিত্র একটি মুহূর্ত। স্বাভাবিক সময়ে স্পর্শ দর্শনের জন্য নির্দিষ্ট সময় ধার্য থাকে, কিন্তু ভিড় আয়ত্তের বাইরে চলে গেলে মন্দির প্রশাসন তা বন্ধ করে দেয়।
এখন কীভাবে হবে দর্শন?
স্পর্শ দর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর এখন থেকে ভক্তরা কেবল ‘ঝাঁকি দর্শন’ করতে পারবেন। এর অর্থ হল, পুণ্যার্থীদের গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। মন্দিরের গর্ভগৃহের বাইরে চৌকাঠ থেকেই ভক্তদের বাবা বিশ্বনাথের দর্শন সেরে নিতে হবে। মন্দির প্রশাসনের মতে, এই ব্যবস্থার ফলে দর্শনার্থীদের লাইন দ্রুত এগোবে এবং অল্প সময়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ দর্শন করার সুযোগ পাবেন।
কেন এই কড়া পদক্ষেপ?
বড়দিনের ছুটি এবং নতুন বছরের উদযাপনের কারণে বর্তমানে কাশীতে প্রতিদিন প্রায় ২ থেকে ২.৫ লক্ষ ভক্তের সমাগম হচ্ছে। মন্দির প্রশাসনের অনুমান, আগামী ৩১ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারি এই ভিড় ৬ লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিশাল এই জনস্রোতকে সামাল দেওয়া এবং কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই এই ১০ দিনের জন্য ‘স্পর্শ দর্শন’ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৩ জানুয়ারির পর পরিস্থিতি বিবেচনা করে ফের আগের নিয়ম চালু হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।