
দেবী পলাশপ্রিয়া, শ্বেতশুভ্র বসন পরিহিতা। কোথাও তিনি দ্বিনেত্র, দুই বাহুভুজা বিশিষ্ট। কোথাও আবার তিনি চতুর্ভূজা, ত্রিনেত্র বিশিষ্ট। তিনি বিদ্যার দেবী জ্ঞানের আধার। তাই অঞ্জলি দিয়েই খুদেদের মায়ের কাছে প্রার্থনা, ‘মা তুমি বিদ্যে দাও, বুদ্ধি দাও, জ্ঞান দাও’। পরীক্ষায় যেন ফল হয়, সঙ্গীত জগতের মানুষরা আহ্বান জানান, দেবী যেন তাঁদের গলায় অধিষ্ঠীত থাকেন। তাহলেই হবে উন্নতি।
আবার এই দিনটি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে মজারও বটে। কারণ এই সময়ে এক দিনের জন্য পড়াশোনা থেকে ছুটি। বই খাতা সব যে মায়ের কাছেই জমা।
সরস্বতী পুজোর দিনে ছোট বাচ্চাদের হাতেখড়ি দেওয়া হয়। এই দিন থেকেই শুরু হয়, বিদ্যার পথে চলার। আগে ৫ বছরে হাতেখড়ি হত শিশুদের। কিন্তু এখন সময় পালটেছে, দুই থেকে আড়াই বছর হলেই শুরু হয় স্কুলে যাওয়া। তাই বাবা-মায়েরাও চান তাড়াতাড়ি হাতেখড়িটা করিয়ে নিতে। কিন্তু প্রশ্ন হল কেন সরস্বতী পুজোর দিন হাতেখড়ি হয়? এই দিন পড়াশোনা তো বন্ধ, বই-খাতা-স্লেট সবই থাকে মায়ের কাছে। তাহলে হাতেখড়ি কেন দেওয়া হয়?
শাস্ত্রজ্ঞরা জানান, হাতেখড়িই হল বিদ্যালাভের প্রথম ধাপ। বাগদেবীর সামনে পুজো করে ঠাকুরমশাই নিজে হাতেখড়ি দেন শিশুদের। মনে করা হয়, দেবী সরস্বতীর সামনে বিদ্যার পথে চলা শুরু করলে তা সন্তানের উপর শুভ প্রভাব ফেলে। এতে ভবিষ্যতে সন্তানের বিদ্যার পথ সুগম হয়।
যদিও শাস্ত্রজ্ঞদের কারও কারও মত, সরস্বতী পুজো মানেই যে সেই দিনটি হাতেখড়ি দেওয়ার যোগ্য এমনটা কিন্তু নয়। সাধারণ ভাবে ওই দিনটিকে শুভ বলে ধরে নেওয়া হলেও, কিছু ক্ষেত্রে সবার জন্য তা শুভ নাও হতে পারে। তাই শিশুটির গ্রহ-নক্ষত্র দেখে নিয়ে সেই অনুসারে হাতেখড়ির দিন স্থির করুন। প্রয়োজনে কোষ্ঠী বিচার করে দেখে নিন সরস্বতী পুজোর দিনে হাতেখড়ি দেওয়াটা ঠিক হবে কি না!
বসন্ত পঞ্চমীর দিনে কোন সময়টা শিশুর হাতেখড়ি দেওয়ানোর জন্য শুভ, তা জেনে নিন। প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে পৌঁছান। আর যার হাতেখড়ি উৎসব, তাকেও বিষয়টির গুরুত্ব বুঝিয়ে বলুন। হাতে খড়ি দিতে যে যে জিনিস লাগবে তা হল, স্লেট, খড়ি, বর্ণমালার বই, খাগের দোয়াত-কলম,ফল-ফুল, আসন ইত্যাদি।