Ganesha and Kuber: কুবেরের অহংকার ভেঙে চুরমার করতে গণেশ কী কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, জানা আছে?

Mythology: নিষ্ঠাভরে ভক্তরা তাঁর উপাসনা করলে সাফল্য ও ধনসম্পদের আশীর্বাদে পূর্ণ হয়ে ওঠে জীবন। কিন্তু কুবেরের এই ধনসম্পদের পূর্ণ হওয়ার কারণে বড্ড বেশি অহংকার বোধ ছিল। তাঁর ধন-সম্পদে ভরা সংসার নিয়ে গর্ব করার জন্য গণেশ তাঁকে বেশ অস্বস্তিকর একটি পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছিলেন। 

Ganesha and Kuber: কুবেরের অহংকার ভেঙে চুরমার করতে গণেশ কী কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, জানা আছে?

| Edited By: দীপ্তা দাস

Sep 28, 2023 | 6:17 PM

হিন্দু ধর্মে দেবদেবীর সংখ্যা অগণিত। তবে কুবের ও গণেশ হলেন হিন্দুদেবতাদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয়। শাস্ত্র মতে, সম্পদের দেবতা হলেন কুবের। শুধু সম্পদ ও সমৃদ্ধি বললে ভুল হবে, তিনি গোটা বিশ্বের ভাণ্ডারের অভিভাবকও মনে করা হয়। নিষ্ঠাভরে ভক্তরা তাঁর উপাসনা করলে সাফল্য ও ধনসম্পদের আশীর্বাদে পূর্ণ হয়ে ওঠে জীবন। কিন্তু কুবেরের এই ধনসম্পদের পূর্ণ হওয়ার কারণে বড্ড বেশি অহংকার বোধ ছিল। তাঁর ধন-সম্পদে ভরা সংসার নিয়ে গর্ব করার জন্য গণেশ তাঁকে বেশ অস্বস্তিকর একটি পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছিলেন।

পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, ভগবান শিব ও দেবী পার্বতীকে মুগ্ধ করতে একদিন মধ্যাহ্নভোজনে আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভেবেছিলেন কুবের। তাঁর মূল উদ্দ্যেশ্য ছিল, ধনসম্পদে পূর্ণ সংসারের উজ্জ্বলতা ও মহিমায় শিব ও পার্বতী তুষ্ট হোন। সেইভেবে তিনি মহাদেব ও পার্বতীকে আমন্ত্রণ জানাতে কৈলাস পর্বতে যান ও তাঁদেরকে মধ্যাহ্নভোজের প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেন।

কিন্তু কেন এই ভোজের আয়োজন করা হয়েছে, তার কারণ জিজ্ঞাসা করেছিলেন মহাদিদেব। কিন্তু কুবেরের কাছে কোনও সদুত্তর ছিল না। কিন্তু শিব বুঝতে পেরেছিলেন এই আমন্ত্রণের পিছনে কুবেরের লুকনো উদ্দেশ্য। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, শিব ও পার্বতী যেতে না পারলেও তাঁদের জায়গায় গণেশ কুবেরের মহাভোজে উপস্থিত থাকবে। শুধু শিব নয়, কুবেরের এই নিমন্ত্রণের উদ্দেশ্য সম্পর্কেও অবগ ছিলেন। িক সময় থেকেই  তিনি কুবেরের অহংকার চূর্ণ করার সংকল্প নিয়ে ফেলেছিলেন। বাহন মূষিককে নিয়ে কুবেরের প্রাসাদে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন।

গণেশ ও মূষিক কুবেরের অত্যন্ত সুন্দর ও সমৃদ্ধ প্রাসাদে যান। উভয়কেই কুবের অত্যন্ত উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। এরপর দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় দুজনকেই খাবার পরিবেশন করা হয়। রুপো ও সোনার পাত্র, বাটি, গ্লাসের মদ্যে মজাদার খাবার পরিবেশন করা হয়। খাবার খাওয়া শুরু হলে ধীরে ধীরে সব খাবার শেষ করে ফেলেন গণেশ ও মূষিক। এতে কুবের ভেবেছিলেন, এই খাবারে অত্যন্ত তুষ্ট হয়ে বাড়ি চলে যাবে। কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়ে যাবে। কিন্তু গণেশ তখনও তাঁর পেট পূর্ণ হয়নি। তিনি দ্রুত প্লেট ও থালা ভরিয়ে দিতে অনুরোধ করেম। একবার নয়, কয়েক সেকেণ্ডের মধ্য়ে সেই খাবার বার বার শেষ করে দিচ্ছিলেন গজানন। কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যে খাবার শেষ করার পরও গণেশ ছিলেন অত্যন্ত ক্ষুধার্থ। গণেশের এই আচরণে বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। অন্ন ও অন্যান্য খাবার শেষ হয়ে যাওয়ার পর খিদের জ্বালায় গণেশ সমস্ত বাসনপত্র এবং হীরা, মুক্তো ও গহনা খেতে শুরু করেন। তাতে পেট পূর্ণ হয়নি। কুবের হতভম্ব হয়ে গিয়ে নিজের ভুল বুঝতে পারেন।

গণেশের এই অদ্ভূত আচরণে অত্যন্ত ভীত হয়ে মহাদেবের পায়ে পড়ে হাতজোড় করে কুবের জানিয়েছিলেন, আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। আমার অহংকারের জন্য আমি অত্যন্ত ক্ষমাপ্রার্থী ও লজ্জিত। আমার সম্পদ আপনার সামনে কিছুই নয়। ঘটনার পর দ্রুত ক্ষমা চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাদেব কুবেরকে এক মুঠো ধান দিয়েছিলেন। আর সেই ভাত গণেশকে দেওয়ার পরই তাঁর ক্ষুধা মিটবে বলে আশ্বাস গিয়েছিলেন শিব। পরে গণেশ ফিরে গেলে সম্পদের দেবতা কুবেরের অহংকার ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। গর্বের সঙ্গে অন্ন পরিবেশন করা হলে কখনও কারওর ক্ষুধা মেটে না। কম রোজকার করলেও ভালোবাসা ও বিশুদ্ধ হওয়া চাই।