
কোনও পরিবারের রক্ষক দেবী বা দেবতাকে সেই পরিবারের কুলদেবী বা কুলদেব বলা হয়। তাই বিয়ে, সন্তানের জন্ম বা নামকরণসহ যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানে তাঁদের পুজো করা হয়। কুলদেবতার পুজো ছাড়া অসম্পূর্ণ কোনও পরিবারের শুভ কাজ।
বিশ্বাস, কুলদেবতার পুজো করলে ভগবানের আশীর্বাদ পাওয়া যায়। ফলে পরিবারে সুখ, সমৃদ্ধি এবং প্রাচুর্য আসে। পরিবারের দুর্ভাগ্যও দূর হয়। আবার যদি কুলদেবতার পুজো না করা হয়, তাহলে তাঁরা রুষ্ট হতে পারেন। এর ফল ভোগ করতে হতে পারে। তাই কুলদেবতার পুজো করার আগে তাঁদের পরিচয় জানাটাও প্রয়োজন। কিন্তু অনেকেই জানেন না তাঁর কুলদেবী বা কুলদেবতা কে?
কীভাবে জানবেন কে আপনার কুলদেবতা বা কুলদেবী?
পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের প্রশ্ন করে দেখতে পারেন। মা–বাবা, দাদু–ঠাকুমা, কাকা–পিসির কাছ থেকে জানতে পারেন। নিজের আদি গ্রামে গিয়ে সেই মন্দির দর্শন করুন যেখানে আপনার পূর্বপুরুষরা পুজো করতেন। মন্দির বা পুরোহিতের কাছ থেকেও জানা সম্ভব আপনার কুলদেবতা কে?
জ্যোতিষী বা কুণ্ডলীর মাধ্যমে কুলদেবতার তথ্য পাওয়া যায়। কিছু গোত্রের নির্দিষ্ট দেবতা থাকেন। যেমন—কাশ্যপ গোত্রে অনেক সময় ভগবান বিষ্ণু বা দেবী দুর্গাকে কুলদেবতা হিসেবে মানা হয়। বিশেষ আচার–অনুষ্ঠান বা জ্যোতিষশাস্ত্রের মাধ্যমে কিছু পণ্ডিতও কুলদেবতার পরিচয় নির্ধারণ করে দেন।
কবে কুলদেবী বা কুলদেবতার পুজো করা হয়?
কারও কারও পরিবারে প্রতিদিন বা সপ্তাহে একদিন পুজো করার রীতি রয়েছে। কেউ কেউ অমাবস্যা, পূর্ণিমা বা নির্দিষ্ট তিথিতে পুজো করেন। বিয়ের আগে বা পরে কুলদেবতার পুজো করা আবশ্যক বলে মনে করা হয়। সন্তানের জন্ম, নামকরণ বা অন্য যে কোনও সংসারিক আচার–অনুষ্ঠানে তাঁদের পুজো করা হয়। অনেক পরিবারে নবরাত্রিতে কুলদেবীর বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। পরিবারের কারও অসুখ, দুঃখ বা সমস্যার সময়ে তাঁদের আরাধনা করা মঙ্গলজনক বলে মনে করা হয়।
নতুন কোনও কাজ শুরু করার সময়ও কুলদেবতার পূজা করা হয়। অনেক পরিবার বছরে একবার তাঁদের কুলদেবতার মন্দিরে গিয়ে বিশেষ পুজো করেন। একে কুলপুজো বলা হয়।