হিন্দু পঞ্চাঙ্গে প্রথম পূর্ণিমা কবে পালিত হয়? হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, চৈত্র পূর্ণিমা নববর্ষ শুরুর পর পালন করা হয় প্রথম পূর্ণিমা হিসেবে। বছরের প্রতিটি পূর্ণিমা তিথি দেবী লক্ষ্মী ও চন্দ্রদেবতাকে উত্সর্গ করা হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে এই পূর্ণিমা হল মাসের শেষ দিন। বর্তমানে বাংলা ক্য়ালেন্ডার অনুসারে, চৈত্র মাস চলছে। হিন্দু ধর্মে চৈত্র পূর্ণিমার রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। হিন্দুমতে, এই দিনটিকে হনুমান জয়ন্তীও বলা হয়। তাই এই মাসের পূর্ণিমাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। পূর্ণিমার দিনে ভগবান বিষ্ণু ও তাঁর অবতারের পুজো করা রীতি রয়েছে। তাই এদিন বাংলার অনেক বাড়িতেই সত্যনারায়ণের পুজোর ব্যবস্থা করা হয়। পূর্ণিমা তিথিতে ভগবান নারায়ণের আরাধনা ও উপবাস রাখা হয়। তারপরে ব্রতপাঠ পড়া হয়। এছাড়া এই পবিত্র দিনে গঙ্গা স্নান করলে মোক্ষলাভ করেন ভক্তরা। এ বছরের চৈত্র মাসের পূর্ণিমার তারিখ, শুভ সময় ও গুরুত্ব জানুন এখানে…
শুভ সময়
পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, এ বছর চৈত্র মাসের প্রথম পূর্ণিমা তিথি পালিত হবে ৫ এপ্রিল, সকাল ৯টা ১৯ মিনিটে। তিথি সমাপ্ত হবে ৬ এপ্রিল ১০টা ৪ মিনিটে। চৈত্র পূর্ণিমার দিনে উপোস, পবিত্র জলে স্নান করা, শ্রীহরি, বজরঙ্গবলীকে পুজো করে কিছু দান করার রীতি রয়েছে। পাশাপাশি ৬ এপ্রিল পালিত হবে হনুমান জন্মোৎসবও।
কথিত আছে, এই পবিত্র দিনে শ্রীরামের পরম ভক্ত হনুমানজির জন্ম হয়েছিল। তাঁর জন্মদিনের কথা মাথায় রেখে এদিন হনুমানের আরাধনা করা হয়। এই পূর্ণিমার পর, বৈশাখ মাস পড়ে যায়। অন্য়দিকে, হিন্দুমতে, পূর্ণিমার দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্রজনগরীতে মহারাস উত্সবেরও আয়োজন করা হয়। যা বাংলায় রাস নামেও পরিচিত।
তাৎপর্য
চৈত্র পূর্ণিমা আবার চৈতিপুনম নামেও পরিচিত। ত্রেতাযুগে, চৈত্র মাসের পূর্ণিমায়, ভগবান শিবের অংশাবতার এবং শ্রী রামের পরম ভক্ত, হনুমানজির জন্ম হয়েছিল। অনেক সাধনার পর দেবী অঞ্জনী ও পিতা কেশরীর ঘরে। একই দিনে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ ব্রজে গোপীদের নিয়ে রাস রচনা করেছিলেন, যা মহারাস নামে পরিচিত। বিশ্বাস করা হয় যে চৈত্র পূর্ণিমার রাতে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করে উপোস রাখলে গৃহে ধন-শস্যে ভরে যায়। অপরদিকে এদিনে যারা তিল,জল,বস্ত্র,শস্য,মাটির পাত্র দান করেন তাদের সব দুঃখ-কষ্টের বিনাস হয়। তবে মনে রাখতে হবে ওই দিন শুধুমাত্র দুঃস্থ মানুষকেই যেন দান করা হয়।
উপকারিতা
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, পূর্ণিমা তিথি সরাসরি একজন ব্যক্তির মন ও শরীরকে প্রভাবিত করে, কারণ চাঁদকে মন ও পদার্থের কারক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। পূর্ণিমার রাতে চাঁদ ষোলোটি কলায় পূর্ণ থাকে। বলা হয় যে এ দিনে পূর্ণিমার আলো একজন ব্যক্তির মনে সর্বাধিক প্রভাব ফেলে,তাতে মানসিক শান্তি এবং স্বাস্থ্য থাকে স্বাভাবিক। চন্দ্রের কিরণে দেহ ও মন সব থাকে সুস্থ ও সবল।