
স্বামীর মঙ্গলকামনায় সারাদিন নির্জলা উপোস করে ব্রত পালন। তারপর সন্ধেবেলা চাঁদের আলোয় চালুনি দিয়ে স্বামীর মুখ দর্শন করে তাঁর হাতে জল খেয়ে ভাঙবে উপোস। এই হল প্রচলিত প্রথা। ‘ডিডিএলজে’ থেকে শুরু করে আরও নানা বলিউড সিনেমার সুবাদে এই প্রথার প্রভাব আজ অবাঙালির গণ্ডি ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় গোটা ভারতেই। অনেকেই ভালবেসে, স্বামীর মঙ্গলকামনায় করবা চৌথের ব্রত পালন করেন। বহু ক্ষেত্রে স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীকেও উপোস করে থাকতে দেখা যায়। বিশেষ করে টলি-বলি সেলেবদের মধ্যেও বেশ প্রচলিত এই ব্রত। আপনিও কি এই বছর করবা চৌথের ব্রত পালন করবেন ভাবছেন? তাহলে এখনই জেনে নিন এই ব্রত পালনের শুভ সময়।
দৃক পঞ্জিকা অনুসারে কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথিতে পালন হয় করবা চৌথ ব্রত। যদিও বাংলা পঞ্জিকা মতে এখনও আশ্বিন মাস। বৈদিক পঞ্জিকা মতে কোজাগরী পূর্ণিমার পরের দিনই পড়ে গিয়েছে কার্তিক মাস। সেই অনুযায়ী, ৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৫৪ মিনিটে কার্তিক কৃষ্ণা চতুর্থী পড়বে। চতুর্থী ছেড়ে যাবে ১০ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধে ৭টা ৩৮ মিনিটে। চাঁদ দেখে যেহেতু এই ব্রত ভঙ্গ করতে হয়, তাই ১০ অক্টোবরই পালন করতে হবে করবা চৌথের ব্রত।
করবা চৌথ হিন্দু ধর্মে এক পবিত্র উৎসব। মূলত স্ত্রী নিজের স্বামীর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের কামনায় পালন করেন। করবা চৌথ মূলত ধুমধাম করে পালিত হয় উত্তর ভারতের রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশে। এই দিন ভোরবেলা ‘সর্গি’ খাওয়ার রীতি আছে, যা শাশুড়ি মেয়ে-বৌকে নিজের হাতে খাওয়ান। এরপর সূর্যোদয়ের পর থেকে চাঁদ ওঠা পর্যন্ত স্ত্রী উপোস করে ব্রত পালন করে থাকেন। মানা জল পান।
বিকেলে করবা (মাটির হাঁড়ি) ও গৌরী-গণেশের পুজো করতে হয়। এই সময় সকল স্ত্রী একসঙ্গে এই পুজো করেন। পুজোর সময় করবা একে অপরের মধ্যে ঘুরিয়ে ‘ ব্রতকথা’ শোনানো হয়। রাতে চাঁদ ওঠার পর চালনি দিয়ে চাঁদ দেখা ও তার পর স্বামীর মুখ দেখার রীতি। স্বামীর হাত থেকে জল ও কিছু খাবার খেয়ে উপোস ভঙ্গ করতে হয়। করবা চৌথ কেবল এক রীতি নয়। এ যেন ভালবাসা, আস্থা এবং দাম্পত্যের বন্ধনের প্রতীক।