Janmshtami 2023: কৃষ্ণের হৃদয় এখনও সচল! পৃথিবীর এই বিখ্যাত মন্দিরেই রয়েছে পরম যত্নে

TV9 Bangla Digital | Edited By: দীপ্তা দাস

Aug 31, 2023 | 5:00 PM

Lord Krishna: রহস্যে ঘেরা পুরীর জগন্নাথের মন্দির হল দেশের অন্যতম তথা বিশ্বের অন্যতম পবিত্র হিন্দু মন্দির। পৌরাণিক কাহিনি মতে, এই মন্দিরে অধিষ্ঠিত জগন্নাথদেব আসলে শ্রীকৃষ্ণেরই অবতার।

Janmshtami 2023: কৃষ্ণের হৃদয় এখনও সচল! পৃথিবীর এই বিখ্যাত মন্দিরেই রয়েছে পরম যত্নে

Follow Us

জন্মাষ্টমী নিয়ে অনেক কাহিনি সকলের মুখে মুখে শোনা যায়। সামনেই অনুষ্ঠিত হবে হিন্দুদের অন্যতম জনপ্রিয় উত্‍সব জন্মাষ্টমী। তবে জানেন কি, শ্রীকৃষ্ণ এখনও আমাদের মধ্যে জীবিত। শুনতে অবাক লাগলেও, শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় এখনও সচল রয়েছে। পৃথিবীর এই মন্দিরে রাখা রয়েছে অত্যন্ত যত্নে। কোথায় রাখা রয়েছে, তা জানলে অবাক হবেন। কারণ, এই মন্দির আর কোথাও নয়, রয়েছে পুরী মন্দিরের গর্ভগৃহে। শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় এই মন্দিরের এমন গোপন জায়গায় রয়েছে, যা এখনও পর্যন্ত সাধারণের নজরে আনা হয়নি।

রহস্যে ঘেরা পুরীর জগন্নাথের মন্দির হল দেশের অন্যতম তথা বিশ্বের অন্যতম পবিত্র হিন্দু মন্দির। পৌরাণিক কাহিনি মতে, এই মন্দিরে অধিষ্ঠিত জগন্নাথদেব আসলে শ্রীকৃষ্ণেরই অবতার। জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করার সময় শ্রীকৃষ্ণের এই হৃদয়ই প্রতিষ্ঠা করা হয়। সাধারণত নিমকাঠ দিয়ে তৈরি জগন্নাথদেবের মূর্তি গড়া হয় প্রতি ১২ বছর অন্তর। ২০১৫ সালে শেষ বার নবকলেবর তৈরি করা হয়েছিল। সেই সময় সুরক্ষিত ব্রহ্ম পদার্থ স্থাপন করা হয়েছিল।

এই ব্রহ্ম পদার্থ কী?

শাস্ত্র অনুসারে, মহাভারতের যুদ্ধের প্রায় ৩৬ বছর পর শ্রীকৃষ্ণের মানব রূপ নিয়ে মৃত্যু হয়েছিল। মহাভারতের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের চরিত্র বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। মহাকাব্যের মূল চরিত্র শ্রীকৃষ্ণ পাণ্ডবদের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের ফলাফলের ভবিষ্যত সব জানতেন। তবুও কেন তিনি কোনও চেষ্টা করলেন না, সেই নিয়ে গান্ধারী মনে ছিল ক্ষোভ। জিজ্ঞাসা করলে সদুত্তর দেননি কৃষ্ণ। সন্তানহারা গান্ধারী কৃষ্ণকে রেগে অভিশাপ দেন, যে ভাবে ভাইয়ে-ভাইয়ে লড়াই করে কুরুবংশ শেষ হয়েছে, সেইভাবে নিজেদের মধ্যে লড়াই করে যদু বংশও ধ্বংস হয়ে যাবে। গান্ধারীর অভিশাপ ফলে যায় ৩৫ বছর পর। তবে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয় শ্রীকৃষ্ণের পুত্র সাম্বের হাত ধরে। একবার সপ্তঋষি এসেছিলেন কৃষ্ণ ও বলরামের সঙ্গে দেখা করতে। সেই সময় সাম্ব তাঁর সঙ্গে মজার ছলে গর্ভবতী সেজে অস্থির করে তোলেন। তাঁর পেটে রাখা ছিল একটি লোহার পেরেক। সপ্তঋষি গর্ভবতীর অবস্থা দেখে অলৌকিক শক্তি প্রয়োগ করে জানতে চান মহিলার গর্ভে সন্তান সুস্থ রয়েছেন কিনা। সাম্বের এমন কীর্তিতে ভীষণ রেগে যান ঋষিরা। অভিশাপ দেন, এই লোহার ধাতুই হবে যাদব বংশের ধ্বংসের কারণ। সপ্তঋষির অভিশাপের কথা শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করে কৃষ্ণ ও বলরাম। অভিশাপ কাটাতে সপ্তঋষি নির্দেশ দেন, ওই লোহার ধাতু গুঁড়ো করে নদীর জলে ভাসিয়ে দিতে। কিন্তু ভাসিয়ে দেওয়ার সময় একটি বড় লোহার অংশ থেকে যায়। সেই অংশটি খেয়ে ফেলে একটি মাছ। নদীর জলে মাছ ধরতে গিয়ে ওই মাছ ধরে ফেলেন এক জরা। তিনি সেই লোহার খণ্ড দিয়ে একটি তীর বানান।

যাদব বংশ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার শোকে একটি গাছের তলায় নিদ্রায় চলে যান শ্রীকৃষ্ণ। ঠিক সেই সময় ওই জরা কৃষ্ণের রক্তবর্ণ পা-কে হরিণ ভেবে বিষাক্ত তীর ছুঁরে মারেন। সেই তীরের মুখে লাগানো বিষের জ্বালায় প্রাণ ত্যাগ করেন শ্রীকৃষ্ণ। ঘটনার পরেও কৃষ্ণের দেহে প্রাণ ছিল। কিন্তু আদেশানুসারে, কৃষ্ণের দেহ দান করেন পাণ্ডবরা। আগুনে পুরো শরীর ভষ্ম হলেও হৃত্‍পিণ্ড জ্বলন্ত অবস্থায় জ্বলতে থাকে। সচল ছিল তখনও। সেইসময় আকাশবাণী হয়, এই হৃদয় হল ব্রহ্ম হৃদয়। আগুন দেহ পুড়লেও এই হৃদয় কখনও পুড়ে ছাই হবে না। গঙ্গা ভাসিয়ে দেওয়া উচিত। দ্বারকা জলের নীচে চলে গেলে ওই হৃদয় একটি নরম লোহার টুকরোয় পরিণত হয়। একবার সমুদ্রে স্নান করার সময় রাজা ইন্দ্রদ্যুমের হাতে এসে পড়ে সেই লোহার টুকরো। স্বপ্নাদেশে শ্রীকৃষ্ণ নির্দেশ দেন, মন্দিরে কাঠের দেব-দেবীর মূর্তি তৈরি করে এই নরম লোহার অংশ ব্রহ্ম পদার্থ হিসেবে স্থাপন করতে। সেই থেকে পুরীর মন্দিরে জগন্নাথদেবের মূর্তির মধ্য়ে শ্রীকৃষ্ণের হৃদয় প্রতিষ্ঠা করা হয় এখনও।

ব্রহ্ম পদার্থই হল শ্রীকৃষ্ণের সচল হৃদয়

এই ব্রহ্ম পদার্থ এখনও পর্যন্ত কেউ দেখেননি, কেউ সরাসরি স্পর্শও করেননি। নবকলেবরে ব্রহ্ম পদার্থ স্থাপন করেন বিশেষ পুরোহিতরা। এই ব্রহ্ম পদার্থ স্থাপন করা সময় মন্দির চত্বরের সব ইলেকট্রিক কানেকশন বেশ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই এই বিশেষ জিনিসটি বিগ্রহের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে এই ব্রহ্ম পদার্থ স্থানান্তর করারসময় মন্দিরের পুরোহিতরা চোখে কাপড় বেঁধে, হাতে গ্লাভস পরে থাকেন। বেশ কয়েকজন এই পদার্থ দেখেছেন, তাঁরা কেউই আর বেঁচে নেই। ভুলেও যদি এই ব্রহ্ম পদার্থের উপর নজর পড়ে, তাহলে তাঁর মৃত্যু অনিবার্য। শোনা যায়, যাঁরা ব্রহ্ম পদার্থ স্থানান্তর করেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন, সেই বস্ত্ুর মধ্য়ে প্রাণ রয়েছে, আর সেই ব্সতুটি একটি নরম তুলতুলে।