সামনেই কি বিয়ের পিঁড়িতে উঠতে চলেছেন? নিজের প্রিয় মানুষটির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আনন্দ ও উত্তেজনার পাশাপাশি বিয়ের জন্য থাকে অঢেল কাজ। প্রথমেই যে কাজটি করা হয়, তা বিয়ের নির্দিষ্ট ও শুভ একটি দিন নির্ধারণ করা। তারপরেই সেই দিনকে কেন্দ্র করে বিয়ের কার্ড অর্ডার দেওয়া। বাঙালির কাছে লাল রঙের বিয়ের কার্ড বেশ জনপ্রিয়। তবে বর্তমানে বিয়ের কার্ড নিয়ে শুরু হয়েছে নানা পিউশন। কখনও কবিতা, ধাঁধা, কার্ডের নকসা পাল্টে নানা ভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে। তাতে কার্ডের সৌন্দর্য বৃদ্ধি হচ্ছে তো বটে, কিন্তু জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে এই ফিউশন বা কার্ডের নকসা পাল্টে ফেলা উচিত?
যত বিয়ের দিন এগিয়ে আসে, তত বেশি উত্কন্ঠা বেড়ে যায়। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও নিকটজনের কাছে বিয়ের কার্ড পৌঁছে দেওযার হিড়িক পড়ে যায়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, আগামী ১৬ জানুয়ারির পর থেকেই বিয়ের মরসুম শুরু হচ্ছে। অবসান ঘটছে পৌষ মাসের অশুভ সময়। তাই যাদের মাঝ জানুযায়িরেত বিয়ের তারিখ পড়েছে, তাদের হাতে আর বেশি সময় নেই। বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের কাছে পৌঁছে দেওয়াই এখন চ্যালেঞ্জ।
বিয়ের কার্ড বাড়িতে অনেক বেশি হয়ে গেলে অনেকেই তা ফেলে দেন। আবার নিমন্ত্রণ পত্র পাওয়ার পর ডাস্টবিনে জায়গা পায় সেই সব সুন্দর সুন্দর কার্ডগুলি। এছাড়া বিয়ে যারা করছেন, তাদের অনেক বিয়ের কার্ড চলে এলে কী করবেন, কোথা থেকে শুরু করবেন তা বুঝে উঠতে পারেন না। অবশিষ্ট কার্ডগুলি আলমারির এককোণে জায়গা পায়, আবার অনেকে ফেলেও দেন। হিন্দুমতে, বাড়িত বিয়ের কার্ড কখনও ফেলে দেওয়া উচিত নয়। যদি ফেলে না দেন, তাহলে কীভাবে ব্যবহার করবেন, বিয়ের কার্ডে কী লিখবেন, কার ছবি ছাপা হবে, বাস্তু অনুসারে এসব জানা খুবই জরুরি, তা নাহলে চরম বিপদের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
বিয়ের কার্ড কেমন হওয়া উচিত?
জ্যোতিষবিদদের মতে, বিবাহের প্রতিটি কাজ করার আগে জ্যোতিষ দৃষ্টি ও বাস্তু নিয়মগুলি অনুসরণ করা প্রয়োজন। মেনে না চললে অশুভ লক্ষণ হতে পারে। দাম্পত্য জীবনেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিয়ের কার্ড প্রিন্ট করার সময় বেশ কিছু নিয়ম ও পয়েন্ট অবশ্যই মেনে চলা উচিত। বিয়ের কার্ড ছাপানো হলে তাতে কলস, স্বস্তিকা প্রতীক, নারকেল, সিঁদুর, কড়ি, প্রজাপতি ও ভগবান গণেশের ছবি থাকা বাধ্যতামূলক। সম্ভব হলে রাধা কৃষ্ণের ছবিও লাগাতে পারেন। কার্ডের আকৃতি সবসময় বর্গাকার রাখা উচিত। এমন কার্ড হলে শুভ বলে মনে করা হয়।
কার্ডের রং কেমন হওয়া উচিত?
বিয়ের কার্ড লাল, হলুদ, কেশর বা সাদা রঙের রাখতে পারেন। কার্ডে গণেশ মন্ত্র লিখতে ভুলবেন না যেন। আরও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল, কার্ডের উপর বা ভিতরের পাতায় ‘মঙ্গলম ভগবান বিষ্ণু মঙ্গলম গরুন ধ্বজা মঙ্গলম পুন্ড্রিকাক্ষী’ লেখা থাকাও জরুরি। বিয়ের কার্ডে প্রধানত গণেশ পুজো, হলুদ, মেহেন্দি, মণ্ডপ, কনে বা বরের ছবি, পাল্কি, সাতপাকে বাধা, সিঁদুরদানের ছবি থাকাও জরুরি। এছাড়া বিবাহের ও প্রীতিভোজ বা রিসেপসনের তারিখ ও সময়, ঠিকানা থাকা বাধ্যতামূলক। বর-কনের নাম , তাদের বাবা-মায়ের নামও থাকতে হবে।