
ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় উৎসব নাগপঞ্চমী। এই একই দিনে বাংলায় মনসা পুজো করা হয়। এমনকী এই একই দিনে নেপালেও পালিত হয় নাগপঞ্চমী। এই বছর সারা দেশ জুড়ে আগামী ২ অগস্ট ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে নাগপঞ্চমী। এই নাগপঞ্চমী পালনের পিছনে বেশ কিছু পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, সেগুলো কী-কী…
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, হিন্দু দেবতা কৃষ্ণ যমুনা নদীর ধারে একবার খেলছিলেন। তখন তিনি বেশ ছোট ছিলেন এবং তাঁর বল নদীর ধারে একটি গাছের ডালে আটকে যায়। বল উদ্ধারের জন্য কৃষ্ণ নদীতে পড়ে যান এবং একটি কলিঙ্গ নামক সাপ তাঁকে ঘিরে ধরে। নিজেকে বাঁচানোর জন্য কৃষ্ণ কঠিন লড়াই করেন। তখন সাপ বুঝতে পারে যে কৃষ্ণ কোনও সাধারণ শিশু নয় এবং সে কৃষ্ণকে অনুরোধ করে তাকে হত্যা না করার জন্য। কৃষ্ণ প্রতিশ্রুতি নিয়ে সাপকে রক্ষা করেছিলেন যাতে ওই সাপের জন্য যাতে সাধারণ মানুষ সমস্যায় না পড়ে। নাগ পঞ্চমী কৃষ্ণের বিজয়কে চিহ্নিত করতে উদযাপিত হয়।
মহারাষ্ট্রে, একটি থালায় একটি সুপ্ত কোবরা নিয়ে এবং মানুষের দরজা দরজায় গিয়ে ভিক্ষা ও পোশাক চাওয়ার মাধ্যমে এই উৎসব উদযাপন করা হয়। অন্যদিকে, কেরলে ভক্তরা সাপের মন্দিরে যান এবং সাপের একটি পাথর বা মূর্তি পুজো করেন। নাগদেবতা আরাধনা করা হয় যাতে সকলে সাপের কামড় থেকে রক্ষা পায়। অনেক জায়গায় কাদা ও বালির তৈরি সাপের মূর্তিও পুজো করা হয়। গরুর দুধ, ধান এবং দূর্বাও নিবেদন করা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে শিব, অন্য হিন্দু দেবতা, সাপকে ভালোবাসেন এবং আশীর্বাদ করেন, তাই ভক্তরা তাকে খুশি করার চেষ্টায় সাপের পূজা করে।
নাগপঞ্চমীকে আরেকটি পৌরাণিক কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। এখানেও কৃষ্ণের সঙ্গে জড়িত রয়েছে সাপের গল্প। কৃষ্ণের লীলার সময় কলিঙ্গ নামের একটি সাপ যমুনা নদীতে বাস করত। ওই সাপের ভয়ে ব্রজের বাসিন্দারা কেউ নদীতে নামতে পারতেন না। ওই নদীর জলও ব্যবহার করতেন না কেউ। পাশাপাশি ওই সাপের বিষে নদীর জলও বিষাক্ত হয়ে গিয়েছিল। সাধারণ মানুষকে বাঁচানোর উদ্দেশে কৃষ্ণ ও ভয়ানক বিষাধর সাপের সঙ্গে যুদ্ধ করে। এবং পুনরায় ওই নদীকে বিষমুক্ত করে তোলে। এই কারণে নাগপঞ্চমী পালন করা হয়।