সনাতন ধর্মে নরক চতুর্দশীর একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কথিত আছে, এদিন শ্রীকৃষ্ণেরও পুজো করা হয়। শুধু তাই নয়, বিষ্ণুরও আরাধনা করা হয়ে থাকে। হিন্দু পঞ্জিকা মতে, প্রতি বছর কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে পালন করা হয় নরক চতুর্দশী। এই তিথিকে বাংলায় ভূত চতুর্দশীও বলা হয়। দিওয়ালির পাঁচদিন ধরে চলা উত্সবের দ্বিতীয় দিবস। পুরাণ অনুসারে, এদিন শক্তিশালী অসুর নরকাসুরকে বধ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ ও সত্যভামা। তাই ভোরবেলা থেকেই শুরু হয়ে যায় এই উত্সবের সূচনা। এদিনকে কালি চৌদা ও বলা হয়। কালি চৌদাস হল অশুভ ও অলসতাকে দূর করার জন্য জীবনে আলোর দিশা আনা। তাই মৃত্যুর দেবতা যমকে প্রদীপ জ্বালিয়ে নরকের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে মনে করা হয়।
হিন্দু ধর্মে নরক চতুর্দশীকে ছোটি দিওয়ালি নামেও অভিহিত করা হয়। কালীপুজো ও লক্ষ্মী পুজোর আগের দিন পালিত হয়। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে বহু দেব-দেবীরও আরাধনা করা হয়। রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি ও তিথির মাহাত্ম্য।
তারিখ ও সময়
চতুর্দশী তিথি শুরু – ১১ নভেম্বর বেলা ১টা ৫৭ মিনিট থেকে
চতুর্দশীর শেষ তারিখ – ১২ নভেম্বর বেলা ২টা পর্যন্ত
গুরুত্ব
হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, ভগবান কৃষ্ণ তাঁর স্ত্রী সত্যভামা-সহ রাক্ষস অসুর নরকাসুরকে হত্যা করেছিলেন। রক্ষা করেছিলেন ১৬ হাজার গোপীকে । নরক চতুর্দশী মন্দ ও অশুভ শক্তিকে জয় লাভ করার উত্সব হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। তাই এদিনকে স্মরণ রেখে শ্রীকৃষ্ণের বিশেষ পুজো করা হয়ে থাকে।
শ্রীকৃষ্ণের মন্ত্র
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে
কৃষ্ণায় বাসুদেবয় হারায়ে পরমাত্মনে।
প্রণত ক্লেশনায় গোবিন্দায় নমো নমঃ
ওম নমো ভগবতে বাসুদেবায় নমঃ:
নরক চতুর্দশীতে পুজো পদ্ধতি
এই শুভ দিন শুরু ভোরবেলা থেকেই। এদিন তেল, ফুল, চন্দন দিয়ে পুজো করা হয়। এদিন ঘর আলো করে, ফুল দিয়ে সাজানো হয় ঠাকুরঘর। একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে ভগবান কৃষ্ণের পূজা করুন। তাকে ক্ষীর, সুজির হালুয়া, শুকনো ফল, পোহা, সুস্বাদু খাবার, মিষ্টি ভোগ হিসেবে নিবেদন করুন। সবশেষে শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ নিন। সন্ধ্যের সময় বাড়িতে ১১টি মাটির প্রদীপ জ্বালান, আতসবাজি পুড়িয়ে উত্সব উদযাপন করা হয়।