কলকাতা: স্যালাইন কাণ্ডে নতুন করে তোলপাড় স্বাস্থ্য ভবন। শুধু স্যালাইনের জন্যই কি মৃত্যু? নাকি প্রসূতি মৃত্যুতে রয়েছে অন্য কারণ? ইতিমধ্যে ঘটনার রিপোর্ট জমা পড়েছে স্বাস্থ্য ভবনে। সেই রিপোর্ট উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেছেন। এই রিপোর্ট জমা পড়ার পর স্বাস্থ্যকর্তারা খতিয়ে দেখছেন ঠিক মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এই ঘটনা কি একদিনের, নাকি এমনই চলত!
মেদিনীপুর-কাণ্ডে সিনিয়র চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিতেও ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বই উঠে আসছে। প্রসূতি মৃত্যুতে ১-সি ইউনিটের সিনিয়র চিকিৎসক দিলীপ পাল, হিমাদ্রি নায়েককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, শাস্তির একমাত্র কারণ ৮ জানুয়ারির ঘটনা নয়। সরকারি নিয়ম না মানার অভিযোগ ১-সি ইউনিটের প্রধান দিলীপ পালের বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই আছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ইউনিটের প্রধান হবেন একজন প্রফেসর বা অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। ঘটনার দিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রফেসর উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেন ইউনিট প্রধান হিসেবে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর দিলীপ পাল দায়িত্ব পেলেন? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে হতবাক স্বাস্থ্যকর্তারা। বিভাগীয় প্রধানের বক্তব্য, ইউনিটের দায়িত্ব না দিলে ওটি করবেন না বলেছিলেন অভিযুক্ত চিকিৎসক দিলীপ পাল।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, রবিবার এসএসকেএম-এর বৈঠকে নিজের অসহায়তার কথা স্বাস্থ্যকর্তাদের জানান বিভাগীয় প্রধান মহম্মদ আলাউদ্দিন। অর্থাৎ আরজি কর কাণ্ডে যে থ্রেট কালচারের কথা উঠে এসেছিল, এখানেও তেমনই প্রভাবশালী তত্ত্ব উঠে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসাথীর তথ্যেও বিপাকে অভিযুক্ত সিনিয়র চিকিৎসকরা। সূত্রের খবর, ‘অন কল’ হয়েও হাসপাতাল থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচারে ব্যস্ত ছিলেন অভিযুক্ত চিকিৎসক! অভিযোগ, হাসপাতালে ডিউটির সময়ও নার্সিংহোমে ব্যস্ত থাকতেন ওই চিকিৎসক। স্বাস্থ্য সাথীর ডেটা থেকে এমনই তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।
ওটি কক্ষ চত্বরে সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়েও মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে। তিলোত্তমা কাণ্ডের পর হাসপাতালগুলিতে বেড়েছে সিসি ক্যামেরার সংখ্যা। এরপরও ওটি চত্বরে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা নেই কেন? প্রশ্ন উঠেছে। স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, চিকিৎসকদের আপত্তিতে ওটি কক্ষ চত্বরে নেই পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা। মেদিনীপুর কাণ্ডে তদন্ত রিপোর্টে তার উল্লেখ রয়েছে বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর।