প্রাচীন কাল থেকেই হিন্দুদের ঘরে ঘরে শঙ্খ বাজানোর একটি প্রচলিত ধারা চলে আসছে। পুজো-পার্বণ বা কোনও শুভ অনুষ্ঠানে শাঁখ বাজানো হয়ে থাকে। শঙ্খকে শুভ কাজে শুভ লক্ষণ বলে মনে করা হয়। এছাড়াও, প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় পুজো করার সময় হিন্দুদের ঘরে ঘরে শঙ্খ বাজানো হয়। তবে পুজোয় শঙ্খ বাজানো ছাড়াও স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন, হিন্দুধর্মে কেন শঙ্খ বাজানো ও স্বস্তিক চিহ্ন দেওয়ার রীতি রয়েছে?
শঙ্খ
হিন্দুধর্ম মতে, শাঁখ বা শঙ্খ খুবই পবিত্র একটি জিনিস। বিভিন্ন পূজা-পার্বণ ও শুভ কাজের শুরুতে শঙ্খ বাজানোর রীতি রয়েছে। সাধারণত, যেকোনও পুজোয় শঙ্খ বাজানো ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না। বেদ অনুযায়ী, শঙ্খ ধ্বনি যত দূর পৌঁছয় সেই পর্যন্ত অশুভ শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি যেকোনও পুজোর সময় শাঁখ বাজানোর অর্থ হল, যে দেবতার আরাধনা করা হচ্ছে তার জয়ধ্বনি করা। প্রতিদিন বাড়িতে শাঁখ বাজালে গৃহে লক্ষ্মীর প্রবেশ ঘটে । এমনটাই বিশ্বাস হিন্দুধর্মাবলম্বীদের। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় শঙ্খ বাজানো অত্যন্ত মঙ্গলজনক বলে মনে করা হয়। তাই প্রত্যেক মন্দির ও পীঠস্থানগুলিতে সন্ধ্যারতির সময় শাঁখ বাজানো রীতি রয়েছে।
আরও পড়ুন: কালী পুজোর ইতিহাস ও কাহিনি সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানুন এখানে
স্বস্তিক চিহ্ন
হিন্দুধর্মে, সমস্ত দেব-দেবীর পূজার স্থানে স্বস্তিক চিহ্ন দেওয়ার রীতি রয়েছে। স্বস্তিক চিহ্ন নেতিবাচক দিকগুলি দূর করে ও ইতিবাচক পরিবেশের সূচনা করে। সিদ্ধিদাতা গণেশের সাকার বিগ্রহের স্বরূপ এটি। স্বস্তিকের চারটি ভূজা শ্রী বিষ্ণুর চার হাত বোঝায়। স্বস্তিক চার দিকে শুভ সংকেত দেয়। পূজার সময় ঘটে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা হয়। গৃহপ্রবেশের সময়ও মূল দরজার ওপরে স্বস্তিক চিহ্ন অংকন করা হয়। এই পবিত্র চিহ্নের কারণে পরিবার ও গৃহে সুখ-শান্তি বজায় থাকে বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এর ফলে বাড়িতে কোনও অশুভ শক্তি প্রবেশ করতে পারে না। এছাড়া, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে স্বস্তিক চিহ্ন দর্শন ও প্রণাম করা অত্যন্ত শুভ বলে মানা হয়।