হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, আগামী ৫ নভেম্বর শনি প্রদোষ ব্রত পালনের শুভ যোগ তৈরি হয়েছে। শাস্ত্রে বলা হয়েছে, যে প্রদোষ ব্রত শনিবার পালিত হয়, তাকে শনি প্রদোষ ব্রত বলা হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, এবার শনি প্রদোষ ব্রতে রবি নামে একটি শুভ যোগ তৈরি হয়েছে। যার কারণে এই দিনটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। শনি প্রদোষ তিথিতে ভগবান শিব ও শনি মহারাজের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য বিশেষ একটি শুভ দিন। এই ব্রতে উপোস করলে সকল মনস্কামনা পূর্ণ হয় বলে মনে করা হয়। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে এই উপবাস রাখা হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, এই দিনের গুরুত্ব ব্য়াখ্যা করতে গিয়ে কিছু উপায় বা প্রতিকারের কথা বলা হয়েছে। এই নিয়মগুলি মেনে চললেই জীবনের সমস্ত ঝামেলা দূর হয়। শনিদেবের অশুভ প্রভাব থেকেও মুক্তি মেলে বলে জানা যায়।
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, প্রদোষ ব্রতের সময় প্রদোষকালে ভগবান শিবের পুজো করার নিয়ম। পুজোর সময়কালে শিবলিঙ্গে জলের সঙ্গে কালো তিল অর্পণ করুন। এরপরে শিব পঞ্চাক্ষর মন্ত্র ওম নমঃ শিবায় জপ করতে থাকুন। এরপর শনিদেবের পুজো করুন। শিব চালিসার পর শনি চালিসা পাঠ করতে পারেন। এতে শুভ ফল পাওয়া যায়। ভগবান শিবের আশীর্বাদ বর্ষিত হয়।
শনিদেবও প্রসন্ন হন
শনি প্রদোষ ব্রতে ছায়া দান করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সকালে শনি মন্দিরে গিয়ে একটি পাত্রে সরষের তেল ঢেলে তাতে একটি মুদ্রা বা কয়েন রেখে দিন। তাতে নিজের মুখ দেখতে পান কিনা দেখুন। তারপর মন্দিরে সেই কয়েনটি দান করে দিন। সন্ধ্যের সময় কালো কুকুরকে তেল মাখিয়ে মিষ্টি রুটি খেতে দিন। এমনটা করলে শনির অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শনিদেবও প্রসন্ন হোন।
মহাদেব প্রসন্ন হোন
শনি প্রদোষে উপবাস করলে শিবলিঙ্গে ১০৮টি বেলপত্র ও অশ্বত্থ পাতা অর্পন করুন। শনিবার এমনটা করলে তা শুভ বলে মনে করা হয়। এর সঙ্গে শনি সংক্রান্ত জিনিস দান করতে পারেন। উরর ডাল, কালো জুতো, কালো তিল, খিচুরি,ছাতা, কম্বল ইত্যাদি। এর জেরে আপনার রাশির উপর অবস্থিত গ্রহের উপর ভাল প্রভাব পড়তে পারে। শনিদেবের কৃপায় সুখ-শান্তি বৃদ্ধি পাবে।
শনির সাড়ে সাতি দশা থেকে মুক্তি পেতে পারেন
শনি প্রদোষের সময় অশ্বত্থ গাছের গোড়ায় জল ও দুধ ঢেলে দিন। তারপর পাঁচ রকমের মিষ্টি দিন। এরপর পিতৃপুরুষদের স্মরণ করে ওই গাছে পুজো করুন। পুজোর পর গাছের নিচে হনুমান চালিসা বা সুন্দরকাণ্ড পাঠ করে সাত বার প্রদক্ষিণ করুন। এমনটা করলে ঘরে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় থাকে। মানসিক শান্তির পাশাপাশি শনি দুঃখ থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।
এই রাশির উপর শনির ধাইয়া ও সাড়ে সাতি দশার প্রভাব পড়তে পারে
মকর, ধনু, কুম্ভ রাশিতে শনির অর্ধশতক , অন্যদিকে মিথুন ও তুলা রাশিতে শনির ধাইয়ার প্রভাব বজায় থাকে। এই সময়ে এই পাঁচটি রাশির মানুষ শনি দ্বারা প্রভাবিত হয়। এর সঙ্গে যাদের দশা ও মহাদশা আছে, তাদেরও শনির প্রদোষ ব্রত পালন করা উচিত। এই উপোস পালন করলে শনির অশুভ প্রভাব অনেকটাই কমে যায়। ধীরে ধীরে সমস্ত ইতিবাচক শক্তিও প্রবাহিত হতে থাকে।