Annapurna Mandir: মিনি দক্ষিণেশ্বরে ‘সোনা’র মা! কোথায় গেলে মিলবে দেখা? 

পশ্চিমবঙ্গেও এমন বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে, যা নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয়নি। কিন্তু সেই সকল মন্দিরের পরতে পরতে জড়িয়ে নানা গল্প, রহস্য।

Annapurna Mandir: মিনি দক্ষিণেশ্বরে ‘সোনা’র মা! কোথায় গেলে মিলবে দেখা? 
Annapurna Mandir: মিনি দক্ষিণেশ্বরে ‘সোনা’র মা! কোথায় গেলে মিলবে দেখা? Image Credit source: Facebook

Aug 12, 2025 | 5:23 PM

ভারতের প্রতিটি কোণে লুকিয়ে আছে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার অমূল্য নিদর্শন। আর সেই নিদর্শনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিফলন হল মন্দির। দেশের নানা মন্দির আমাদের অতীত, শিল্পকলা, স্থাপত্য ও বিশ্বাসের জীবন্ত দলিল। পশ্চিমবঙ্গেও এমন বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে, যা নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয়নি। কিন্তু সেই সকল মন্দিরের পরতে পরতে জড়িয়ে নানা গল্প, রহস্য। বাংলার বুকে রয়েছে আরও এক দক্ষিণেশ্বর! আজ আপনাদের শোনাই কলকাতার মিনি দক্ষিণেশ্বরের গল্প। কি অবাক লাগছে এটা শুনে? ভাবছেন মিনি দক্ষিণেশ্বর আবার কোথায়? আসলে দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণী মন্দিরের গল্প কমবেশি সকলের জানা। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, ব্যারাকপুরে রয়েছে দক্ষিণেশ্বরের আদলেই এক মন্দির। যার নাম অন্নপূর্ণা মন্দির।

৮৭৫ সালের ১২ এপ্রিল চৈত্রসংক্রান্তির দিন প্রতিষ্ঠিত হয় মা অন্নপূর্ণার মন্দির। ওই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন রানি রাসমনির ছোট মেয়ে জগদম্বা দেবী। এ বার মন্দির তৈরির নেপথ্যে রয়েছে কোন গল্প, তা আপনাদের শোনাই। দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দিরের মতো ব্যারাকপুরের অন্নপূর্ণা মন্দির তৈরির নেপথ্যে রয়েছে স্বপ্নাদেশ। রাণী রাসমনি স্বপ্নাদেশ পেয়ে কাশীযাত্রা বন্ধ করে মা ভবতারিণীর মন্দির তৈরি করেছিলেন। ঠিক তেমনই জগদম্বা দেবীও নাকি নৌকা করে গঙ্গার ওপর দিয়ে কাশী যাওয়ার সময় চানক গ্রামের কাছে মা অন্নপূর্ণার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন যে, সেখানে যেন মন্দির তৈরি করা হয়। সেই মতো মথুরামোহন বিশ্বাসের স্ত্রী জগদম্বার উদ্যোগে তৈরি হয় অন্নপূূর্ণা মন্দির। ব্যারাকপুরের আগের নাম ছিল চানক। চানক গ্রামের এই অন্নপূর্ণা মন্দিরটি এলাকাতে ‘সোনার অন্নপূর্ণা’ নামেই বিখ্যাত। কিন্তু অন্নপূর্ণার বিগ্রহ এখানে অষ্টধাতুর। 

ব্যারাকপুরে অন্নপূর্ণা মন্দির প্রাঙ্গনে ৬টি শিব মন্দির রয়েছে। শোনা যায়, জগদম্বা দেবীও মন্দির প্রাঙ্গনে দক্ষিণেশ্বরের মতো ১২টি শিব মন্দিরই নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি স্বপ্নাদেশ পান, তিনি যেন তাঁর মায়ের অতুলনীয় কীর্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মন্দির নির্মাণ না করেন। এরপরই তিনি ৬টি শিব মন্দির নির্মাণ করেন।  গর্ভগৃহে শ্বেতপাথরের বেদীর উপর রুপোর তৈরি সিংহাসনে রয়েছে অষ্টধাতুর দেবী অন্নপূর্ণা। অন্নদানরত মাতৃমূর্তির ডান হাতে অন্নদান করার হাতা এবং বাঁ হাতে অন্নপাত্র। দেবীর ডানপাশে দাঁড়িয়ে রুপোর তৈরি মহাদেব। হাতে ত্রিশূল ও ভিক্ষাপাত্র। অন্নপূর্ণা মন্দিরের বিশেষ আকর্ষণ অন্নকূট উৎসব। প্রায় একশো কেজি চালের অন্নকূট হয় এই মন্দিরে। সারাবছর নিত্যপুজো হয় মন্দিরে। এছাড়া মঙ্গলচণ্ডীর পুজো, বিপত্তারিণী পুজো, জন্মাষ্টমী, দুর্গাপুজো, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়। এই মন্দিরে সবমিলিয়ে মোট ৪ বার গিয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। 

স্থানীয়দের বিশ্বাস, মা অন্নপূর্ণার কাছে সংসারের সুখ, শান্তি চাইলে তিনি কাউকে খালি হাতে ফেরান না। এ তো গেল এই মন্দিরের গল্প, আর মা অন্নপূর্ণাকে নিয়ে সকলের বিশ্বাস, এই গল্প যদি আপনার মনে দোলা দেয়, তা হলে একদিন সময় বের করে ঘুরে আসতে পারেন এই মন্দিরে।

বিঃ দ্রঃ – এই প্রতিবেদনে যে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, তা হিন্দুধর্ম থেকে প্রাপ্ত তথ্য। এই বিষয়ে কোনও দায় নেই TV9 Bangla-র।