Gangajal Vastu Tips: জীবনে অপার সুখ পেতে গঙ্গাজল দিয়ে করুন এই সহজ উপাচার, দূর হবে সব বাস্তুদোষ

Ganga water: বাস্তুশাস্ত্র বিশারদরা বলছেন, গৃহে শান্তি বজায় রাখতে, সুখ ও সমৃদ্ধি আনতে করুন গঙ্গাজল দিয়ে সহজ কিছু উপাচার।

Gangajal Vastu Tips: জীবনে অপার সুখ পেতে গঙ্গাজল দিয়ে করুন এই সহজ উপাচার, দূর হবে সব বাস্তুদোষ

| Edited By: দীপ্তা দাস

Jun 04, 2023 | 2:35 PM

গঙ্গোত্রী থেকে প্রবাহিত গঙ্গা। ভারতের এই নদীকে দেবীজ্ঞানে পুজো করা হয়। কথিত আছে, গঙ্গা এতখানিই পবিত্র যে, চেতনাকে পরমেশ্বরের কাছে সমপর্ণ করে গঙ্গায় ডুব দিলে অতিবড় পাপীর পাপমোচন ঘটে। ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ অনুসারে, গঙ্গাদেবীকে শ্রীহরি বলেছিলেন, ‘ মানবের পাপ মুক্ত করবার জন্য তুমি গঙ্গানদীরূপে পৃথিবীতে প্রবাহিত হবে। বহু সাধনার পর ভগীরথ তোমাকে পৃথিবীতে নিয়ে যাবে। তোমার পবিত্র জল যে স্পর্শ করবে তারই পাপ মোচন হবে।’

পরিব্রাজক গ্রন্থে স্বামী বিবেকানন্দ লিখছেন, ‘…হিন্দুর সঙ্গে মায়ের সঙ্গে এ কি সম্বন্ধ!… গঙ্গা গঙ্গা কোরে জন্ম কাটায়, গঙ্গাজলে মরে, দূর দূরন্তরের লোক গঙ্গাজল নিয়ে যায়, তাম্রপাত্রে যত্ন কোরে রাখে, পালাপার্ব্বণে বিন্দু বিন্দু পান করে। রাজারাজড়ারা ঘড়া পুরে রাখে, কথ অর্থব্যয় কোরে গঙ্গোত্রীর জল রামেশ্বরের উপর নিয়ে গিয়ে চড়ায়; হিন্দু বিদেশ যায়— রেঙ্গুন, জাভা, হংকং, জাঞ্জীবর, মাডাগাস্কর, সুয়েজ, এড্‌ন, মাল্‌টা— সঙ্গে গঙ্গাজল, সঙ্গে গীতা।…’ সত্যিই তাই। হিন্দু বাড়িতে প্রতিটি পূজায় ঘট পূর্ণ হয় গঙ্গাজলে। গঙ্গা জলেই হয় শান্তিজল। সেই শান্তিজলের সামান্য স্পর্শে জীবনে আসে স্থৈর্য। গঙ্গার মাহাত্ম্য এমনই।

এই কারণেই বাস্তুশাস্ত্র বিশারদরা বলেন, বাড়িতে প্রবল অশান্তি শুরু হলে আশ্রয় নিন গঙ্গানদীর কাছে। করুন স্নান, প্রণাম-আচমন। দেখবেন জীবনের সব সংকট মিটছে। পূরণ হচ্ছে সকল কামনা। এমনকী বাস্তুশাস্ত্র বিশারদরা বলছেন, গৃহে শান্তি বজায় রাখতে, সুখ ও সমৃদ্ধি আনতে করুন গঙ্গাজল দিয়ে সহজ কিছু উপাচার।

বাস্তুদোষে

বাস্তুতে কোনও দোষ পাওয়া গেলে এবং তার কারণে সংসারে নানা সমস্যা দেখা গেলে প্রতিদিন সারা বাড়িতে ছেটান গঙ্গাজল। প্রতিদিন এই কাজ করলে বাস্তু দোষ কেটে যাবে। এছাড়া সমগ্র গৃহে ছড়িয়ে পড়বে ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ। তবে সময়ে সময়ে বাড়িতে গঙ্গাজল ছড়িয়ে দিতে হবে।

পরিবারের সদস্যের সমস্যা

পরিবারের কোনও একজন জীবনে খুব সমস্যা ভোগ করলে প্রতিদিন ভোরবেলা সারা বাড়িতে গঙ্গাজল ছিটিয়ে দিন। গৃহের নেতিবাচক শক্তির প্রবাহ কমিয়ে দিতে পারে গঙ্গাজল। তার সঙ্গে গৃহে বইয়ে দেয় ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ।

সন্তানের কল্যাণে

– বাড়িতে ছোট বাচ্চার বারংবার শরীর খারাপ হলে বা সে কোনও সমস্যায় বারংবার পড়লে বুঝতে হয় কোনও দুষ্ট লোকের নজর পড়েছে তার উপর। এক্ষেত্রেও সারা বাড়িতে গঙ্গা জল ছেটালে উপকার মেলে।

– বাচ্চা বারবার কোনও ভয়ের স্বপ্ন দেখে আতঙ্কে কুঁকড়ে থাকলে, ঘুম পাড়ানোর আগে তার বিছানার উপর গঙ্গাজল ছিটিয়ে দিন। দেখবেন আরও কোনও ভয়ের স্বপ্ন সে দেখছে না।

কোথায় রাখবেন গঙ্গাজল?

– অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায় গঙ্গাজল রাখবেন না। গঙ্গাজল স্পর্শের আগে হাত সবসময় ধুয়ে নিতে হবে। শুভ ফল লাভের জন্য সময় অন্তর বাড়ির কোণে কোণে ছড়িয়ে দিতে হবে গঙ্গাজল।

– বাড়িতে বারংবার সমস্যার সম্মুখীন হলে, গৃহের উত্তর-পূর্ব কোণে পিতলের বোতলে গঙ্গাজল রেখে দিন। এই উপাচারে দ্রুত ওই গৃহের সব সমস্যা মিটে যায়।

– মনে রাখবেন, গঙ্গা জল রাখতে হবে গৃহের সবচাইতে পবিত্র স্থানে। অর্থাৎ যেখানে মন্দির স্থাপন করা হয়েছে সেখানেই রাখবেন গঙ্গাজল। রান্নাঘর, স্নানঘরের কাছে কিংবা শয়নকক্ষে গঙ্গাজল রাখবেন না।

– বিভিন্ন শাস্ত্রে বলা হয়েছে, প্রতিদিন গঙ্গাজল পানে বুদ্ধি এবং হজমক্ষমতা বাড়ে।

– এছাড়া প্রতি সোমবার শিবের মাথায় গঙ্গাজল ঢেলে পূজা করলে, ভোলেনাথ প্রসন্ন হন। জীবনের সব বাধা দূর হয়ে যায়।

অন্যান্য উপাচার

– স্নানের জলে সামান্য গঙ্গাজল এবং এক চিমটে হলুদ দিয়ে একটানা ৪১ দিন ধরে স্নান করলে বিবাহের বাধা কেটে যায়। দ্রুত বিয়ে হয়।

– গঙ্গাজল কখনওই প্লাস্টিকের বোতলে রাখতে নেই। কারণ প্লাস্টিকের বোতলে নানা ধরনের দূষণ থাকে। লোহা ছাড়া যে কোনও ধাতুর পাত্রে গঙ্গাজল রাখা যায়। তাহলে আর দেরি নয়, জীবনে সুখ শান্তি ফিরিয়ে আনতে অবশ্যই পালন করুন গঙ্গাজলের উপাচার।