প্রতি বছর কার্তিক মাসের (Kartik Month) শুক্লপক্ষের একাদশীতে তুলসী বিবাহ (Tulsi Vivah 2022) পালিত হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৫ নভেম্বর, শনিবার এই পবিত্র ব্রত অনুষ্ঠানের দিন। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয়, তুলসী বিবাহের দিনই ভগবান বিষ্ণু (Lord Vishnu) ও তুলসীর বিয়ে হয়েছিল। অনেকে এইদিনটিকে তুলসী বিভাও বলে থাকেন। যদি নিয়ম মেনে এই ব্রত-অনুষ্ঠান পালন করা হয়, তাহলে ভগবান বিষ্ণু ও তুলসীর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হতে পারেন। এইদিনটিকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
তুলসী বিবাহের শুভ মুহূর্ত
তারিখ- ৫ নভেম্বর, ২০২২
একাদশী তিথি শুরু হয়েছে ৪ নভেম্বর, সন্ধ্যে ৬টা ৮ মিনিট থেকে।
একাদশী তিথি শেষ হবে ৫ নভেম্বর বিকেল ৫টা ৬ মিনিটে।
পুজোবিধি
হিন্দুধর্মে তুলসী বিবাহ পুজোর পদ্ধতি অনুসারে, এই পুজোয় যারা উপবাস রেখে ব্রত পালন করতে চান, তাহলে তারা স্নান করার পর পরিষ্কার পোশাক পরিধান করুন। তবে মনে রাখবেন, এই পুজোয় সামিল হলে কখনও কালো রঙের কাপড় পরবেন না।
– যারা তুলসী বিবাহ ব্রত পালন করেন, কারা এইদিন উপবাস রাখেন।
– এইদিন শুভ সময়ে বাড়ির চত্বরে তুলসী গাছ পুতুন। সাধারণত বাড়ির উঠোনে এই পবিত্র গাছ লাগান হয়। চাইলে ছাদে বা মন্দিরে তুলসীর বিয়ে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারেন।
– তুলসী পাত্রের মাটিতে একটি আখ দিন। তার উপর লাল ওড়না দিয়ে সাজিয়ে রাখুন।
– তুলসীর পাত্রে শালিগ্রাম পাথর রাখুন। তাতে শুভ বলে মনে করা হয়।
– এরপর তুলসী ও শালিগ্রামের উপর হলুদের পেস্ট মাখাতে পারেন। এছাড়া দুধ ও হলুদ মাখিয়ে দিতে পারেন। আখের মণ্ডপেও হলুদর পেস্ট প্রয়োগ করতে পারেন।
– এরপরে পুজো করার সময় এই মরসুমে আসা ফলগুলি যেমন আমলা, আপেল ইত্যাদি নিবেদন করতে পারেন।
-পুজোর সময় থালিতে বেশ কয়েকটি কর্পূর রাখুন। পুজোর সময় জ্বালিয়ে দিতে পারেন। এরপর সেই আগুনের আহুতি দিয়ে তুলসী ও শালিগ্রাম পাথরকে আরতি করুন।
– আরতি করার পরে ১১ বার তুলসী গাছকে প্রদক্ষিণ করুন। এরপর প্রসাদ বিতরণ করুন।
– তুলসী বিলাহ অনুষ্ঠানের পরে ভগবান বিষ্ণুকে আরতি ও পুজো করুন। এই মন্ত্রে বিষ্ণুর বন্দনা করলে জীবনে কোনও কষ্ট থাকে না।
ভগবান বিষ্ণুকে জাগ্রত করার মন্ত্র
উত্তিষ্ঠ গোবিন্দ ত্যজ নিদ্রম জগৎপাতয়ে
ত্বয়ি সুপ্তে জগন্নাথ জগৎ সুপ্তম ভবেদিদম্।।
উত্তীতে চেষ্টে সর্বমুত্তিষ্ঠোত্তীষ্ঠ মাধব
গতামেঘা ব্যাচ্ছৈব নির্মলম নির্মলদিশাঃ।।
শারদানি চ পুষ্পানি গৃহাণ মম কেশব।।
গুরুত্ব
কার্তিক মাসের শুক্লা একাদশীর দিন তুলসী বিবাহ করা খুবই শুভ। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে তুলসী বিবাহের ফলে গৃহে ইতিবাচক শক্তি বয়ে নিয়ে আসে। সেই সঙ্গে ঘরে ইতিবাচক বজায় থাকেষ এর সঙ্গে এওবিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে তুলসী বিবাহ করলে কন্যাদানের মত পুণ্যলাভ করা যায়। কথিত আছে, যে ঘরে কন্যাসন্তান নেই, সেই গৃহে তুলসী বিবাহের পুজো পালন করা অত্যন্ত মঙ্গলের বলে মনে করা হয়। এই দিনে বিষ্ণু জাগরণের পর বাড়িতে শুভ কাজ ও দিন শুরু হয়।