ধনতেরস, অনেকের কাছেই এই উৎসব পরিচিত ‘ধনত্রয়োদশী’ বা ‘ধনবত্রী ত্রয়োদশী’ নামেও। ‘ধন’ শব্দের অর্থ ‘সম্পদ’ এবং ‘তেরস’ শব্দের অর্থ ‘ত্রয়োদশী’ অর্থাৎ তেরো। হিন্দু শাস্ত্র মতে কার্তিক মাসের তেরোতম দিনে, অর্থাৎ কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশ তিথিতে গোটা বিশ্ব জুড়েই পালিত হয় উৎসব।
এই সময় চারিদিকে কেবল আলোর রোশনাই। পরিবারের সকলে মঙ্গল, সুখ-সমৃদ্ধি ও ধনসম্পদ লাভের আশায় ধনদেবতা কুবেরের আরাধনা করেন এই দিন। মূল্যবান ধাতু , সোনা, বাসনপত্র এবং নতুন পোশাক কেনার প্রথা প্রচলিত রয়েছে।
এই দিন অনেকেই দেবী ধনলক্ষ্মীর আরাধনা করেন। মা লক্ষ্মী বাড়িতে অধিষ্ঠান করেন তাহলে গৃহস্থের ঘরে ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পায়। ব্যবসায়ীদের কাছেও এই দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীপাবলির দু’দিন আগে লক্ষ্মীদেবীর পুজো করা নিয়েও রয়েছে একটি পৌরাণিক গল্প।
পুরাণ অনুসারে একবার ঋষি দুর্বাসার অভিশাপে সৌভাগ্যের দেবী লক্ষ্মী গৃহছাড়া হন, শ্রীহীন হয়ে পড়ে স্বর্গলোক। তখন সৃষ্টি কর্তা বিষ্ণুর কথায় দেবতারা অসুদের সঙ্গে নিয়ে সমুদ্রমন্থন করেন। সেই সমুদ্রমন্থনে আবার ফিরে পান দেবী লক্ষ্মীকে। মনে করা হয় এই দিনটিই ছিল ধনতেরাসের দিন বা কার্তিক মাসের ত্রয়োদশী তিথি। তখন থেকেই দেবী লক্ষ্মীর আবাহন করে সূচনা হয় দীপাবলি উৎসবের।
ধনতেরসের পরের দিন নরক চতুর্দশী বা ভূত চতুর্দশী নামে পরিচিত। এই দিন বাড়িতে বিভিন্ন স্থানে মোট চোদ্দোটি প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতে হয়। সেই সঙ্গে চোদ্দো রকমের শাক খাওয়ার প্রচলনও রয়েছে। আবার অলক্ষ্মী বিদায়ের প্রথাও রয়েছে কোথাও কোথাও। এরপর দীপাবলির রাতে প্রদীপ জ্বালিয়ে আরাধনা করা হয় শুভ শক্তির।