
অনন্ত চতুর্দশীর পর থেকে শুরু হয়ে যায় পিতৃপক্ষ। টানা ১৬ দিন ধরে হিন্দুরা পূর্বপুরুষরা শ্রাদ্ধনুষ্ঠান করেন ও স্মরণ করে থাকেন। পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এই পিতৃপক্ষকাল। এই সময় মহিলা ও পুরুষ নির্বিশেষে পূর্বপুরুষদের তর্পন করে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন। তাঁদের স্মরণে শ্রাদ্ধের কাজকর্ম করে থাকেন সঠিক নিয়ম মেনে। তাতে পূর্বপুরুষরা তুষ্ট হয়ে পরিবারকে সম্পদ, শান্তি ও সমৃদ্ধির আশীর্বাদ করেন। কেটে যায় পিতৃদোষও। শিশু, স্বর্গ, মোক্ষ ও সকল প্রকার মহাজাগতিক ও অতীন্দ্রিয় সুখ পাওয়া যায় পিতৃপক্ষের সময়।
শাস্ত্রের নিয়ম অনুসারে, শ্রাদ্ধের চেয়ে বড় কাজ আর হয় না। তাই পূর্বপুরুষ বা প্রয়াত প্রিয়জনদের শ্রাদ্ধ বা তর্পন করা উচিত। তবে শাস্ত্র অনুসারে, সকলেই পিতৃপুরুষের শ্রাদ্ধ করতে পারেন না। রয়েছে নির্দিষ্ট বয়স ও সঠিক নিয়ম। অনেকেরই প্রশ্ন জাগে, শ্রাদ্ধের সময় কতজন ব্রাহ্মণকে খাওয়ানো উচিত?
শ্রাদ্ধের জন্য সকলেই শ্রাদ্ধ করার অধিকারী হন না। গরুড়, কূর্ম ও মৎস্যের মতো পুরাণে উল্লেখ রয়েছে, প্রথম ব্যক্তি যিনি তাঁর পিতার শ্রাদ্ধ করতে পারেন, তিনি হলেন তাঁর পুত্র। পুত্র না থাকলে তার অনুপস্থিতিতে স্ত্রী শ্রাদ্ধ বা তর্পন কাজে করতে পারেন। যদি স্ত্রীও না থাকেন তাহলে ছোট ভাই শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করতে পারেন। যদি পরিবারের কেউই উপস্থিতবা জীবিত না থাকেন সপিন্ডরা শ্রাদ্ধ করতে পারেন।
জামাই ও মেয়েও শ্রাদ্ধ করতে পারেন, কিন্তু কেউ না থাকলে মৃত ব্যক্তির টাকা দিয়ে শ্রাদ্ধ করা উচিত কারণ এতে পরিবারের বান্ধব বলা হয়।
শ্রাদ্ধের সময় কয়জন ব্রাহ্মণকে খাওয়ানো উচিত?
শ্রাদ্ধের সময় ব্রাহ্মণভোজন করানো উচিত তাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শাস্ত্রবিদরা জানিয়েছেন, শাস্ত্র অনুসারে ঈশ্বরের কাজে মাত্র ২ জন ব্রাহ্মণ ও পূর্বপুরুষের কাজে তিনজনই যথেষ্ট।
শাস্ত্র অনুসারে, ব্রাহ্মণের সংখ্যা কখনওই বাড়ানো উচিত নয় কারণ এতে অসম্মানের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পারে। পরিবারের সদস্যদের উপর সব কাজে সাফল্যে বাধা আসতে পারে। তাই অন্তত একজন ও সর্বোচ্চ তিনজন ব্রাহ্মণকে নিমন্ত্রণ জানিয়ে ভোজন করানো উচিত।