
বসন্তী পঞ্চমী শেষ হলেই পড়বে ষষ্ঠী। বাঙালিদের কাছে এই দিনটা শীতল ষষ্ঠী নামে পরিচিত। পরিবার ও সন্তানের মঙ্গল কামনায় বাড়ির মা-কাকিমারা পালন করেন ষষ্ঠী ব্রত। শুধু শীতল ষষ্ঠী নয়, বছরের নানা সময়ে নানা ষষ্ঠী ব্রত পালন করেন মা-কাকিমারা। জৈষ্ঠ্য মাসে জামাই ষষ্ঠী, মাঘ মাসে শীতল ষষ্ঠী, দুর্গাপুজোয় ষষ্ঠী, চৈত্র্য মাসে নীল ষষ্ঠী, মোট কথা ষষ্ঠী ব্রতর ছড়াছড়ি। কিন্তু কে এই দেবী ষষ্ঠী জানেন?
পুরাণ অনুসারে ষষ্ঠী কিন্তু বৈদিক দেবী নন। তিনি মূলত প্রজজনের দেবী, সন্তানদায়িনী, মাতৃকা মঙ্গলদায়িনী রূপে পরিচিত। স্কন্দ পুরাণ অনুসারে তিনি সৃষ্টি কর্তা ব্রহ্মার মানস কন্যা। তাঁর অপর নাম দেবসেনা। দেবী ষষ্ঠী কার্তিকের স্ত্রীও বটে, তাই কার্তিক দেবসেনাপতী।
কেউ কেউ মনে করেন দেবী ষষ্ঠী আসলে আদি শক্তি দেবী দুর্গার আরেক রূপ, কার্তিকের জননী, তাই তিনি কাত্যায়নী। দেবী ষষ্ঠী গৃহে গৃহে বাস করেন, তাই তিনি গৃহদেবী।
ষষ্ঠী দেবী সর্বত্র লৌকিক দেবী হিসাবে পূজিত। আদি মাতৃপূজার একটি অংশ হিসাবে ষষ্ঠী পুজোকে করা হয়। নানা কালে নানা সময়ে সাহ্যিতিকদের কলমে ধরা পড়েছেন দেবী ষষ্ঠী। কেউ দেবীকে বর্ণনা করেছেন দ্বিভূজা রূপে কারও কল্পনায় তিনি আবার চতুর্ভূজা। তাঁর কোলে শিশু সন্তান, দেবী বাহন বিড়াল। এই কারণে ষষ্ঠী পুজোর দিন বিড়ালদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়, অন্যথায় দেবী রুষ্ট হন। কেউ কেউ
আবার ষষ্ঠী দেবীকে মা মনসার সঙ্গেও তুলনা করেছেন। কোথাও ষষ্ঠী রূপে শিলাখন্ডকে পুজো করার চল রয়েছে।
সন্তান তথা পরিবারের কথা ভেবে, তাঁদের মঙ্গল কামনায় ষষ্ঠী ব্রত করার চল রয়েছে। দেবী সন্তানদায়িনী এবং সন্তানের রক্ষয়িত্রী, তাই নিঃসন্তান নারীরা সন্তান কামনায় মা ষষ্ঠীর ব্রত করেন। এই নিয়েই বাঙালির ষষ্ঠী বন্দনা।