Goddess Lakshmi: চঞ্চলা দেবী আসলে কে? পুরাণ ও শাস্ত্রমতে, সত্যিটা জানুন

Mythology: বাঙালির মনে লক্ষ্মীদেবী এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। সারা বছর ধরেই লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। তবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় প্রতিটি বাঙালির গৃহে লক্ষ্মীর আসন পেতে , ঘট স্থাপন করা হয়। তার সঙ্গে কাঠের পেঁচা, কড়ি, দেবীর মূর্তি রাখা হয়। আলপনা, ভোগ নিবেদন করে, পাণচালি পড়ে লক্ষ্মীর আরাধনা সম্পন্ন করা হয়।

Goddess Lakshmi: চঞ্চলা দেবী আসলে কে? পুরাণ ও শাস্ত্রমতে, সত্যিটা জানুন

| Edited By: দীপ্তা দাস

Oct 28, 2023 | 5:26 PM

নিথীথে বরদা লক্ষ্মীঃ জাগরত্তীতিভাষিণী।

তস্মৈ বিত্তং প্রযচ্ছামি অক্ষৈঃ ক্রীড়াং করোতি যঃ।।

কোজাগরী শব্দ সৃষ্টি হয়েছে কো-জাগতী কথা থেকে। এর অর্থ হল কে জেগে আছেন। সারারাত জেগে লক্ষ্মীর বন্দনা করাই এই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর মূল উদ্দেশ্য। কথিত আছে, এই বিশেষ তিথিতে ও পূর্ণিমার দিন দেবী মর্ত্যে নেমে ভক্তদের ঘরে ঘরে উঁকি দেন, কে তাঁর জন্য জেগে আছেন? যে জেগে রয়েছেন, তাঁকে লক্ষ্মী ধনসম্পদে ভরিয়ে দেন। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় বাঙালির ঘরে ঘরে লক্ষ্মীর সরা, ঘট বা কলার পেটো রেখে পুজো করা হয়। বাঙালির মনে লক্ষ্মীদেবী এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। সারা বছর ধরেই লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। তবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় প্রতিটি বাঙালির গৃহে লক্ষ্মীর আসন পেতে , ঘট স্থাপন করা হয়। তার সঙ্গে কাঠের পেঁচা, কড়ি, দেবীর মূর্তি রাখা হয়। আলপনা, ভোগ নিবেদন করে, পাণচালি পড়ে লক্ষ্মীর আরাধনা সম্পন্ন করা হয়। তবে এই দেবী লক্ষ্মীকে কেন পুজো করা হয়? পুরাণ ও শাস্ত্র মতে, লক্ষ্মী আসলে কে?

শাস্ত্র মতে, লক্ষ্মী হলেন সৌভাগ্য, ঐশ্বর্য, সম্পদের দেবী। এই দেবীর চারটি হাত। আর সেই হাতের অর্থ হল, ধর্ম, কর্ম, অর্থ ও মোক্ষ। হিন্দুশাস্ত্রে এই চার হাতের মাহাত্ম্য রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, লক্ষ্মী আসলে ধনসম্পদের দেবী। পৌরাণিক কাহিনি ও পুরাণে উল্লেখ রয়েছে, সমুদ্রমন্থনের সময় দেবী লক্ষ্মীর আবির্ভাব হয়। কিন্তু আসল তথ্য অনেকেই জানেন না। অনেকের মতে, ঋষি ভৃগুর সন্তান ও সমুদ্রমন্থনের মাধ্যমে তাঁর পুনর্জন্ম হয়েছিল। আবার অনেকে বলেন, লক্ষ্মী হলেন সমুদ্রদেব বরুণের কন্যা। তবে লক্ষ্মীর আগে আবির্ভূতা হয়েছিলেন দেবী সরস্বতী। এক পৌরাণিক কাহিনি মতে, ব্রহ্মার সপ্ত সন্তান। সেই সপ্তঋষির মধ্যে ছয়জনই দেবী সরস্বতীর আরাধনা করে দৈবজ্ঞান লাভ করেন। তবে এরই মধ্যে প্রশ্ন জাগে মহর্ষি ভৃগুর মনে। মানবশরীরের ক্ষুধা নিবারণ কীভাবে ঘটে, সেই প্রশ্নের সন্ধানে সব জায়গায় ঘুরতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত উত্তর খুঁজে পান বরুণদেবের কাছে। তাঁর পরামর্শ মেনে তিনি মনে করেন, মানুষের ক্ষুধার চাহিদা মেটানোর জন্য দেবী লক্ষ্মীর আবাহন করে পুজো করা হয়, তা গুরুত্বপূর্ণও বটে। তাই লক্ষ্মীকে শুধুমাত্র ধন-সম্পদের দেবী হিসেবে দেখলে তাঁর মহিমার পূর্ণতাকে কখনও সামনে আনা হয় না। মানুষের খিদে মেটানোর জন্যই নয়, গৃহস্থের মঙ্গলকামনার জন্যও তাঁকে বন্দনা করা হয়। আর সব কিছুর জন্য দরকার অর্থের। তাই স্থায়ীভাবে যাতে লক্ষ্মীর কৃপা বজায় থাকে, তাই তাঁকে পুজো করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। তবে দেবী লক্ষ্মী চঞ্চলা। তিনি স্থিরভাবে এক জায়গা থাকেন না।

পৌরাণিক কাহিনি ও পুরাণ মতে, হিন্দুধর্মে দেবতা ও অসুর উভয়ই এক সময় নশ্বর ছিল। সমুদ্র মন্থনের সূচনা হয়েছিল দেবতা ও অসুরদের দিয়ে। সেই সময় ধরিত্রীকে রক্ষা করা জন্য বিষ্ণুদেব কুরমা, কচ্ছপ রূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কচ্ছপের উপরে একটি মন্থন খুঁটি হিসাবে একটি পর্বত স্থাপন করা হয়। মন্থনের সময় বেশ কিছু ঐশ্বরিক স্বর্গীয় বস্তুর আবির্ভাব হয়। সেই সময় আবির্ভূতা হয়েছিলেন দেবী লক্ষ্মীও। সমুদ্র থেকে আবির্ভূত হওয়ার কারণে তাঁকে সমুদ্র দেবতার কন্যা বলা হয়েছে।